ইউরোয় সোনার জুতা কে পাবেন?
স্পোর্টস ডেস্ক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 10 Jun 2021 08:52 PM BdST Updated: 11 Jun 2021 01:37 AM BdST
-
-
কিলিয়ান এমবাপে
-
হ্যারি কেইন
-
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
-
রোমেলু লুকাকু
-
ব্রুনো ফের্নান্দেস
-
অঁতোয়ান গ্রিজমান
-
বের্ত লেভানদোভস্কি
-
সের্গে জিনাব্রি
দুয়ারে কড়া নাড়ছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। ইউরোপ সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামবে ২৪ দল। এক মাসের লড়াই শেষে কার ঘরে যাবে শিরোপা, এই প্রশ্নের বাইরে আরও একটি বড় কৌতূহল-কে জিতবেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার?
কোভিড মহামারীতে এক বছর পিছিয়ে শুরু হতে যাওয়া প্রতিযোগিতাটির গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে বাজিমাত করতে পারেন বড় কোনো তারকা আবার অখ্যাত কেউ। তারকা বিচারে, আলোচনার টেবিলে ও বিশেষজ্ঞদের মতে শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি নাম-অন্তত মাঠের লড়াই শুরুর আগে যাদের পাল্লা সবচেয়ে ভারি।
সবশেষ ২০১৬ আসরে ৭ ম্যাচে ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন অঁতোয়ান গ্রিজমান। পর্তুগালের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল তার দেশ ফ্রান্স। আসছে আসরে পুরস্কারটি জিততে তাকে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে স্বদেশি কিলিয়ান এমবাপে, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, হ্যারি কেইন, রোমেলু লুকাকুদের সঙ্গে।
তাদের সঙ্গে আরও কারা থাকতে পারেন এই লড়াইয়ে, তা তুলে ধরা হলো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য।
বর্তমানে বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন তিনি। পিএসজির হয়ে ব্যক্তিগতভাবে কাটিয়ে এসেছেন দারুণ একটি মৌসুম। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে ৩১ ম্যাচে ২৭ গোল করে লিগ ওয়ানের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন এমবাপে। আর কেউ ২০ গোল ছাড়াতে পারেননি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮ ম্যাচে তিনি করেন ৮ গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৭ ম্যাচে তার নামের পাশে গোল ৪২টি।
ফ্রান্সের সাবেক ফরোয়ার্ড দাভিদ ত্রেজেগে সম্প্রতি এমবাপেকে রোনালদো ও লিওনেল মেসির ‘যোগ্য উত্তরসূরি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউরোতে তরুণ এই ফরোয়ার্ড চাইবেন নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করতে।
তিন বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে এমবাপে ৭ ম্যাচে গোল করেছিলেন ৪টি। লুকাকু, গ্রিজমান, রোনালদো ও ডেনিস চেরিশেভের সঙ্গে যৌথভাবে যা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এবার ইউরোর গোল্ডেন বুট জয়ের লড়াইয়ে তিনি আছেন ভালোভাবেই।
এমবাপের পাশে ফ্রান্সের আক্রমণভাগে আছে গ্রিজমান, করিম বেনজেমা, উসমান দেম্বেলের মতো বিশ্ব মানের সব খেলোয়াড়। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ীরা এবার ইউরোর অন্যতম ফেভারিট।
দিদিয়ে দেশমের দলটি যদিও পর্তুগাল ও জার্মানির সঙ্গে কঠিন গ্রুপে আছে। তাই গোলের জন্য সংগ্রাম করতে হতে পারে এমবাপেকে।
বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা করা হয় কেইনকে। এবারের আসরে গ্যারেথ সাউথগেটের দলের আশা অনেকটা তাকে ঘিরেই। টটেনহ্যাম হটস্পারের হয়ে হতাশাজনক মৌসুমের পর তিনি নিজেও চাইবেন ইউরোয় সম্ভাব্য সবকিছু জয়ের।
ইউরোতে কেইনের আত্মবিশ্বাস থাকার কথা তুঙ্গে। প্রতিযোগিতাটির বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন তিনি ২২ শট থেকে ১২ গোল করে। অর্থাৎ প্রতিটি শটকে গোলে রূপান্তর করার হার ৫৫ শতাংশ।
প্রিমিয়ার লিগের ২০২০-২১ মৌসুমে শেষ দিনের লড়াইয়ে লিভারপুলের মোহামেদ সালাহকে (২২ গোল) পেছনে ফেলে প্রতিযোগিতাটির গোল্ডেন বুট জেতেন কেইন (২৩ গোল)।
২০১৮ বিশ্বকাপে ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন তিনি। ২৮ বছর পর সেবার বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলেছিল ইংল্যান্ড।
গোল্ডেন বুটের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ে আলোচনা হবে আর সেখানে রোনালদোর নাম থাকবে না, তা কী হয়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ও ইউভেন্তুসের হয়ে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন তিনি আলাদা পাঁচ মৌসুমে। যদিও ইউরোর গোল্ডেন বুট তার জেতা হয়নি এখনও। পাঁচ বছর আগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আসরে ৩ গোল করে ছিলেন গ্রিজমানের পেছনে।
পাঁচবারের বর্ষসেরা এই খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। দেশের হয়ে ১৭৪ ম্যাচে তার গোল ১০৪টি। আর ৫টি হলে ইরানের আলি দাইয়ের গড়া ১০৯ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করবেন তিনি।
ইউরোর বাছাইয়ে ৮ ম্যাচে রোনালদো করেছিলেন ১১ গোল। এবার মূল পর্বে জ্বলে ওঠার পালা। গোলে তাকে সহায়তার জন্য পর্তুগাল দলে আছেন রিকার্দো পেরেইরো, বের্নার্দো সিলভা, জোয়াও কানসেলো, পেদ্রো নেতো, দিয়োগো জটা ও ব্রুনো ফের্নান্দেসের মতো পরীক্ষিতরা।
১১ বছর পর এবার ইন্টার মিলানের সেরি আ শিরোপা জয়ে লুকাকুর ছিল বড় অবদান। লিগে ২৪ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে তিনি করান ১১টি। ইউভেন্তুস ফরোয়ার্ড রোনালদোকে পেছনে ফেলে নির্বাচিত হন সেরি আয় মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়।
২৮ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার ক্লাবের ফর্মটা ইউরোতেও ধরে রাখবেন, প্রত্যাশা তার সতীর্থ ও ভক্ত-সমর্থকদের।
আসরে ‘এফ’ গ্রুপে রাশিয়া, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বেলজিয়াম। প্রতিপক্ষ তুলনামূলক কম শক্তিশালী হওয়ায় লুকাকু গোলের জন্য অনেক সুযোগ পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গোল্ডেন বুট জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করতে কেভিন ডে ব্রুইন ও ইউরি টিলেমানসের থেকে যথেষ্ট সহায়তাও তিনি পাবেন।
২০১৮ বিশ্বকাপে গ্রিজমান, এমবাপে, রোনালদো ও চেরিশেভের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া লুকাকু ইউরোতে তালিকার শীর্ষে উঠতে ব্যকুল থাকবেন নিশ্চিতভাবে।
ইউরোর বাছাইপর্বে তার গোল করার গড় ছিল দুর্দান্ত। প্রতি ৯০ মিনিটে করেছিলেন ১.৫৬ গোল, যা তাকে প্রতিযোগিতাটিতে সবচেয়ে বিপজ্জনক স্ট্রাইকারে পরিণত করেছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রথম পছন্দের খেলোয়াড়দের একজন তিনি। এবার প্রিমিয়ার লিগে দলটির রানার্সআপ হওয়ায় তার ছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
স্পোর্তিং লিসবন থেকে ফের্নান্দেস ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যাওয়ার পর থেকে ম্যানচেস্টারের দলটি হয়ে উঠেছে শিরোপা প্রত্যাশী দলগুলোর একটি।
সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে শুধু ১৭ গোলে সহায়তাই করেননি ফের্নান্দেস, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেছেন ২৮ গোল। ইউরোতে পর্তুগালের হয়েও তিনি প্রতিপক্ষের গোলমুখে জ্বলে উঠবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ২৯ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন শুধু ৪টি। পরিসংখ্যানটাকে এবার তার পাল্টে দেওয়ার পালা।
২০১৬ আসরের গোল্ডেন বুট জয়ী গ্রিজমান নিশ্চিতভাবে পুরস্কারটা ধরে রাখতে চাইবেন এবার।
২০২০-২১ মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে বাজে শুরুর পর ছন্দ খুঁজে পান ৩০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫১ ম্যাচে করেন ২০ গোল।
তবে, তিনি বড় মঞ্চের খেলোয়াড়। ইউরোর গত আসরে সর্বোচ্চ ৬ গোল করে রেখেছিলেন তার প্রমাণ। ২০১৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে করেছিলেন যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ গোল। এবার ইউরোতেও দেশমের দলের অনেক প্রত্যাশা তাকে ঘিরে।
গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন তিনি। আগের মৌসুমের ধারাবাহিকতায় সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমেও বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গতবারের ফিফা বর্ষসেরা এই খেলোয়াড়।
৩২ বছর বয়সী পোলিশ তারকা এবার বুন্ডেসলিগায় কিংবদন্তি জার্ড মুলারের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ভাঙেন ৪১ গোল করে। জার্মান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪০ ম্যাচে করেন ৪৮ গোল।
যদিও জাতীয় দলের সতীর্থদের মানের কারণে লেভানদোভস্কির গোল্ডেন বুট জয়ের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে। এমবাপে যেমন পাশে পাবেন গ্রিজমান, কিংসলে কোমান, পল পগবার মতো বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের, লেভানদোভস্কির সে সুযোগ নেই।
এবারের ইউরো হতে যাচ্ছে ২৫ বছর বয়সী এই উইঙ্গারের দেশের হয়ে প্রথম কোনো বড় টুর্নামেন্ট। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এরই মধ্যে নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি।
২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকের জার্মানি দলে ছিলেন জিনাব্রি। দলকে রুপার পদক জেতাতে রেখেছিলেন বড় অবদান। ৬ ম্যাচে ৬ গোল করে স্বদেশি নিলস পিটারসেনের সঙ্গে তিনি ছিলেন যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
অলিম্পিকে সাফল্যের পর ২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো ডাক পান জাতীয় দলে। অভিষেকে স্যান ম্যারিনোর বিপক্ষে জার্মানির ৮-০ গোলে জয়ের ম্যাচে জিনাব্রি করেছিলেন হ্যাটট্রিক। পরের বছর জুনিয়র দলের হয়ে জেতেন অনূর্ধ্ব-২১ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ।
সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জিনাব্রি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৮ ম্যাচে করেন ১১ গোল। ইউরোর গোল্ডেন বুট জয়ের লড়াইয়ে তিনি আছেন ভালোভাবেই।
সর্বাধিক পঠিত
- শ্রীলঙ্কাকে চারশর নিচে থামানোর পর তামিম-জয়ের দৃঢ়তা
- সাকিবের ‘চায়নাম্যান ডেলিভারি’ আগে দেখেননি ম্যাথিউস
- বিদেশ সফর সীমিত হল সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানে
- ফের কমানো হল টাকার মান, ডলারের বাজার লাগামহীন
- ছবি প্রকাশ, তাজমহলের সেই কুঠুরিতে ‘কোনো রহস্য নেই’
- খুলনায় অস্ত্রের মুখে দুই বোনকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণ’
- ‘ট্রফি ধরে রাখতে আমরা জীবন দিয়ে দেব’
- যানজট নিরসনে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ চান মেয়র তাপস
- 'ভয়ঙ্কর' কাদিসে পারল না রিয়াল
- তামিম-জয়ের ব্যাটে ৬১ ইনিংসের খরা কাটানোর আশা