থাকছেন জেমি, লক্ষ্য এখন এশিয়ান কাপ

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাই শেষের পর আলোচনার টেবিলে বসলেন জেমি ডে ও কাজী সালাউদ্দিন। আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বললেন জাতীয় দলের কোচ জেমি। অর্থাৎ, গুজব-গুঞ্জন যাই থাকুক, কোচের পদে টিকে যাচ্ছেন কোচ। যদিও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি সালাউদ্দিন জানালেন বাছাইয়ের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি খুশিও নন, অখুশিও নন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2021, 02:58 PM
Updated : 21 June 2021, 03:08 PM

২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্ব বাংলাদেশ শেষ করে ৬ হার ও দুই ড্রয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে থেকে। কলকাতার ভারতের বিপক্ষে এবং দোহায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ড্র করে পয়েন্ট পেয়েছিল দল। তবে এএফসির সিদ্ধান্ত বদলের ফলে এশিয়ান কাপের তৃতীয় ও চূড়ান্ত বাছাইয়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ।

বাছাইয়ে বাংলাদেশ সবশেষ জিতেছিল সেই ২০১১ সালে। ২০১৪ বিশ্বকাপের বাছাইয়ের ম্যাচে হারিয়েছিল লেবাননকে। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে না পারায় জেমির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। অনিশ্চিয়তার অবসানের পর এখন এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে মনোযোগ দিতে চান কোচ।

“ভালো একটা মিটিং হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে একটি ভালো পরিকল্পনা করে কীভাবে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে একটা পরিকল্পনা জমা দিব। সামনে তিনটি ফিফা উইন্ডো আছে, সেগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে চাই। ভালো প্রস্তুতি নিয়ে যেতে চাই এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের চূড়ান্ত পর্বে।”

“(আমার চাকরি নিয়ে) আমার চেয়ে অন্যরা বেশি উদ্বিগ্ন। এই চাকরিতে সবসময় উত্থান-পতন থাকবে। এ নিয়ে আমার কোনো দুর্ভাবনা নেই। বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়াই চিন্তা আমার। আমরা এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে কোয়ালিফাই করেছি। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। তবে আরও বেশি পয়েন্ট পেতে পারতাম। তবে, এটা এখন আর গুরুত্বপূর্ণ নয়।”

কোচের কণ্ঠে লক্ষ্য পূরণের আনন্দ থাকলেও বাছাইয়ে দলের আট ম্যাচের পারফরম্যান্সের মূল্যায়নে সালাউদ্দিন তৃপ্তি, অতৃপ্তি দুটোই জানালেন। দুই রকম অনুভূতির কারণ জানাতে টানলেন নিজেদের সময়ের প্রসঙ্গও।

“আমি কীভাবে খুশি হতে পারি? আবার খুশিও না, অখুশিও না। যখন আমরা খেলতাম, জাকারিয়া পিন্টু, প্রতাপ শঙ্কর দা (হাজরা), এনায়েত ভাই (এনায়েতুর রহমান) এবং আমি সালাউদ্দিন মিলেও ১০/১১ গোল খেতাম। এখন ৫/৬টা খাই। গোল খাওয়ার সংখ্যা নেমে এসেছে। কিন্তু এই ফলে খুশি নই।”

“বাছাইয়ের এই ফলে আসলে খুশি হওয়ারও কিছু নেই, কান্নাকাটি করারও কিছু নেই। বাছাইয়ে সবচেয়ে ভালো লেগেছিল সল্টলেকে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি। কিন্তু এবার কাতারে সল্টলেকে খেলা দলের ৬/৭ জন খেলোয়াড়ই ছিল না, যারা দলের মূল খেলোয়াড়।”

দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অবশ্য জেমি ও সালাউদ্দিন একটা বিষয়ে একমত হতে পেরেছেন। দুজনেই জানিয়েছেন, দেশের ফুটবলের উন্নতে বয়সভিত্তিক পর্যায় নিয়ে কাজ শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। বাফুফে সভাপতি ক্লাবগুলোকেও ফুটবলার তৈরি ও পরিচর্যার দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিলেন।

জেমিকে ছাঁটাই করার গুঞ্জন কিংবা তার আড়াই বছরের কাজের মূল্যায়নে কোনো কথা বলেননি সালাউদ্দিন।

“আমি যে চেয়ারটায় বসে আছি, এখানে বসে কোচকে নিয়ে কথা বলা যায় না। এটা নিয়ে বলার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক আছে। তবে এতটুকু বলতে পারি, জেমির সঙ্গে আমাদের চুক্তি রয়েছে। সামনের এশিয়ান কাপ নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে সে একটা পরিকল্পনা দিবে। সেটা দেখে বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”

এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বের বাছাইয়ের পরিকল্পনার কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন জেমি। সেখানে সমমানের দলগুলোর সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে মূল লড়াইয়ে নামার ভাবনা তার। জানালেন, খেলার ধরণে দ্রুত কোনো বদল আনার কথাও ভাবছেন না।

“ম্যাচগুলো যদি আমরা আক্রমণাত্মক খেলতাম, তাহলে হয়ত আরও বেশি ব্যবধানে হারতাম। মূল কথা হচ্ছে, আমার হাতে কী আছে (কোন মানের খেলোয়াড় আছে), তার উপর নির্ভর করে আমরা কী রকম ফুটবল খেলব।”

“ফিফা উইন্ডোতে আমরা কমপক্ষে ৬টা ম্যাচ খেলতে চাই এবং সেগুলো সমমানের কিংবা ভালো মানের দলের বিপক্ষে। আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য সমমানের দলগুলোর সঙ্গে খেলতে চাই; র‌্যাঙ্কিং বাড়াতে চাই।”

আগামী অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ড্র হওয়ার কথা। খেলা শুরুর কথা রয়েছে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে।