‘এফ’ গ্রুপের ‘মৃত্যুকূপ’ থেকে দ্বিতীয় সেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠলেও জার্মানির খেলায় সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না ভক্ত-সমর্থকরা। তবুও দলটা জার্মানি বলেই নকআউট পর্বে আশা ছিল বিশেষ কিছুর। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
মাঠের পারফরম্যান্সে প্রত্যাশার ছাপ না থাকলেও বুধবার সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচ শেষে লুভ বলেন, শতভাগ উজাড় করেই চেষ্টা করেছে তার দল।
“কোন পরিকল্পনা কাজ করেছে আর কোনটা করেনি, সেটা বিশ্লেষণের সময় এখনও আসেনি। কিছু কার্যকর হয়েছে, কিছু হয়নি।”
“আমি যেটা জানি তা হলো, এই সাড়ে চার সপ্তাহে আমরা সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েছি। কী ভুল হয়েছে, সেটা এখন বিশদভাবে আলোচনা করার তেমন কোনো মানে আমার কাছে নেই। গতকালের (মঙ্গলবার) পরাজয় এবং টুর্নামেন্টের শুরুর দিকেই ছিটকে পড়ার সব দায় নিচ্ছি আমি।”
২০১৮ বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর থেকেই লুভের কোচিং দর্শন ও দল পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সমর্থকরা। বারবার দাবি জানিয়েছেন দলে পরিবর্তনের। গত নভেম্বরে নেশন্স লিগে স্পেনের বিপক্ষে ৬-০ গোলে হারের পর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জার্মানিকে চমকে দেয় নর্থ মেসিডোনিয়া। এরপর ইউরো সামনে রেখে দলে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন লুভ। ফিরিয়ে আনেন মুলার, হামেলসের মত অভিজ্ঞ সেনানিদের। তাতেও দলটির খেলায় পরিবর্তন এসেছে সামান্য। মূল আসরে সব বিভাগেই লুভের দল ছিল নড়বড়ে। বিশেষ করে রক্ষণে।
গত তিন বছরে দলে অনেক পরিবর্তনের পরও লুভ রক্ষণে তিন ডিফেন্ডার রেখে এমন একটি কৌশল নেন, যে ধরনে খেলোয়াড়রা তাদের ক্লাবে মোটেও অভ্যস্ত নয়।
সাবেক জার্মানি মিডফিল্ডার মাইকেল বালাকের মতে, কোচের পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল। স্পষ্টভাবে বলেন, এটা কোচের ‘অসচেতনতা।’
“প্রথমার্ধ থেকেই এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে কোনো সমাধান নেই। কোনো কারণ ছাড়াই আমরা পিছু হটি। প্রতিপক্ষকে আমরা সামান্যই ভাবাতে পেরেছি এবং তাদের জন্য কাজটা সহজ করে দিয়েছি। আমি জানি না, কৌশলে পরিবর্তন আনতে কোচ কেন এত দেরি করলেন।”
আসর জুড়েই লুভের তিন সদস্যের ডিফেন্সিভ লাইনআপ নিয়ে হয়েছে সমালোচনা। জার্মানি অনূর্ধ্ব-২১ দলের কোচ স্তেফান কুন মনে করছেন, রক্ষণই ইউরোতে তাদের ব্যর্থতার মূল কারণ।
“এই তিন জনের রক্ষণ, আমি মনে করি কখনোই আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি যে, এটা রক্ষণকে মজবুত করবে এবং প্রতিপক্ষ কম সুযোগ পাবে। রক্ষণের এই সমস্যা আমরা পুরো টুর্নামেন্টেই ধরে রেখেছি।”
আগামী বছর পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ ছিল লুভের। তবে গত মার্চে ইউরো শেষে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সদ্য সাবেক হওয়া বায়ার্ন মিউনিখ কোচ হান্সি ফ্লিক।