রিও দে জেনেইরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে আগামী রোববার বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। মুখোমুখি হবে সময়ের সেরাদের দুজন মেসি ও নেইমার। এই লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের মেসিকেই এগিয়ে রাখছেন তোস্তাও।
দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে খুব সম্ভবত এটাই মেসির শেষ। ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডও তা রাঙিয়ে রাখতে মরিয়া। এরই মধ্যে ৪ গোল করেছেন। সতীর্থদের ৫ গোলে রেখেছেন অবদান। আর্জেন্টিনাকে তুলে এনেছেন ফাইনালে।
ব্রাজিলের ১৯৭০ বিশ্বকাপ জয়ী দলের আক্রমণভাগে পেলের সঙ্গে বিধ্বংসী জুটি গড়া তোস্তাও সুপার দেপোর্তিভো রেডিওর সঙ্গে আলাপচারিতায় পেলে, মেসি, দিয়েগো মারাদোনা থেকে শুরু করে হালের নেইমারকে নিয়ে কথা বললেন মন খুলে। সেখানে এই কিংবদন্তি মারাদোনার চেয়েও এগিয়ে রাখলেন মেসিকে।
“আমি কখনোই মেসিকে এত বেশি গতিময়, শক্তিশালী, ধারাল ও মরিয়া দেখিনি, এখন যতটা দেখছি।”
“মেসি আমাকে পেলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। কেবল একটাই পার্থক্য, পেলে ছিল আরও বেশি শক্তিশালী এবং শারীরিকভাবে আগ্রাসী। অ্যাথলেট হিসেবেও এগিয়ে। কিন্তু মেধার দিক থেকে মেসি পেলের সমান। পেলের পর মেসি বিশ্বসেরা, এমনকি মারাদোনার উপরে সে।”
ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার সিনিয়র দলে অভিষেক ২০০৪ সালে। পরের বছর তার গায়ে ওঠে জাতীয় দলের জার্সি। কাতালুনিয়ার দলটির হয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারে মুঠোভরে সাফল্য পেয়েছেন মেসি। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে এখনও তার প্রাপ্তির খাতায় আঁচড় পড়েনি। এ নিয়ে খোদ আর্জেন্টাইনদের সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হতে হয় মেসিকে।
মেসি-মারাদোনার তুলনায় অনেকে টেনে আনেন জাতীয় দলের হয়ে সাফল্য-ব্যর্থতার ফিরিস্তি। আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ এনে দেওয়া মারাদোনাকে পরিয়ে দেন সেরার মুকুট। কিন্তু তোস্তাও দেখছেন ক্লান্তিহীনভাবে একই ছন্দে, ধারাবাহিকতায় মেসির ছুটে চলা।
“মেসি দুর্দান্ত একজন গোলদাতা, পাস দিতেও দারুণ পারদর্শী এবং সে আরও বেশি ধারাবাহিক। কেননা, ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবল খেলছে। সবসময়ই মেসি দারুণ অবস্থায় থাকে। মারাদোনার চেয়ে তার ক্যারিয়ার দীর্ঘ।”
মারাকানার ফাইনালে দলীয় লড়াইয়ের ভেতরে চলছে মেসি-নেইমার দ্বৈরথও। দুই বন্ধু বনে যাবেন ‘শত্রু।’ দুজনের মধ্যে সেরার প্রশ্নে তোস্তাও বেছে নেননি তার উত্তরসূরি নেইমারকে।
“মেসিই এগিয়ে, নেইমারের চেয়ে সে আরও বেশি পরিপূর্ণ।”
কলম্বিয়া-আর্জেন্টিনা সেমি-ফাইনাল সামনে রেখে নেইমার চেয়েছিলেন মারাকানার মঞ্চে উঠে আসুক মেসিরা। খোদ ব্রাজিলেও মেসির ভক্ত আছেন অনেক ফুটবলপ্রেমী। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের এই তারকাকে নিয়ে ব্রাজিলিয়ানদের এমন মনোভাবের কারণ জানালেন তোস্তাও। তবে তিনি ঠিকই ফাইনালের মঞ্চে দেখতে চান ব্রাজিলের হাসি।
“ব্রাজিলিয়ানরা মেসিকে সমর্থন করে, যাতে করে সে একটা কোপা আমেরিকা বা বিশ্বকাপ জিততে পারে। ব্রাজিল মেসির চমৎকার খেলা, মেধা এবং অনুকরণীয় ক্যারিয়ারের স্বীকৃতি দেয়। আমিও তাকে চ্যাম্পিয়ন দেখতে চাই, কিন্তু সেটা অন্য কোনো দলের বিপক্ষে, ব্রাজিলের বিপক্ষে নয় (হাসি)।”