‘রোনালদো উন্মাদ, মরিনিয়ো নির্বোধ’

রিয়াল মাদ্রিদের কেউ যেন ছাড় পাননি ফ্লোরেন্তিনো পেরেসের হাত থেকে। আগের দিন দুই কিংবদন্তি ইকের কাসিয়াস ও রাউল গনসালেসকে নিয়ে তার আপত্তিকর মন্তব্য সামনে এনেছিল এল কনফিডেনসিয়াল। স্প্যানিশ পত্রিকাটি এবার ফাঁস করেছে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও জোসে মরিনিয়োকে নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্টের মন্তব্য। রোনালদোকে উন্মাদ ও মরিনিয়োকে নির্বোধ বলতে শোনা গেছে তাকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2021, 11:56 AM
Updated : 14 July 2021, 11:56 AM

২০০৯ সালে তৎকালীন রেকর্ড ট্রান্সফার ফির বিনিময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন রোনালদো। তার পরের বছর নতুন কোচ হিসেবে মরিনিয়োকে নিয়োগ দেন পেরেস। রোনালদো ২০১৮ সাল পর্যন্ত রিয়ালে থাকলেও মরিনিয়ো ক্লাব ছাড়েন আরো আগে, ২০১৩ সালে। নতুন প্রকাশিত অডিও ক্লিপে মরিনিয়োর কোচ থাকাকালীন সময়ে তাকে এবং রোনালদোকে নিয়ে কটাক্ষ করেন পেরেস।

রোনালদোকে নিয়ে পেরেসের মন্তব্যের সময় উল্লেখ না করা হলেও মরিনিয়োর অডিও ক্লিপের সময় উল্লেখ করা হয়েছে ২০১২ সালের অক্টোবর মাস।

একই বছর রোনালদোর সাথে প্রথম ঝমেলায় জড়ান পেরেস। সেই বছর রোনালদোকে হারিয়ে উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন সেই সময়ের বার্সেলোনা মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না পেরেস। সেদিন ক্লাব প্রেসিডেন্টকে পাশে না পেয়ে মনক্ষুণ্ণ হন পর্তুগাল অধিনায়ক। ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপে সেই ঘটনার সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও রোনালদোর আচরণে পেরেস ছিলেন খুবই বিরক্ত।

“সে উন্মাদ। সে হল একটা নির্বোধ, একটা অসুস্থ মানুষ। আপনার তাকে স্বাভাবিক মনে হলেও আসলে সে স্বাভাবিক নয়, নাহলে সে যা যা করে তা করত না। সবশেষ সে যে কাণ্ডটা ঘটিয়েছে সেটা পুরো বিশ্ব দেখেছে। আপনার কি মনে হয়, কেন সে এটা করেছে?”

রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেস। ফাইল ছবি

তৎকালীন কোচ মরিনিয়োকেও ধুয়ে দেন পেরেস। তার মতে, অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে মাথা খারাপ হয়েছে রিয়ালকে ২০১১-১২ মৌসুমে লিগ শিরোপা এনে দেওয়া কোচের। একই দোষে দুষেছেন রোনালদোকেও।

“মেন্দেস (রোনালদোকে) নিয়ন্ত্রণ করে না, মরিনিয়োকেও সে নিয়ন্ত্রণ করে না। কোনো ওজন নেই। এই দুজনই অনেক অহংকারী, উভয়েই নষ্ট হয়ে গেছে। আর তারা বাস্তবতা দেখতে পায় না কারণ তারা অনেক টাকা উপার্জন করে অন্যথায় তারা (বাস্তবতা) দেখতে পেত।”

“মরিনিয়ো একটা নির্বোধ। এমন নয় যে, খেলায় তার মনোযোগ নেই। তবে, সে কিছুটা অস্বাভাবিক। সে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায়। এটা দ্বারা বুঝায়, চাপ তাকে মগ্ন করে রাখে।”

২০০৯ সালে ক্লাবে যোগ দেয়ার পর ৯ বছরে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৪৩৮ ম্যাচে ৪৫১ গোল করেন রোনালদো। ক্লাবটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। এই সময়ে চারটি ব্যালন ডি অর জেতেন ৩৬ বছর বয়সী এই তারকা। ক্লাবের হয়ে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ, দুটি লা লিগা, দুটি কোপা দেল রে এবং দুটি স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছেন রোনালদো।

তবে রোনালদোর সাথে রিয়ালের বিদায়টা হয়নি মধুর। টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর ক্লাব ছেড়ে যান তিনি। পেরেসের সাথে চুক্তি নবায়ন এবং অন্যান্য বিষয়ে বনিবনা না হওয়াতেই মূলত ২০১৮ সালে ইউভেন্তুসে যোগ দেন এই ফরোয়ার্ড।

তার স্বদেশী মরিনিয়ো ক্লাবে ছিলেন তিন বছর। তার সময়েও ক্লাবে ঘটেছে অনেক বিতর্কিত ঘটনা। যার মধ্যে অন্যতম ছিল গোলরক্ষক কাসিয়াসের সাথে দ্বন্দ্ব, যাকে নিয়েও পেরেস করেছেন বিস্ফোরক মন্তব্য। স্প্যানিশ ক্লাবে মরিনিয়োর শুরুটা ছিল দারুণ। প্রথম দুই বছরে তিনটি শিরোপা জিতলেও ২০১২-১৩ মৌসুমে কোন শিরোপা জিততে ব্যর্থ হওয়ায় ক্লাব ছাড়তে হয় তাকে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রথম অডিও ক্লিপে পেরেস কাসিয়াসের সঙ্গে রাউলকেও ‘প্রতারক’ আখ্যা দেন। সেটি ছিল ২০০৬ সালের। সেখানে পেরেস আরো সমালোচনা করেন কাসিয়াসের বান্ধবীকেও যিনি সেই সময়ে কাজ করতেন স্প্যানিশ গণমাধ্যমে।