রেকর্ডের রাতে মেসির ২, বার্সার ৬

রেকর্ড ছোঁয়ার উপলক্ষ জোড়া গোলে রাঙিয়েছিলেন। নতুন ইতিহাস গড়ার ম্যাচেও একইভাবে আলো ছড়ালেন লিওনেল মেসি। অধিনায়কের বিশেষ ম্যাচটিকে আরও ঝলমলে করে তুলতে রিয়াল সোসিয়েদাদের জালে গোল উৎসব করল বার্সেলোনা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2021, 09:54 PM
Updated : 21 March 2021, 10:33 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচে ৬-১ গোলে জিতেছে রোনাল্ড কুমানের দল। অঁতোয়ান গ্রিজমান দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর বিরতির আগে-পরে ব্যবধান বাড়ান সের্জিনো দেস্ত। পরে মেসির দুই গোলের মাঝে একটি করেন উসমান দেম্বেলে।

গত সোমবার ওয়েস্কার বিপক্ষে ৪-১ গোলে জয়ের ম্যাচ দিয়ে ক্লাবের ইতিহাসে চাভি এরনান্দেসের সর্বোচ্চ ম্যাচের রেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন মেসি। ৭৬৮ ম্যাচ খেলে এবার রেকর্ডটি নিজের করে নিলেন তিনি।

আসরে বাজে শুরুর পর ছন্দে ফেরা বার্সেলোনা এই নিয়ে টানা ১৮ ম্যাচ অপরাজিত রইলো। গত ৫ ডিসেম্বরের পর আর হারেনি তারা। এই সময়ে তাদের জয় ১৫টি, ড্র তিনটি।

দারুণ এই জয়ে লিগ টেবিলে রিয়াল মাদ্রিদকে টপকে আবারও দুইয়ে ফিরল বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে ২ পয়েন্ট এগিয়ে আর আতলেতিকো মাদ্রিদের থেকে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে কাতালান দলটি।

ম্যাচের শুরু থেকে বার্সেলোনা বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করলেও তাদের আক্রমণে ছিল না সেই ধার। পাল্টা আক্রমণে মনোযোগী সোসিয়েদাদও পারছিল না ভীতি ছড়াতে।

২৪তম মিনিটে প্রথম সুযোগটি পায় স্বাগতিকরা। সাইডলাইনে ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের থেকে বল কেড়ে বাঁ দিক দিয়ে দ্রুত ডি-বক্সে ঢুকে অস্কার মিনগেসাকে কাটিয়ে শট নেন আলেকসান্দের ইসাক। পা দিয়ে ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।

৩৬তম মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলে গোল খেতে বসেছিল সোসিয়েদাদ। সের্জিনো দেস্তের বিপজ্জনক ক্রস ধরতে গিয়ে পারেননি আলেক্স রেমিরো, বল তার হাতে ড্রপ খেয়ে ক্রসবারে লাগে।

পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। আক্রমণের উৎস দারুণ ছন্দে থাকা মেসি। তার পাস ডি-বক্সে বাঁ দিকে পেয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ান জর্দি আলবা। তাতে দেম্বেলের টোকা রেমিরো ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। আলগা বল জোরালো শটে জালে পাঠান ‘বার্থডে বয়’ গ্রিজমান।

৪৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দেস্ত। মেসির রক্ষণচেরা দারুণ পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে কোনাকুনি শটে লা লিগায় নিজের প্রথম গোলটি করেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ ডিফেন্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে কিছুটা সৌভাগ্যসূচক গোলে ম্যাচের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সেলোনা। বাঁ দিক দিয়ে দারুণ গতিতে ডি-বক্সে ঢুকে এবং দুই ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বাইলাইন থেকে ছয় গজ বক্সে ক্রস বাড়ান আলবা। এক ডিফেন্ডারের ক্লিয়ার করার প্রচেষ্টায় বল দেস্তের পায়ে লেগে ঠিকানা খুঁজে পায়।

তিন মিনিট পর জালের দেখা পান মেসি। মাঝমাঠ থেকে সের্হিও বুসকেতস উঁচু করে বল বাড়ান। আর দুই জনের মধ্যে দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের টোকায় গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে স্কোরলাইন ৪-০ করেন আর্জেন্টাইন তারকা।

শুরু থেকে দারুণ খেলা দেম্বেলে গোলের দেখা পান ৭১তম মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে ইলাইশের বাড়ানো বল ধরে কিছুটা এগিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।

ছয় মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে নিজেদের একমাত্র সান্ত্বনাসূচক গোলটি করেন তরুণ ফরোয়ার্ড আন্দের বারেনিতিয়া।

নির্ধারিত সময় শেষের আগের মিনিটে অসাধারণ পাসিং ফুটবলে গড়া আক্রমণে সোসিয়েদাদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মেসি। আলবার পাস ফাঁকায় পেয়ে পোস্ট ঘেঁষে বল ঠিকানায় পাঠান রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার।

আরেকটি পিচিচি ট্রফির পথে ছুটে চলা মেসির গোল হলো ২৩টি। বার্সেলোনার জার্সিতে ৭৬৮ ম্যাচে তার মোট গোল এখন ৬৬৩।

দিনের আরেক ম্যাচে লুইস সুয়ারেসের একমাত্র গোলে আলাভেসকে হারায় আতলেতিকো। ২৮ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা।

সমান ম্যাচে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৬২। ৬০ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে নেমে গেছে রিয়াল।