চাপে মাথানত করতে নারাজ রিয়াল, বার্সা ও ইউভেন্তুস

নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের হুমকি তো আগে থেকেই ছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে উয়েফা। কিন্তু কোনো কিছুই টলাতে পারছে না ভেস্তে যেতে বসা ইউরোপিয়ান সুপার লিগ আঁকড়ে থাকা তিন ক্লাবকে। যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থার চাপে মাথানত না করার ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও ইউভেন্তুস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2021, 06:29 PM
Updated : 26 May 2021, 06:29 PM

গত মাসে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সুপার লিগ চালুর ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনায় মুখর হয় ভক্ত-সমর্থক, ফুটবল বিশেষজ্ঞ, এমনকি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও। প্রবল চাপ আসতে থাকে ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো থেকে।

চাপের মুখে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নয়টি ক্লাব নিজেদের সরিয়ে নিলেও অনড় অবস্থানে থেকে যায় বিতর্কিত লিগটি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করা রিয়াল, বার্সেলোনা ও ইউভেন্তুস।

তদন্ত শেষে মঙ্গলবার ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দেয় উয়েফা। এর প্রেক্ষিতে পরদিন নিজেদের অবস্থান জানাল ক্লাব তিনটি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুরো বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকার পরও তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

গত ১৮ এপ্রিল সুপার লিগ আবির্ভাবের দুই দিন পরই অনেক আলোচিত-সমালোচিত এই টুর্নামেন্টের পক্ষে মত দেয় স্পেনের একটি বাণিজ্যিক আদালত। রায়ে বলা হয়, ফিফা ও উয়েফা ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় ১২টি ক্লাবের সুপার লিগ গঠন রোধ করতে পারে না।

ফিফা ও উয়েফা যদি ক্লাবগুলোকে বিচ্ছিন্ন সুপার লিগ তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে ইইউ কম্পিটিশন আইন ভঙ্গ করে, তাহলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসকে অনুরোধ করেছে মাদ্রিদের একটি আদালত।

তিন ক্লাবের বিবৃতিতেও আদালতের এই নির্দেশের কথা বলা হয়েছে।

“উয়েফার আইনি প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা আদালতের রায়ের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যে রায়ে উয়েফাকে সতর্ক করে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, তারা যেন সুপার লিগের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলোকে শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে কোনো কাজ শুরু না করে, যতক্ষণ পর্যন্ত মামলাটি বিচারাধীন আছে।”

“তাই, উয়েফার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করাটা অপ্রত্যাশিত এবং আদালতের রায়ের লঙ্ঘন।”

প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলো আত্মপক্ষ সমর্থন করে শুরু থেকেই বলে আসছে, ফুটবলের স্বার্থেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুপার লিগ প্রকল্পের প্রথম চেয়ারম্যান রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেস যেমন গত মাসে বলেছিলেন, ফুটবলকে বাঁচাতেই তাদের এই প্রচেষ্টা। সবশেষ ক্লাবগুলোর বিবৃতিতেও তাই বলা হয়েছে।

“খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে ফুটবলকে আধুনিকায়ন করার পথ না খুঁজে, উয়েফা চাচ্ছে ইউরোপীয় ফুটবলে তারা যে একচেটিয়া ক্ষমতা নিয়ে বসে আছে সেটার বিরুদ্ধে আদালতে লড়াই থেকে আমরা সরে আসি।”

বিদ্রোহী প্রতিযোগিতাটি থেকে সরে যাওয়া ক্লাবগুলো হলো-ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, টটেনহ্যাম হটস্পার, আর্সেনাল, ইতালির এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও স্পেনের আতলেতিকো মাদ্রিদ।

ওই ৯ ক্লাবকে পুরনো অবস্থায় ফেরার অঙ্গীকারনামা ‘ক্লাব কমিটমেন্ট ডিক্লারেশন’ এ স্বাক্ষর করিয়েছে উয়েফা। সেই সঙ্গে ওই দলগুলোকে ‘আর্থিক জরিমানা’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে চুক্তিপত্রে রাখা হয়েছে, পরবর্তীতে এমন কোনো ভুল করলে বড় শাস্তির শর্ত।