শেষ সময়ের গোলে আর্জেন্টিনার জয় হাতছাড়া

ম্যাচের প্রথম আট মিনিটেই আর্জেন্টিনার দুই গোল। বিরতির পর কলম্বিয়ার এক গোলে লড়াই জমজমাট। ৯০ মিনিট পেরিয়ে তবু এগিয়ে আর্জেন্টিনাই। একেবারে শেষ মুহূর্তে পাল্টে গেল চিত্র। শেষের নাটকীয়তায় লিওনেল মেসিদের হতাশায় ডুবিয়ে মূল্যবান পয়েন্ট আদায় করে নিল স্বাগতিক কলম্বিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2021, 00:15 AM
Updated : 9 June 2021, 04:23 AM

এস্তাদিও মেত্রোপলিতানোয় বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। ক্রিস্তিয়ান রোমেরো ও লেয়ান্দ্রো পারেদেসের গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান কমান লুইস মুরিয়েল। আর শেষ দিকে সমতা টানেন মিগুয়েল বোরহা। 

মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারানোর ম্যাচে বড় ধাক্কাও খেয়েছে তারা। চোট পেয়েছেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস এবং আঘাতটা বেশ গুরুতর বলেই ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। কোপা আমেরিকা শুরুর মাত্র কদিন আগে যা দলটির জন্য হতে পারে বড় দুর্ভাবনার।

আগের ম্যাচে চিলির বিপক্ষে অনেক সুযোগ পেয়েও জয়সূচক গোলের দেখা না মেলায় দুর্ভাবনা ভর করেছিল স্কালোনির মনে। স্কোরিংয়ের সমস্যায় আবারও ভুগতে হয় কি না? প্রথম আট মিনিটেই দুবার জালে বল পাঠিয়ে কোচের দুঃশ্চিন্তার প্রায় ইতি টেনে দেন রোমেরো ও পারেদেস।

প্রথম সাফল্য মেলে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে। ডান দিক থেকে রদ্রিগো দে পলের দারুণ ফ্রি কিকে লাফিয়ে হেডে দলকে এগিয়ে নেন রোমেরো।

পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ হওয়া গোলে দায় আছে স্বাগতিক রক্ষণের। তবে পারেদেসের নৈপুণ্যও কম নয়। ডি-বক্সে মেসি শট নিতে ব্যর্থ হওয়ার পরও বিপদমুক্ত করতে পারেনি কেউ। বল বুক দিয়ে নামানোর ফাঁকে প্রতিপক্ষের দুই জনের মাঝ দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন পারেদেস। এরপর লাউতারো মার্তিনেসের বাড়ানো ফিরতি পাস ধরে আরেকজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন পিএসজি মিডফিল্ডার।

২৭তম মিনিটে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হাতে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। জিওভানি লো সেলসোর থ্রু বল ধরে ডি-বক্সে ডান দিক থেকে জোরালো শট নেন মার্তিনেস। লাফিয়ে বল ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি গোলরক্ষক দাভিদ ওসপিনা। ফাঁকায় পেয়ে যান নিকো গনসালেস, তবে তার শট পোস্ট ঘেঁষে পাশের জালে লাগে।

প্রথমার্ধেই মূল গোলরক্ষককে হারানোর ধাক্কাটা খায় আর্জেন্টিনা। ৩৪তম মিনিটে বল ধরতে গিয়ে প্রতিপক্ষের ইয়েরি মিনার সঙ্গে ধাক্কা লেগে বেকায়দায় পড়ে মাথায় ও কাঁধে আঘাত পান এমিলিয়ানো মার্তিনেস। পাঁচ মিনিটেরও বেশি সময় মাঠেই তার চিকিৎসা চলে, পরে স্ট্রেচারে করে তাকে বাইরে নেওয়া হয়।

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে লুইস মুরিয়েলের সফল স্পট কিকে লড়াইয়ে ফেরে কলম্বিয়া। ডি-বক্সে মাতেউস উরিবের মুখে নিকোলাস ওতামেন্দি আঘাত করলে পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি। হলুদ কার্ডও দেখেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার।

৫৮তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন মেসি। তবে তার দারুণ ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান অসপিনা। বল তার হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে বাইরে যায়। ৭২তম মিনিটে ডি-বক্সে জায়গা বানিয়েও উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন মুরিয়েল।

৮৫তম মিনিটে আবারও মেসিকে বিমুখ করেন অসপিনা। ডি-বক্সের মধ্যে থেকে বার্সেলোনা তারকার শট ঝাঁপিয়ে ফেরান নাপোলি গোলরক্ষক।

পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে আসে আর্জেন্টিনাবে হতভম্ব করে দেওয়া গোলটি। ডান দিক থেকে হুয়ান কুয়াদরাদোর ক্রসে হেডে গোলটি করেন বোরহা। বদলি গোলরক্ষক আগুস্তিন মার্চেসিন ঝাঁপিয়ে হাত লাগালেও বলের গোললাইন পেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি।

সবশেষ ২০১৯ সালের জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার সেমি-ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে হেরেছে আর্জেন্টিনা। প্রায় দুই বছর ও টানা ১৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকার ভালোলাগা থাকলেও চলতি বাছাইয়ে তৃতীয় ম্যাচে পয়েন্ট হারানোর হতাশাও যোগ হলো তাদের শিবিরে।

ছয় ম্যাচে তিনটি করে জয় ও ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ১২।

তাছাড়া, কোপা আমেরিকা শুরুর আগে টানা দুই ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও জয় হাতছাড়া হওয়াটা দলের আত্মবিশ্বাসেও বড় আঘাত।