পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালের পথে সিটি

অধিনায়কের দেখানো পথে অনেকটা সময় এগিয়ে থেকে দিক হারাল পিএসজি। দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল ম্যানচেস্টার সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে সাত মিনিটে দুই গোল করে তুলে নিল অসাধারণ এক জয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল পেপ গুয়ার্দিওলার দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2021, 08:53 PM
Updated : 28 April 2021, 09:52 PM

সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে বুধবার রাতে প্রতিপক্ষের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছে সিটি। মার্কিনিয়োসের গোলে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন কেভিন ডে ব্রুইনে। পরে ব্যবধান গড়ে দেন রিয়াদ মাহরেজ।

শেষ ষোলোয় বার্সেলোনা ও কোয়ার্টার-ফাইনালে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখকে হারানোর নায়ক কিলিয়ান এমবাপে এবার করতে পারেননি তেমন কিছু। পিএসজির সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করলেও পাননি সাফল্যের দেখা।

প্রতিপক্ষের মাঠে বল দখলে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে তেমন সুবিধা করতে পারছিল না সিটি। তবে প্রথম গোল হজমের পর সবকিছু বদলে যায়। আর শেষের মিনিট পনের ১০ জন নিয়ে খেলা পিএসজির ওপর চাপ ধরে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলটি।

মাঝমাঠের ছোট্ট ভুলে দ্বিতীয় মিনিটেই বিপদে পড়তে পারতো সিটি। তবে সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে ছুটে ডি-বক্সে ঢুকে দুর্বল শট নিয়ে বসেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার।

এরপর বেশ খানিকটা সময় ধরে টানা আক্রমণ করতে থাকে সিটি, বলের দখল পেতে লড়ছিল পিএসজি। চাপ সামলে ত্রয়োদশ মিনিটে আবারও ভীতি ছড়ায় স্বাগতিকরা। তবে ডি-বক্সে একজনকে কাটিয়ে নেইমারের নেওয়া শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান এদেরসন।

পঞ্চদশ মিনিটে গোলের দেখা পায় লিগ ওয়ানের শিরোপাধারীরা। ডান দিক থেকে আনহেল দি মারিয়ার দারুণ কর্নারে লাফিয়ে কোনাকুনি হেডে দলকে এগিয়ে নেন মার্কিনিয়োস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের শেষ ১২ ম্যাচে এই নিয়ে পাঁচ গোল করলেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার।

প্রতিপক্ষের বিপজ্জনক সব আক্রমণ সামলে পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল সিটি; কিন্তু মিলছিল না সুযোগ। ২১তম মিনিটে বের্নার্দো সিলভার দুরূহ প্রচেষ্টা পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি পিএসজি গোলরক্ষককে। খানিক পর দি মারিয়ার দারুণ পাস ডি-বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন নেইমার; নষ্ট হয় ব্যবধান দ্বিগুণের সুযোগ।

৪২তম মিনিটে প্রথম নিশ্চিত সুযোগ পায় সিটি। কিন্তু ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন ফিল ফোডেন। পাঞ্চ করে ফেরান কেইলর নাভাস।

বিরতির পর ম্যাচের গতি কিছুটা কমে আসে। এর মাঝেই ৬৪তম মিনিটে পিএসজিকে হতবাক করে সমতায় ফেরে সিটি। ছোট কর্নারে বল ধরে বাঁ দিক থেকে দারুণ এক ক্রস বাড়ান ডে ব্রুইনে। বল সবার ওপর দিয়ে গিয়ে এক ড্রপে খানিকটা বাঁক নিয়ে দূরের পোস্ট ঘেঁষে জালে জড়ায়। বলে তেমন গতি ছিল না, তারপরও জায়গা থেকে নড়ার সুযোগ পাননি নাভাস। যেন বলের গতি-প্রকৃতি বুঝতেই পারেননি তিনি।

৭১তম মিনিটে পিছিয়ে পড়ে পিএসজি। মাহরেজের ফ্রি কিকে বল লাফিয়ে ওঠা রক্ষণ প্রাচীরে কিম্পেম্বে ও লেয়ান্দ্রো পারেদেসের মাঝ দিয়ে ঠিকানা খুঁজে পায়।

পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে উঠবে কী, ছয় মিনিট পর ১০ জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। ইলকাই গিনদোয়ানকে পেছন থেকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন সেনেগালের মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গেয়ি।

এক জন কম নিয়ে বাকি সময়ে আর তেমন কিছু করতে পারেনি তারা। সিটি দুবার স্বাগতিকদের ডি-বক্সে ভীতি ছড়ালেও বড় কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে সিটির জয়রথ হলো আরও দীর্ঘ, টানা ১৮ ম্যাচ! চ্যালেঞ্জের বাকিটা এবার ঘরের মাঠে। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের ওঠার স্বপ্নে ফিরতি লেগের লড়াইয়ে নামবে তারা।

অ্যাওয়ে ম্যাচে দারুণ ছন্দে আছে পিএসজিও। বার্সেলোনা ও বায়ার্নকে ছিটকে দেওয়ার মূল কাজটা কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠেই সেরেছিল গতবারের রানার্সআপরা! সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগ আগামী মঙ্গলবার, ইতিহাদ স্টেডিয়ামে।