টানা খেলার স্বস্তি-অস্বস্তিকে সঙ্গী করে আশাবাদী ডে

সবশেষ নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগে ভাবনার জায়গা ছিল খেলোয়াড়দের ফিটনেস। করোনাভাইরাসের কারণে তখন ফুটবলারদের সঙ্গে মাঠের বিচ্ছেদ ছিল লম্বা সময়ের। এবার নেপাল সফরের আগে টানা খেলার মধ্যে আছেন খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডের তাই মনে হচ্ছে, আগের চেয়ে বর্তমান দল তুলনামূলক শক্তিশালী। ফুটবলারদের টানা খেলার ক্লান্তি নিয়ে কিছুটা দুর্ভাবনাও অবশ্য আছে তার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2021, 02:59 PM
Updated : 16 March 2021, 02:59 PM

করোনাভাইরাসের থাবায় থমকে থাকা ফুটবল গত নভেম্বরে মাঠে ফেরে নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। সেই শুরুর পর কেবলই ছুটে চলা, ফুটবলারদের দম ফেলার ফুরসত মেলেনি তেমন একটা।

নেপালের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের জয়ে শুরু, পরের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র। এরপর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দোহায় ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে কাতারের বিপক্ষে ম্যাচ।

২২ ডিসেম্বর শুরু হয় ফেডারেশন কাপ। ১৩ জানুয়ারিতে মাঠে গড়ায় প্রিমিয়ার লিগ। প্রথম ধাপের ১২ রাউন্ডের খেলা শেষে গত ৭ মার্চ বিরতি পড়ে লিগের; সেটাও বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের কারণে। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৫ মার্চের ম্যাচটি না হওয়ায় দল যাচ্ছে নেপালে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে খেলতে। আগামী মঙ্গলবার শুরু হবে এই প্রতিযোগিতা।

খেলার মধ্যে থাকলে যেমন ছন্দে থাকা যায়, তেমনি টানা খেলার শারীরিক ও মানসিক ধকলও সঙ্গী হয়। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশেন মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে ডে দল নিয়ে স্বস্তির পাশাপাশি দুর্ভাবনার কথাও তুলে ধরলেন।

“ দলকে শারীরিকভাবে আরও শক্তিশালী মনে হচ্ছে। অতীতে যেমন ছিল, তার চেয়ে শক্তিশালী মনে হচ্ছে। স্টুয়ার্ট ওয়াটকিসও (সহকারী কোচ) বলেছে, নতুনরা খুব ভালো করছে অনুশীলনে। তাদের অনেক প্রাণশক্তি আছে। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে এই প্রাণচাঞ্চল্যের ধারাবাহিকতা থাকবে।”

“গত নভেম্বর থেকে ছেলেরা খেলছে। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছে। লিগে খেলেছে। অবশ্যই তারা আগের চেয়ে ফিট। এখন মার্চ মাস চলছে। এখন ফিটনেস নিয়ে আমাদের ভাবনা নেই। ভাবছি খেলোয়াড়দের ক্লান্তি নিয়ে। সামনের ৭ দিন আমাদের লক্ষ্য, দলকে সেরা অবস্থায় পাওয়ার জন্য প্রতিটি খেলোয়াড়কে যেভাবে তৈরি করা দরকার, সেটা করা।”

সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিসও কণ্ঠেও শোনা গেল ক্লান্তি নিয়ে শঙ্কার কথা। তবে ফুটবলারদের চাঙা রাখার চ্যালেঞ্জটা তারা নিচ্ছেন।

“আগেরবার খেলোয়াড়রা ৮ মাস নিস্ক্রিয় ছিল করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায়। সেসময় খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল দিকের চেয়ে ফিটনেসের প্রতি আমাদের মনোযোগ দিতে হয়েছিল। এবারের নেপাল সফর ভিন্ন; খেলোয়াড়রা অনেক অনেক ফুটবল খেলেছে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে তাদের জন্য ক্লান্তি পেয়ে না বসে।’

“ছেলেরা কয়েকটা দিন অবসর পেয়েছে, কিন্তু এখনও টানা খেলার ক্লান্তি তাদের মধ্যে রয়েছে। এটা আমার এবং জেমির জন্য ভিন্ন রকম চ্যালেঞ্জ। কদিনের মধ্যে আমরা নেপালে যাব। আশা করি সবাই খেলার জন্য ফিট থাকবে।”

সবশেষ নেপাল সফরের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর হয়নি ডে ও বাংলাদেশ দলের। সোনার পদক জয়ের আশা নিয়ে ২০১৯ দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল দল। সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচুতে বলে নেপালি গিয়ে ভুগেছিল দল। এবারও একই সমস্যায় পড়তে হবে। তবু আশার ছবি দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ কোচ।

“নেপালে উচ্চতা একটা সমস্যা হবে। গত এসএ গেমসের সময় আমরা এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। আপনারাও দেখেছিলেন, সেবার নেপাল-ভুটান ফাইনালে খেলেছিল। দুটো দলই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচুতে খেলতে অভ্যস্ত। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের সেখানে যেতে হবে এবং আমরা যেটা করতে পারি, সেটা সর্বোচ্চভাবে করতে হবে। আশা করি দুই ম্যাচেই আমরা ভালো করতে পারব।”

২৩ মার্চ কিরগিজস্তানে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ত্রিদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ। ২৭ মার্চ পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ নেপাল।