ইউরোপিয়ান শীর্ষ প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে রিয়ালের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে বুধবার রাতের এই ম্যাচে চেলসিকে কখনোই সেভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি জিদানের দল। টিমো ভেরনার ও ম্যাসন মাউন্টের দুই অর্ধের গোলে জয় পায় স্বাগতিকরা।
ঘরের মাঠে ১-১ ড্র করা রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে বিদায় নেয়।
চোটে পড়ে আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৬ মার্চ থেকে দলের বাইরে ছিলেন অধিনায়ক সের্হিও রামোস। ফেরার ম্যাচেই তাকে একাদশে নামানো কতটা যৌক্তিক ছিল?-উঠেছে প্রশ্ন। চোট কাটিয়ে তিন সপ্তাহ পর ফেরা ফেরলঁদ মঁদিকেও শুরুর একাদশে রাখেন কোচ। আর বারবার চোটে পড়া এদেন আজার কদিন আগে ফিরলেও তার পারফরম্যান্স ছিল না মানদণ্ডের কাছাকাছিও।
গত তিন মাসে বুধবারের আগে আর একটি মাত্র ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন আজার। সব মিলিয়ে এই তিন জনকেই শুরুর একাদশে রাখার সিদ্ধান্ত চরম ভুল বলে মনে করছেন অনেকে।
দীর্ঘদিন ম্যাচ না খেলায় হুট করে একাদশে ফিরে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। তবে ম্যাচের গুরুত্ব বিবেচনায় তাদের খেলানো সঠিক ছিল বলেই মনে করেন জিদান।
“আমরা সেমি-ফাইনাল খেললাম এবং খেলোয়াড়রা তৈরি ছিল। তারা প্রস্তুত না থাকলে খেলতে পারত না।”
“খেলোয়াড়দের নিয়ে আমরা সবাই গর্ব করতে পারি। আমরা আমাদের সেরাটা দিয়েই ফাইনাল থেকে এক ধাপ দূরে পৌঁছেছিলাম। চেলসি অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে এবং তাদেরকে অভিনন্দন জানাতেই হবে।”
মাঠের প্রতিটি ভাগেই এদিন ভুগতে দেখা গেছে রিয়ালকে। দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষের রক্ষণে তেমন কোনো ভীতি ছড়াতে পারেনি তারা।
২০১৯ সালে চেলসি থেকে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে রিয়ালে যোগ দেওয়া আজার চেনা আঙিনায় ফিরে নিজেকে খুঁজে পাননি। চোটের কারণে গত দুই মৌসুমে যার অধিকাংশ সময়ই কেটেছে মাঠের বাইরে। তারকা এই ফুটবলারকে ছন্দে ফেরানোর জন্য খেলানোর বিকল্প দেখেন না জিদান।
“এদেনের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়াটা জরুরি আর এজন্য তার নিয়মিত খেলতে হবে। একটু একটু করে আমরা তাকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনব।”
প্রথম লেগের মতো এদিনও ৩-৫-২ ফরমেশনে খেলান জিদান। তবে চোটের কারণে এই ম্যাচে ছিলেন না দানি কারভাহাল ও রাফায়েল ভারানে। ডান দিকে খেলানো হয় ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়রকে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি পারেননি মাঠে প্রভাব ফেলতে।
এখানেও নিজের কৌশলগত সিদ্ধান্তে কোনো গলদ দেখছেন না ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা কিংবদন্তি ফুটবলার জিদান।
“এভাবে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি, তবে আজ আমরা অনেক একক লড়াইয়ে হেরেছি। আমাদের খেলায় কিছু ঘাটতি ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু এটা ছিল চ্যালেঞ্জে ভরা একটা ম্যাচ।”
গত আট বছরে পঞ্চম ফাইনালে ওঠার সুযোগ হাতছাড়া করা ১৩ বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের এখন নজর লা লিগার দিকে। যেখানে শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে তারা পিছিয়ে ২ পয়েন্টে।
৩৪ রাউন্ড শেষে ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আতলেতিকো মাদ্রিদ। বিয়াল ও বার্সেলোনার পয়েন্ট সমান ৭৪ করে, তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে দুইয়ে রিয়াল। আগামী রোববার তাদের প্রতিপক্ষ ৭০ পয়েন্ট নিয়ে চারে থাকা সফরকারী সেভিয়া।