আতলেতিকোর ওপর চাপ ধরে রাখল রিয়াল

সপ্তাহ দুই আগে বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে রুখে দেওয়া গ্রানাদা এবার আর কোনো চমক দেখাতে পারল না। পুরো ম্যাচে আধিপত্য ধরে রেখেই প্রত্যাশিত জয় তুলে নিল রিয়াল মাদ্রিদ। শিরোপা লড়াইয়ে চাপ ধরে রাখল আতলেতিকো মাদ্রিদের ওপর।

প্রতিপক্ষের মাঠে বৃহস্পতিবার রাতের লিগ ম্যাচটি ৪-১ গোলে জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। লুকা মদ্রিচের গোলে রিয়াল এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রদ্রিগো। হোর্হে মোলিনা ব্যবধান কমানোর পর বিজয়ীদের বাকি দুই গোল করেন আলভারো ওদ্রিওসোলা ও করিম বেনজেমা।

আগের দিন রিয়াল সোসিয়েদাদকে হারানো আতলেতিকো মাদ্রিদ ৩৬ ম্যাচে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। দুইয়ে ফেরা রিয়ালের পয়েন্ট ৭৮। গত মঙ্গলবার লেভান্তের মাঠে ড্র করা বার্সেলোনা ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে।

জয়ে ফেরার লক্ষ্যে মাঠে নামা রিয়াল দুই উইংয়ে দুই ব্রাজিলিয়ানের নৈপুণ্যে শুরু থেকেই আক্রমণে প্রভাব বিস্তার করে। তবে ভুল পাস আর শেষ মুহূর্তে খেই হারানোয় সেগুলো ভেস্তে যাচ্ছিল। চতুর্দশ মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম বল রাখে রিয়াল; তবে রদ্রিগোর ক্রসে বেনজেমার হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।

তিন মিনিট পর একরকম হঠাৎ করেই গোল পেয়ে যায় শিরোপাধারীরা। মদ্রিচের গোলটিতে দারুণ ভূমিকা মার্সেলোর জায়গায় লেফট-ব্যাকে সুযোগ পাওয়া মিগেল গুতিরেসের। প্রথমবার শুরুর একাদশে নামা এই তরুণ রক্ষণের মাথার ওপর দিয়ে অসাধারণ এক স্কুপ পাসে ডি-বক্সে খুঁজে নেন অভিজ্ঞ সতীর্থকে। আর দুরূহ কোণ থেকে গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রোয়াট মিডফিল্ডার।

২৭তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ তৈরি করেছিলেন আরেক তরুণ মার্ভিন পার্ক। তবে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ২০ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। ৪৫তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল পায়ে ছুটে ডি-বক্সে ঢুকে আরও একবার দুর্বল শটে হতাশ করেন ভিনিসিউস জুনিয়র। দারুণ ড্রিবলিং আর গতিতে প্রায় প্রতি ম্যাচেই আলো ছড়ান তিনি; কিন্তু স্কোরিংয়ে তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন বেড়েই চলেছে।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় রিয়াল। মার্ভিনের বাড়ানো বল ধরে ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রদ্রিগো।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা খেই হারায় রিয়াল। ৬৭তম মিনিটে গোল খেতে বসেছিল তারা। তবে সতীর্থের গোলমুখে বাড়ানো ক্রসে পা লাগাতে ব্যর্থ হন কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেস।

চার মিনিট পর ব্যবধান কমায় গ্রানাদা। সুয়ারেসের জোরালো শট থিবো কোর্তোয়া ফেরালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফাঁকায় বল পেয়ে নিখুঁত শটে গোলটি করেন ৩৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড হোর্হে মোলিনা।

নাটকীয়তার আভাস জাগলেও তা স্থায়ী হয়নি। খানিক বাদেই পরপর দুই মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচ প্রায় শেষ করে দেয় রিয়াল।

মদ্রিচের উঁচু করে বাড়ানো বল এদেন আজার দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ধরে ডি-বক্সে খুঁজে নেন ওদ্রিওসোলাকে। পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে ব্যবধান বাড়ান স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডার।

রিয়ালের চতুর্থ গোলটি আসে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক রুইস সিলভার ভুলে। আক্রমণ রুখতে ডি-বক্সের অনেকটা বাইরে বেরিয়ে এসে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি তিনি। তাকে কাটিয়ে বল ধরেই শট নেন বেনজেমা। জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের।

শেষ দিকে দুটি ভালো সুযোগ পেয়েছিল গ্রানাদা। কিন্তু কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিতে পারেনি তারা।

আসরে প্রথম দেখায় গ্রানাদাকে ২-০ গোলে হারানো রিয়াল এই নিয়ে লিগে টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত রইলো।

মুকুট ধরে রাখতে শেষ দুই ম্যাচ জেতার পাশাপাশি রিয়ালকে প্রার্থনা করতে হবে আতলেতিকোর হোঁচটের। আগামী রোববার আতলেতিক বিলবাওয়ের মাঠে খেলার পর শেষ রাউন্ডে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলবে প্রতিযোগিতার সফলতম দলটি।