টাইব্রেকারে ব্যর্থতায় র‌্যাশফোর্ডের ক্ষমা প্রার্থনা

সুযোগ ছিল ইতিহাস রচনা করার। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর প্রথম মেজর টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের খুব কাছেই ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারল না তারা। পেনাল্টি শুটআউটে যে তাদের তিনটি শটই হলো মিস। এর একটি শট নিয়েছিলেন মার্কাস র‍্যাশফোর্ড। সেখানে গোল করতে না পারায় ক্ষমা চেয়েছেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2021, 11:00 AM
Updated : 13 July 2021, 11:00 AM

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রোববার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ১-১ গোলে সমতার পর টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ইতালি। ৫৫ বছরের শিরোপা খরা ঘুচাতে ব্যর্থ ইংল্যান্ড।

টাইব্রেকারে স্বাগতিকদের মিস হওয়া তিন পেনাল্টির প্রথমটি নিয়েছিলেন র‌্যাশফোর্ড। বাকি দুটি জ্যাডন স্যানচো ও বুকায়ো সাকা। টাইব্রেকারের কথা মাথায় রেখেই তিন জনকে বদলি নামিয়েছিলেন গ্যারেথ সাউথগেট। কিন্তু কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তারা।

ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থকদের তীব্র রোষের মুখে পড়েন তিন জনই। র‍্যাশফোর্ড, স্যানচো ও সাকার দিকে ধেয়ে আসে বর্ণবাদী মন্তব্যের ঢেউ।

দা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমেছে। এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন ইংল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দলের কোচ, অধিনায়ক, রাজনীতিবিদরাও মেনে নিতে পারছেন না সমর্থকদের এমন আচরণ।

পারফরম্যান্সের জন্য সমালোচনা শুনতে সমস্যা নেই র‍্যাশফোর্ডের। কিন্তু বর্ণবাদী মন্তব্যে কষ্ট পাচ্ছেন ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের এই ফরোয়ার্ড।

“পারফরম্যান্সের জন্য লাগাতার সমালোচনা আমি মেনে নিতে পারি। আমার পেনাল্টি যথেষ্ট ভালো ছিল না, এটা জালে জড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু আমি কে এবং কোথা থেকে এসেছি এর জন্য কখনও অনুতপ্ত হবো না।”

“বুকে থ্রি লায়নের (ইংল্যান্ড) পোশাক জড়ানোর মুহূর্ত ও হাজারো দর্শকের মধ্যে আমার পরিবারের উচ্ছ্বাস দেখার চেয়ে আর কিছুতে বেশি গর্ববোধ আমি করি না।”

হ্যারি কেইন ও হ্যারি ম্যাগুইয়ার গোল করার পর ইংল্যান্ডের হয়ে পেনাল্টি নিতে যান র‍্যাশফোর্ড। ইতালির গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মাকে তিনি পরাস্ত করেন ঠিকই, কিন্তু বল গিয়ে লাগে পোস্টে।

র‌্যাশফোর্ড বুঝতে পারছেন না কীভাবে প্রকাশ করবেন তার ভেতরের অনুভূতি।

“কোথা থেকে শুরু করব, এই মুহূর্তে আমি কেমন অনুভব করছি এটা ভাষায় কীভাবে প্রকাশ করব তাও জানি না। আমি কঠিন একটি মৌসুম পার করেছি। আমার মনে হয়, এটা সবার কাছেই স্পষ্ট। সম্ভবত ফাইনালে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নিয়ে আমি খেলতে নেমেছিলাম।”

“আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি সতীর্থদের ছোট করেছি। দলের সবাইকে হারিয়ে দিয়েছি।”

ওই পেনাল্টি মিস না হলেই হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারত বলে মনে করেন র‍্যাশফোর্ড। তাই এখন সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া অন্য কিছু করার নেই ২৩ বছর বয়সী ফুটবলারের।

“ফাইনাল। ৫৫ বছর। একটা পেনাল্টি। ইতিহাস। আমি কেবল বলতে পারি, দুঃখিত। যদি এটা ভিন্নভাবে হতো। যদিও আমি সতীর্থদের চিৎকার করে বলতে চাই, আমি দুঃখিত। এই গ্রীষ্ম আমার অভিজ্ঞতা হওয়া সেরা ক্যাম্পের একটি, এখানে সবাই ভূমিকা রেখেছে।”