এক বিবৃতিতে গত সোমবার সিটি জানায়, চুক্তির মেয়াদ শেষে চলতি মৌসুমের পর ফ্রি ট্রান্সফারে বিদায় নিতে যাচ্ছেন আগুয়েরো। এরই সঙ্গে শেষ হবে সিটিতে তার ১০ বছরের সাফল্যমণ্ডিত পথচলা।
২০১১ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদ থেকে সিটিতে যোগ দেওয়ার পর ক্লাবটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৮৪ ম্যাচে রেকর্ড ২৫৭ গোল করেছেন আগুয়েরো। জিতেছেন চারটি প্রিমিয়ার লিগ, একটি এফএ কাপ ও পাঁচটি লিগ কাপ।
বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। সব মিলিয়ে প্রিমিয়ার লিগের গোলদাতার তালিকায় ১৮১ গোল নিয়ে আছেন চতুর্থ স্থানে।
এমন একজন চলে গেলে যেকোনো কোচের কাছেই তার অভাব বোধ হওয়াটা স্বাভাবিক। সম্প্রতি স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তেমনটাই বললেন গুয়ার্দিওলা।
“সে একজন মহাতারকা। গত কয়েক বছর ধরে এই ক্লাবে আমার দেখা সেরা স্ট্রাইকার সে…আমাদের সমর্থকদের কাছে, আমাদের খেলোয়াড়দের কাছে যারা তার সতীর্থ, বা কোচ যারা তার সঙ্গে কাজ করেছে, সবার কাছেই তার শূন্যস্থান অপূরণীয়।”
সিটির জার্সিতে আগুয়েরোর সবচেয়ে স্মরণীয় গোল হয়ে থাকবে শুরুর দিকের একটি। ২০১১-১২ প্রিমিয়ার লিগ আসরের শেষ দিনে কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে যোগ করা সময়ে গোল করে জিতিয়েছিলেন দলকে। ওই গোলেই ৪৪ বছরে প্রথম লিগ শিরোপা জিতেছিল সিটি।
সেই সময় দলটির কোচ ছিলেন রবের্তো মানচিনি। ইতালিয়ান এই কোচই তাকে এনেছিলেন সিটিতে। তার মতে, আগুয়েরো এখনও বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন।
“আমি তাকে সিটিতে এনেছিলাম এবং সে এখানে ১০ বছর থাকায় এবং বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড গড়ায় আমি খুশি। আমি মনে করি, সে এখনও বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন, তার মতো ফুটবলার কমই দেখেছি। মানুষ হিসেবে সে অসাধারণ।”
“আমি তাকে অনেক পছন্দ করি এবং তার জন্য আমার শুভকামনা। কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে তার সেই গোলে প্রিমিয়ার লিগ জয় সবসময় স্বরণীয় হয়ে থাকবে।”
চোট ও অসুস্থতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে অবশ্য খুব একটা অবদান রাখতে পারছেন না আগুয়েরো। দলের হয়ে এখন পর্যন্ত মাঠে নেমেছেন কেবল ১৪ ম্যাচে, গোল করেছেন তিনটি। তবে মৌসুমের বাকি সময়ে তার কাছ থেকে এখনও অনেক গোল পাওয়ার আশা করছেন গুয়ার্দিওলা।
“তার মতো এমন বিশেষ মানসম্পন্ন খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া ভার…গোলের জন্য তার ক্ষুধা, খেলার মান…নিখুঁত ফিনিশিং। বিশেষ করে যখন সে আগ্রাসী হয়ে ওঠে…তখন সে বাড়তি শক্তি পায় এবং এক, দুই বা তিনজনকে পেছনে ফেলে বক্সের দিকে ৫-১০ মিটার এগিয়ে গোল করতে পারে।”
আগুয়েরো দলকে অনন্য পর্যায়ে নিতে সহায়তা করেছে বলে মনে করেন বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনার সাবেক এই কোচ।
“যখন সে এখানে এসেছিল তখন ক্লাব একটা পর্যায়ে ছিল এবং ক্লাবকে আরও উপরের পর্যায়ে নিতে সে অবদান রেখেছে…এজন্য ক্লাবের সবাই এবং সমর্থকরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।”