চুক্তি নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা ছিল না রামোসের। মার্কার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ শতাংশ বেতন কমানোসহ ৩৫ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে এক বছরের চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল ক্লাব। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন দুই বছরের চুক্তি। তাই বনিবনা হয়নি।
আগামী ৩০ জুন শেষ হবে রিয়ালের সঙ্গে রামোসের চুক্তির মেয়াদ। বিদায় জানাতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন রামোস। প্রিয় ক্লাব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে তার চোখ। আক্ষেপ ঝরল চেনা আঙিনা সান্তিয়াগো বের্নাবেউ থেকে বিদায় নিতে না পারা নিয়েও।
“আমার জীবনের কঠিনতম মুহূর্তগুলোর একটি এসে গেছে। এসেছে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলার সময়। বাবার হাত ধরে আমি এখানে এসেছিলাম….(এরপর চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি)। আবেগাক্রান্ত না হওয়াটা অসম্ভব। সান্তিয়াগো বের্নাবেউ থেকে বিদায় নিতে পারলে ভালো লাগত।”
২০০৫ সালে শৈশবের ক্লাব সেভিয়া থেকে দুই কোটি ৭০ লাখ ইউরো ট্রান্সফার ফিতে রিয়ালে যোগ দেন রামোস। ওই সময়ে যা কোনো স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের জন্য রেকর্ড ট্রান্সফার ফি।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে তিনি নিজেকে পরিণত করেন তার প্রজন্মের সেরা সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারদের একজন হিসেবে। গোল করার ক্ষেত্রেও দেখান দক্ষতা। ২০১৪ চাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে তার ৯৩তম মিনিটের গোলেই সমতায় ফিরেছিল রিয়াল। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে আতলেতিকো মাদ্রিদকে ৪-১ গোলে হারিয়ে প্রতিযোগিতাটিতে রিয়াল জিতেছিল নিজেদের দশম শিরোপা, যা পরিচিতি পায় ‘লা দেসিমা’ নামে।
সব মিলিয়ে রিয়ালের হয়ে ৬৭১ ম্যাচে রামোসের গোল ১০১টি। তাদের হয়ে দীর্ঘ পথচলায় ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৪টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৫টি লা লিগাসহ তিনি জিতেছেন মোট ২২টি শিরোপা, পাকো গেন্তোর (২৩) পর যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
তবে ২০২০-২১ মৌসুমটা তার কিংবা দলের ভালো কাটেনি। শিরোপাশূন্য মৌসুম শেষ করে রিয়াল আর দুই দফা চোটে মৌসুমের দ্বিতীয়ভাগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি।
চেনা আঙিনায় ফিরে আসার বার্তাও দিলেন রামোস।
“ধন্যবাদ রিয়াল মাদ্রিদ। সবসময় আমার হৃদয়ে থাকবে তুমি। আমার ক্যারিয়ারে অপূর্ব, দারুণ একটি পর্বের সমাপ্তি হলো। শুরু নতুন স্বপ্নেরও। আছে সামনের বছরগুলোতেও নিজের সেরা দেখানোর প্রবল ইচ্ছা এবং অর্জনের শোকেসে আরও শিরোপা যোগ করার আকাঙ্ক্ষা।”
“সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এটা বিদায়ের চেয়েও বেশি কিছু; আবারও দেখা হবে, কেননা আমি ফিরে আসব।”