রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে গুঞ্জন, ভাবনা নেই জিদানের

ইউরোপিয়ান সুপার লিগে নাম লেখানোয় রিয়াল মাদ্রিদ ও চেলসির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা জেগেছিল, তা কেটে গেছে। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নতুন গুঞ্জন, আলোচিত এই লিগ থেকে সরে না দাঁড়ানোর খেসারত হয়তো মাঠে দিতে হবে রিয়ালকে। রেফারির পক্ষপাতমূলক আচরণের শিকার হতে পারে তারা। তবে সেই ভাবনায় কাতর নন জিনেদিন জিদান। রিয়াল মাদ্রিদের কোচের ভাবনাজুড়ে কেবল মাঠের প্রস্তুতি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2021, 01:52 PM
Updated : 26 April 2021, 02:56 PM

গত রোববার সুপার লিগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ফুটবল বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। একযোগে ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ের ১২টি দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বিকল্প হিসেবে প্রস্তাবিত ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। তুমুল সমালোচনা ও সমর্থকদের প্রতিবাদের মুখে অবশ্য দুই দিনের মধ্যে একে একে সরে দাঁড়ায় চেলসিসহ ইংল্যান্ডের ছয় দলের সবকটি। পরদিন সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় স্পেনের আতলেতিকো মাদ্রিদ ও ইতালির ইন্টার মিলান।

শুরু থেকেই উয়েফার ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে কড়া ভাষায় বলা হচ্ছিল, সুপার লিগে খেললেই পেতে হবে অন্য সব প্রতিযোগিতা থেকে নিষেধাজ্ঞা। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে ওঠা তিন দল ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি ও রিয়াল মাদ্রিদকে এবারই নিষিদ্ধ করার আভাস মিলছিল। তবে বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে বদলে যায় সিদ্ধান্ত।

তারপরও সঙ্কটের সমাধান পুরোপুরি হয়নি। রিয়ালসহ চার দল (বাকি তিন দল বার্সেলোনা, ইউভেন্তুস ও এসি মিলান) এখনও রয়ে গেছে সুপার লিগে। তাদের জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে বলে দুদিন আগেও হুমকি দেন উয়েফা প্রধান আলেকসান্দের চেফেরিন।   

এসবের ভিড়ে স্প্যানিশ গণমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে আরেকটি বিষয়, বর্তমানের জটিল পরিস্থিতিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে রেফারি প্রভাবিত হয়ে রিয়ালের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত দেবে না তো! 

ফাইনালে ওঠার দুই লেগের লড়াইয়ের প্রথম ধাপে মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে রিয়াল ও চেলসি। রিয়ালের মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত একটায়। আগের দিন জিদানের সংবাদ সম্মেলনেও উঠল রেফারিংয়ের প্রসঙ্গ।

জবাবে ফরাসি কোচ অবশ্য সবসময়ের মতোই সেসব পাশ কাটিয়ে গেছেন। জানিয়ে দেন, সেসব নিয়ে ভাবছেন না তিনি।

“আমাদের কাছে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, মাঠে কী হয়। রেফারি তার কাজ করবে এবং আমরা কেবল ফুটবল খেলা নিয়েই ভাবছি। (গত কদিনে বা এই ম্যাচ ঘিরে) যা কিছু বলা হচ্ছে, সেসব নিয়ে যদি ভাবতে শুরু করি, যদি চিন্তা করি এসব আমাদের বিপক্ষে যাবে এবং আমাদের শাস্তি পেতে হবে, তাহলে আমাদের কাজে আমরা গড়বড় করে ফেলব।”

“আমরা এই ম্যাচে ৯০ মিনিট লড়াই করব এবং বাকি কোনো বিষয়ে জড়াব না।”

গত শুক্রবার বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চেফেরিন আবারও বলেন, সুপার লিগে জড়িত থাকলে ওই দলগুলোকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে দেওয়া হবে না।

চেফেরিনের এই হুমকি মূলত আগামী মৌসুমকে ঘিরে। সুপার লিগ আপাতত মৃতপ্রায়। তবে, আবারও কোনো নাটকীয়তায় এটি আলোর মুখ দেখলে এর দলগুলোর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ বর্তমানের ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই তারা সুপার লিগ গড়তে চাচ্ছে।

তবে আগামী মৌসুমে যদি সুপার লিগ মাঠে না গড়ায়, আবার এটি থেকে অবশিষ্ট দলগুলো যদি সরে না দাঁড়ায়, তাহলে আগামী মৌসুমে তারা কোথায় খেলবে? চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার কি সুযোগ পাবে?

সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন অবাক করে জিদানকে। তার মতে, রিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে থাকবে না, এমন ভাবনাই অযৌক্তিক।

“অনেক কিছু বলা হচ্ছে। এর মাঝে আমরা শুধু একটা কাজই করতে পারি, সেটা হলো আগামীকালকের (মঙ্গলবার) ম্যাচে মনোযোগ দেওয়া। বাকি কোনো বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, তাই এসব কথা চলতেই থাকবে। আমার মনে হয়, সবাই অবশ্যই আগামী মৌসুমে রিয়ালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দেখতে চায়।”