আরও সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত টুখেল

দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র চার মাসের মাথায় ধরা দিয়েছে সবচেয়ে বড় সাফল্য। প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে মাস্টারক্লাস পারফরম্যান্সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে দল। তবে এখানেই থামতে চান না চেলসি কোচ টমাস টুখেল। আরও সাফল্যের জন্য ব্যাকুল এই জার্মান।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2021, 10:26 AM
Updated : 30 May 2021, 10:26 AM

পোর্তোর এস্তাদিও দো দ্রাগাওয়ে শনিবার অল ইংলিশ ফাইনালে দাপুটে ফুটবলে ১-০ গোলে জেতে চেলসি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কাই হাভার্টজের গোলে ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটি।

চলতি মৌসুমে এ নিয়ে তৃতীয়বার পেপ গুয়ার্দিওলাকে হারালেন টুখেল। নিখুঁত পরিকল্পনায় সিটি কোচের কৌশলকে ব্যর্থ করে দেন তিনি।

মৌসুমে গুয়ার্দিওলার বিপক্ষে টুখেলের অন্য দুই জয় এফএ কাপের সেমি-ফাইনালে ও প্রিমিয়ার লিগের অ্যাওয়ে ম্যাচে। তবে এদিনের ম্যাচটি ছিল আগের দুটি থেকে একেবারেই আলাদা। মৌসুমের অধিকাংশ সময়জুড়ে দাপুটে ফুটবল উপহার দেওয়া সিটিকে এদিন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেয়নি টুখেলের দল।

২০২০-২১ মৌসুমের শুরুতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পা রাখা গোলরক্ষক এদুয়াঁ মঁদি, ডিফেন্ডার চিয়াগো সিলভা, অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কাই হাভার্টজ ও ফরোয়ার্ড টিমো ভেরনারদের নিয়ে চেলসি দলটি বেশ তরুণ। এমন একটি দলের জন্য এই জয় আনন্দের বিশাল এক উপলক্ষ বটে।

ম্যাচ শেষে উদযাপনের মাঝেই টুখেল শোনালেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। আরও সাফল্য চান তিনি, চ্যালেঞ্জ জানাতে চান ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সিটির আধিপত্যে।

“আমরা কোন পর্যায়ের তা নির্ধারণ হয়ে গেছে। উদযাপন শেষে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমাদের আরও পরিণত হয়ে উঠতে হবে; আরও ভালো দল হওয়ার জন্য এটাকে কাজে লাগাতে হবে।”

“আমরা যে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাফল্যের জন্য মরিয়া থাকা এবং পরেরটির জন্য এগিয়ে যাওয়া অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।”

দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল চেলসি

ম্যাচে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে চেলসির জয়ের ব্যবধান হতে পারত আরও বড়। তবে এসব নিয়ে ভাবছেন না টুখেল। তার কাছে এই অর্জন বিশাল কিছু।

“ফাইনালে আসাটা ছিল বিশাল বড় অর্জন এবং তার চেয়ে বড় ব্যাপার নিজেদের মতো করে শিরোপার জন্য লড়াই করা। জানতাম, আমাদের শীর্ষ মানের ফুটবল খেলতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলগত ফুটবল খেলতে হবে, আর সেটাই আমরা করেছি।”

কোচিং ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফাইনালে এসে প্রথমবারের মতো এই শিরোপায় চুমু আঁকলেন টুখেল। গতবার পিএসজিকে ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি, শিরোপা লড়াইয়ে বায়ার্নের বিপক্ষে হেরেছিল প্যারিসের দলটি। কঠিন সময় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপা জিততে পারায় উৎফুল্ল তিনি।

“আমি প্রায় বাকরুদ্ধ। ছেলেদের সঙ্গে এই মুহূর্ত ভাগাভাগি করতে পারায় খুব ভালো লাগছে।”

পাঁচ মাস আগেও টুখেল ও চেলসির জন্য সময়টা ছিল খুব কঠিন। পিএসজি থেকে ছাঁটাই হয়ে গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে টুখেল যখন দায়িত্ব নেন, চেলসি তখন দিকহারা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তারা নেমে গিয়েছিল পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে।

টুখেলের ছোঁয়ায় আমূল বদলে যায় দলটি। নিজেদের ফিরে পান ম্যাসন মাউন্ট-হার্ভাটজরা। আবারও দলের প্রাণভোমরায় পরিণত হন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী তারকা এনগোলো কঁতে। সেরা ফর্ম ফিরে পান জার্মান ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার।

টুখেলেন কোচিংয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রথম ১৪ ম্যাচেই অপরাজিত ছিল তারা। শেষ পর্যন্ত এবারের প্রিমিয়ার লিগ তারা শেষ করে চতুর্থ হয়ে। আর এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়!

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই নিয়ে তৃতীয়বার ফাইনালে উঠে দুবার শিরোপা জিতল চেলসি। ২০০৭-০৮ আসরে প্রথমবার ফাইনালে উঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরেছিল তারা। চার বছর পর বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারেই হারিয়ে প্রথম ইউরোপ সেরার মুকুট পরেছিল দলটি।