গত জানুয়ারিতে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে বরখাস্ত করার পর টুখেলকে নিয়োগ দেয় লন্ডনের ক্লাবটি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সবশেষ আট ম্যাচের পাঁচটিতে হেরে তখন পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে চেলসি। নতুন কোচের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল তাই লিগে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটিকে কক্ষপথে ফেরানো।
সেই চ্যালেঞ্জ তিনি ঠিকই জয় করেছেন। তার কোচিংয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে লিগে চার নম্বরে ফিরেছে চেলসি। এরই মধ্যে উঠে গেছে এফএ কাপের ফাইনালে। আর এখন ২০১২ সালের পর তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে।
মৌসুমের শুরুতে কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে টিমো ভেরনার, কাই হার্ভাটজের মতো খেলোয়াড়দের দলে টানে চেলসি। টুখেলের কোচিংয়ে ডানা মেলতে শুরু করেছেন এই দুই জার্মান। তরুণ ইংলিশ মিডফিল্ডার ম্যাসন মাউন্ট তার খেলার মান নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। সেরা ছন্দে ফিরেছেন ফরাসি মিডফিল্ডার এনগোলো কঁতে।
সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে বুধবার রাতে প্রতিযোগিতার রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের জয়ে একটি করে গোল করেন ভেরনার ও মাউন্ট। পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা কঁতে প্রথম গোলে রাখেন বড় অবদান। টুখেলের কোচিংয়ে ১৮ ম্যাচে কোনো গোল হজম করেনি চেলসি। রিয়ালের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে তাদের জয় ৩-১ গোলে।
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন, কার্লো আনচেলোত্তি ও মার্সেলো লিপ্পির পর চতুর্থ কোচ হিসেবে চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার হাতছানি ছিল জিদানের সামনে। কিন্তু স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পাত্তাই পায়নি রিয়াল।
অন্যদিকে, টুখেল টানা দুই মৌসুমে ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠলেন। গতবার তার কোচিংয়ে ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে হেরেছিল পিএসজি।
প্রথম কোচ হিসেবে টানা দুই মৌসুমে দুই ভিন্ন ক্লাবকে প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে তোলার কীর্তি গড়লেন টুখেল। তাতে শেষ তিন মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো ‘অল-ইংলিশ’ ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। আগামী ২৯ মে তুরস্কের ইস্তানবুলে শিরোপা লড়াইয়ে পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে চেলসি।
দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠায় দারুণ খুশি তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তার দৃষ্টি এখন শিরোপার দিকে।
“আমি খুব খুশি যে, আমরা এমন কিছু করতে পেরেছি। ফুটবলে জীবনযাপন করার সুযোগ পেয়ে, এই প্যাশনটাকে পেশা হিসেবে পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ এই পর্যায়ের ফুটবলে কিছু করতে পেরে।”
“আশা করি, আমরা ভালো একটি স্কোয়াড নিয়ে, ভালো পরিবেশে, ভালো মুহূর্তে ইস্তানবুলে পৌঁছাব। এখনও কাজ শেষ হয়নি...আমরা জয়ের জন্যই ইস্তানবুলে যাব।”
নিজেদের সামর্থ্যে আস্থা রাখার ফল পেয়েছেন, বললেন প্রথমার্ধে দলকে এগিয়ে নেওয়া জার্মান ফরোয়ার্ড ভেরনার।
“আমরা আজ যা করেছি তা অবিশ্বাস্য। প্রতিটি পজিশনে বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া একটি দলের বিপক্ষে আমাদের ছন্দ ধরে রাখা অবিশ্বাস্য ছিল।”