সুপার লিগে খেললেই নিষিদ্ধ ‘বার্সা-রিয়ালসহ ১১ ক্লাব’

মাঝে কয়েক মাসের বিরতির পর আবারও জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়েছে প্রস্তাবিত টুর্নামেন্ট ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ’ ঘিরে। খুব শিগগিরই নাকি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে যাচ্ছে ‘বিদ্রোহী’ এই টুর্নামেন্ট শুরুর। তারই প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা উয়েফা আবারও দিয়েছে কড়া হুশিয়ারি, এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিষিদ্ধ করা হবে ওইসব ক্লাবকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2021, 06:17 PM
Updated : 18 April 2021, 06:22 PM

নিজস্ব সুত্রের বরাত দিয়ে রোববার ইতালির পত্রিকা লা গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্ত এক প্রতিবেদনে জানায়, সুপার লিগে অংশ নিতে যাওয়া ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি ইউরোর মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে উয়েফা। ১১টি ক্লাবের নামও প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সেগুলো হলো-রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, আতলেতিকো মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম হটস্পার, চেলসি, ইউভেন্তুস, ইন্টার মিলান ও এসি মিলান।

উয়েফা নিজেদের ওয়েবসাইটে রোববার এক বিবৃতিতে এই সব ক্লাবকে নিষিদ্ধ করার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দেয়।

“আমরা আবারও বলতে চাই যে, আমরা…ফিফাসহ এবং আমাদের সকল সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধ থেকে এই বিধ্বংসী প্রকল্প বন্ধ করতে কাজ করব। গুটি কয়েক ক্লাব শুধু তাদের নিজেদের স্বার্থে এই পরিকল্পনা করেছে, বিশেষ করে যখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন আরও বেশি সামাজিক সংহতির প্রয়োজন।”

“ক্রীড়াগত ও আইনিভাবে যত কিছু করা সম্ভব, এই প্রকল্প প্রতিহত করতে তার সবকিছুই করব আমরা। উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ও খেলাধুলার মানের ওপর ফুটবল গড়ে উঠেছে; অন্য কোনোভাবেই তা হতে পারে না।”

কয়েক দশকের প্রতিষ্ঠিত বর্তমানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামে পরিচিত ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ‘ইউরোপিয়ান সুপার লিগ’ নামে নতুন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছিল অনেক বছর ধরে। সেটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে গত দুই বছর থেকে খবর আসতে শুরু করে।

২০১৮ সালের নভেম্বরে জার্মান ম্যাগাজিন ডের স্পিগেল ফাঁস হওয়া কিছু তথ্য-উপাত্তের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, ইউরোপের বড় ক্লাবগুলো নিয়ে একটি সুপার লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে রিয়াল মাদ্রিদ।

বার্সেলোনা, রিয়াল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইউভেন্তুসসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি বড় দল ‘বিদ্রোহী’ এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে চুক্তিভুক্ত হয়েছে বলে আগেই শোনা গিয়েছিল। যদিও নিশ্চিত কোনো তথ্য আগে কখনোই সামনে আসেনি।

অভিযোগের আঙুল ওঠা ক্লাবগুলোর বেশিরভাগ নিজেদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি বলে দাবি করে আসছিল। রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেস অবশ্য মাঝে ‘ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতায় বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

গত অক্টোবরে বার্সেলোনার সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর জোজেপ মারিয়া সুপার লিগ নিয়ে চলা গুঞ্জনে নতুন মাত্রা যোগ করেন। ইউরোপিয়ান সুপার লিগে যোগ দিতে তার ক্লাব রাজি হয়েছে বলে তখন জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় যা তুমুল সমালোচনার জন্ম দেয়।

এরপর গত জানুয়ারিতে, ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা (ফিফা) এর বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান জানায়। পরিষ্কারভাবে সংস্থাটি বলে, এতে অংশ নিলে বিশ্বকাপসহ ফিফা আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতায় ওই দলের খেলোয়াড় খেলতে পারবে না। ফিফার ওই হুমকির পর বেশ কিছুদিন ‘সুপার লিগ’ নিয়ে তেমন কোনো খবর শোনা যায়নি। তবে সম্প্রতি আবারও তা শুরু হয়েছে। এরপরই নিজের কঠোর অবস্থানের কথা মনে করিয়ে দিল উয়েফা।