কষ্টের জয়ে সেমিতে ব্রাজিল

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে যাওয়ার পরপরই ১০ জনের দলে পরিণত হলো ব্রাজিল। একজন বেশি থাকার সুবিধা কাজে লাগিয়ে তাদের চেপে ধরল চিলি। কিন্তু একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে ব্যবধান ধরে রাখত পারল ব্রাজিল। রক্ষণের দৃঢ়তায় চিলিকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে পৌঁছাল তিতের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2021, 01:57 AM
Updated : 3 July 2021, 02:12 AM

রিও দে জেনেইরোর নিল্তন সান্তোস স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার-ফাইনালে ১-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। বিরতির সময় বদলি নামা লুকাস পাকুয়েতা করেছেন ম্যাচের একমাত্র গোলটি।

আগেই কোয়ার্টার-ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় একুয়েডরের বিপক্ষে বিশ্রামে ছিলেন নেইমার-কাসেমিরোরা। চিলির বিপক্ষে আট পরিবর্তন এনে তাদের ফেরান ব্রাজিল কোচ তিতে। অন্য দিকে চিলি নামে দলে তিনটি পরিবর্তন এনে। দলে ফিরেন এরিক পুলগার ও সেবাস্তিয়ান ভেগাস। চোট কাটিয়ে তাদের সঙ্গী হন আলেক্সিস সানচেস।

গত তিন আসরের শিরোপা ভাগাভাগি করে নেওয়া দুই দলের লড়াইয়ের শুরুটা ছিল সাবধানী। বল ঘোরাফেরা করে মাঝমাঠে। দশম মিনিটে দূরপাল্লার শটে গোলের চেষ্টা করেন ভেগাস। সরাসরি আসা বল অনায়াসে নিয়ন্ত্রণে নেন দলে ফেরা ব্রাজিল গোলরক্ষক এদেরসন।

পাঁচ মিনিট পর একইভাবে চেষ্টা করেন রিশার্লিসন। স্বাগতিক ফরোয়ার্ডের শট অনায়াসে ঠেকান চিলি গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভো।

২২তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ পান রবের্তো ফিরমিনো। নেইমারের চমৎকার ক্রসে দূরের পোস্টে যেভাবে বলে পা ছোঁয়াতে চেয়েছিলেন লিভারপুলের ফরোয়ার্ড সেভাবে পারেননি। শটও তাই থাকেনি লক্ষ্যে।

পাঁচ মিনিট পর প্রতি আক্রমণ থেকে এদেরসনের পরীক্ষা নেন এদুয়ার্দো ভারগাস। ডানদিক থেকে এই ফরোয়ার্ডের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষক।

নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে চিলিকে চেপে ধরে ব্রাজিল। ৩৭তম মিনিটে গাব্রিয়েল জেসুসের বাড়ানো বলে নেইমারের ফ্লিক ফ্রান্সিসকো সিয়েরালতার পায়ে লেগে ব্যর্থ হয়। ছয় মিনিট পর জেসুসের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন চিলি গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাকুয়েতার গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। নেইমারের কাছ থেকে বল পেয়ে চিলির খেলোয়াড়দের দুর্বল চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে সহজেই জাল খুঁজে নেন তিনি। ফিরমিনোর বদলে বিরতির পর মাঠে নেমেছিলেন তিনি।

৪৯তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল। অনেক উপরে পা তুলে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছিলেন জেসুস। কিন্তু তার বুট গিয়ে লাগে ইউজেনিও মেনার মুখে। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সঙ্গে সঙ্গেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড। বিপজ্জনক ফাউলের জন্য তাকে লাল কার্ড দেখান আর্জেন্টাইন রেফারি পাত্রিসিও লোসতাও।

কোপা আমেরিকার গত আসরের ফাইনালেও লাল কার্ড দেখেছিলেন জেসুস।

৬২তম মিনিটে বল জালে পাঠায় চিলি। কিন্তু অফসাইডের জন্য মিলেনি গোল। চার মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ আসে নেইমারের সামনে। প্রতি আক্রমণে বল পায়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন পিএসজি ফরোয়ার্ড। কিন্তু তার শট সহজেই ফিরিয়ে দেন ব্রাভো।

৬৯তম মিনিটে একটুর জন্য সমতা ফেরাতে পারেনি চিলি। মেনার দারুণ ক্রসে ব্রেন বেরেটনের হেডে লাফিয়েও হাত ছোঁয়াতে পারেননি এদেরসন। ক্রসবারে লেগে বল ফিরে মাঠে। বেঁচে যায় ব্রাজিল।

৭৮তম মিনিটে ডি বক্সের মাথা থেকে ভারগাসের বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান স্বাগতিক গোলরক্ষক। বাকি সময়ে রক্ষণ জমাট রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।

এদিনই আরেক কোয়ার্টার-ফাইনালে টাইব্রেকারে প্যারাগুয়েকে হারানো পেরুর বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে খেলবে ব্রাজিল।