শিরোপা খরা কাটল না বাংলাদেশের

শুরুতেই বাংলাদেশের রক্ষণের ‍দুর্বলতা বেরিয়ে পড়ল। প্রথমার্ধে হজম করল দুই গোল। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ত্রিদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেপালের কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্ন গুঁড়িয়ে গেছে জেমি ডের দলের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2021, 01:05 PM
Updated : 29 March 2021, 02:05 PM

কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে সোমবার ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। বিরতির পর একটি গোল শোধ করে তারা।

২০০৩ সালে সবশেষ সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী বাংলাদেশের সামনে ছিল দেড় যুগের শিরোপা খরা কাটানোর সুযোগ। কিন্তু ফাইনালের নিষ্প্রাণ পারফরম্যান্সে সে খরা হল আরও দীর্ঘ।

নেপালের এই প্রতিযোগিতায় এটিই বাংলাদেশের প্রথম হার। কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে আত্মঘাতী গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতে শুভসূচনা করা ডের দল দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল।

শুরু থেকেই বাংলাদেশকে চেপে ধরে নেপাল। সপ্তম মিনিটে বক্সে নেপালের সংযোগ রায় বল পাওয়ার আগেই দ্রুত বিপদমুক্ত করেন মাঝমাঠ ছেড়ে নিচে নেমে আসা জামাল ভূইয়া।

বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ বাড়ানো নেপালের দ্বাদশ মিনিটের আক্রমণ ব্যর্থ করে দেন সাদ উদ্দিন। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস দূরের পোস্টে থাকা ত্রিদেব গুরংয়ের কাছে পৌঁছানোর আগেই দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ক্লিয়ার করেন সাদ।

সপ্তদশ মিনিটে ক্রসে অনন্ত তামাংয়ের হেড গ্লাভসের টোকায় কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন আনিসুর রহমান জিকো। ওই কর্নার থেকেই এগিয়ে যায় নেপাল। রাকিব হোসেন হেডে কর্নার ফেরালেও বল যায় বক্সে ফাঁকায় থাকা মিডফিল্ডার সংযোগের পায়ে। তার জোরালো শট মানিক মোল্লার পায়ের ফাঁক দিয়ে জাল খুঁজে নেয়।

২৯তম মিনিটে অঞ্জন বিস্তার চিপ শট জিকোকে ফাঁকি দিলেও ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

৩৬তম মিনিটে জামালের ফ্রি কিকে মেহেদী হাসানের হেড উপরের জাল কাঁপায়। প্রথমার্ধে আর কোনো আক্রমণ শানাতে পারেনি ২০০৫ সালে সবশেষ সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা বাংলাদেশ।

৪১তম মিনিটে গোছালো আক্রমণ থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেপাল। রনজিত ধিমালের পাস পেয়ে সংযোগ নিখুঁত টোকায় বল বাড়ান বিশাল রায়ের উদ্দেশে। ডান পায়ের নিখুঁত শটে অনায়াসে লক্ষ্যভেদ করেন এই মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তিনটি পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ। সুমন রেজা, রিমন হোসেন ও মেহেদী হাসান রয়েলকে তুলে টুটুল হোসেন বাদশা, ইয়াসিন আরাফাত ও মাহবুবুর রহমান সুফিলকে নামান। রিমন ও রয়েল মাঠ ছাড়েন চোট নিয়ে।

৬৬তম মিনিটে ইয়াসিনের দূরপাল্লার শট দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৮২তম মিনিটে মানিক হোসেন মোল্লাকে তুলে মাশুক মিয়া জনিকে নামান কোচ। এরপরই জামালের কর্নারে লাফিয়ে সুফিল হেডে লক্ষ্যভেদ করলে বাংলাদেশ পায় ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ। প্রতিযোগিতায় এই প্রথম বাংলাদেশের কেউ পেল গোলের দেখা!

৮৭তম মিনিটে জামালের ফ্রি কিকে বসুন্ধরা কিংসের বদলি ফরোয়ার্ড সুফিলের হেড অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে মেজাজ হারিয়ে রেফারির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন অধিনায়ক জামাল।

এই নিয়ে শেষ চার ম্যাচে এই প্রথম নেপালের কাছে হারল বাংলাদেশ। গত নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা দুই প্রীতি ম্যাচের সিরিজের প্রথমটিতে ২-০ গোলে জিতেছিল জামালরা। পরের ম্যাচ হয়েছিল গোলশূন্য ড্র।

টানা তিন ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারের তেতো স্বাদ, সেটিই ফাইনালে!