রিয়ালে ‘তোপের মুখে’ আজার

চোট যেন নিত্যসঙ্গী। মাঠের চেয়ে বাইরেই কাটে বেশি সময়। কালেভদ্রে ফিরলেও নিজেকে ফিরে পেতেই চলে যায় সময় এবং এরপর আবার চোট। রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর থেকে এদেন আজারের গল্পটা এমনই। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে সাবেক ক্লাব চেলসির বিপক্ষে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। মাদ্রিদে দুই বছরের পথচলায় সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হতে হয়েছে আগেও। তবে এবার তা আরও বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2021, 06:28 PM
Updated : 6 May 2021, 06:28 PM

শুধু ফুটবল বিশেষজ্ঞদের নয়, সমর্থকদেরও তোপের মুখে পড়েছেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়ার ম্যাচে অবশ্য আজার একা নন, বাজে খেলেছে পুরো দলই। তবে ম্যাচ শেষে তার অভিব্যক্তি মোটেও পছন্দ হয়নি সমর্থকদের। অমন হতাশার মুহূর্তে সাবেক চেলসি সতীর্থদের সঙ্গে আজার হাসি–ঠাট্টায় মেতে ওঠায় বেজায় ক্ষেপেছেন সমর্থকরা।

২০১৯ সালে চেলসি থেকে ১০ কোটি ইউরো ট্রান্সফার ফিতে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর থেকেই চোটের সঙ্গে লড়ছেন আজার। যখনই ফিট হয়েছেন, তখনই অবশ্য তাকে শুরুর একাদশে রেখেছেন কোচ জিনেদিন জিদান। কিন্তু আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড। যার সর্বশেষ সংযোজন বুধবার চেলসির বিপক্ষে রিয়ালের বেদনাদায়ক হারের ম্যাচ।

“আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে আজারের আরও বেশি খেলতে হবে”-ম্যাচ শেষে বলেন জিদান। কোচের কথায় ইঙ্গিত স্পষ্ট, আজারকে যথেষ্ট সুযোগ দেবেন তিনি। তাকে ক্লাবে আনার পেছনে যে ফরাসি কোচের ছিল জোরালো ভূমিকা।

আজারের সামর্থ্য নিয়ে অবশ্য সন্দেহ ছিল না কখনোই। চেলসি থেকে তারকাবেশেই আসেন রিয়ালে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় চোট। ২০১৯ সালের নভেম্বরে পিএসজির ডিফেন্ডার তমা মুনিয়ের সঙ্গে সংঘর্ষে গোড়ালিতে চোট পাওয়ার পর থেকে কখনোই পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি।

তারপর থেকে ১০ বার চোটে পড়েছেন আজার। ৩৮৯ দিন তাকে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে। এই সময়ে খেলতে পারেননি দলের ৫০ ম্যাচে।

এরপরও তাকে সমর্থন জুগিয়ে গেছে রিয়ালের সমর্থকরা। বুধবার তাকে ঘিরে অনেক আশা দেখেছিল তারা। কিন্তু আজার পুরোপুরি ছিলেন নিষ্প্রভ। সমর্থকদের হতাশা আরও বাড়িয়ে দেয় ম্যাচ শেষে সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে আজারের ওই হাসি–ঠাট্টার দৃশ্য।

আজারকে সুযোগ দিতে ‘বলি’ ভিনিসিউস

আজারকে সুযোগ দিতে গিয়ে ভুগতে হচ্ছে ভিনিসিউস জুনিয়রকে। প্রিয় লেফট-উইং পজিশন থেকে সরে গিয়ে চেলসির বিপক্ষে ভিনিসিউসকে খেলতে হয়েছে রাইট উইংব্যাক হিসেবে। যেখানে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বড় ম্যাচে আলো ছড়ান ভিনিসিউস। কোয়ার্টার-ফাইনালে ঘরের মাঠে লিভারপুলের বিপক্ষে জোড়া গোল করে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। চেলসির বিপক্ষে কৌশল কাজে না লাগায় দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডকেই তুলে নেন জিদান। আরও সুযোগ দেন কদিন আগে চোট কাটিয়ে ফেরা আজারকে।

সামনেও আজারকে নিয়ে জিদানের ভাবনা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হচ্ছে। ফিট থাকলে বেলজিয়ান তারকাকে হয়তো লা লিগায় বাকি চার ম্যাচেই শুরুর একাদশে রাখবেন তিনি। 

ধৈর্য ধরে অপেক্ষায় রিয়াল

৩০ বছর বয়সী আজারকে নিয়ে অবশ্য এখনই ধৈর্য হারাচ্ছে না ক্লাব। অপেক্ষা তার স্বরূপে ফেরার।

কয়েকটি যদির ওপর ভর করে সাফল্যের আশায় আছে রিয়ালের অনেকে। আজার যদি সেরা ফর্ম ফিরে পান, পিএসজি থেকে কিলিয়ান এমবাপেকে যদি আনা যায়, তাহলেই পরীক্ষিত করিম বেনজেমার সঙ্গে গড়ে উঠবে নতুন আক্রমণত্রয়ী।

আর তাই, আজারকে বিক্রি করে দেওয়ার চেয়ে তাকে ঘিরেই আশা দেখছে রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ।