এসি মিলানের ‘সান্তা ক্লজ’ ইব্রা

গত মৌসুমে এই সময়ে ধুঁকছিল এসি মিলান। একের পর এক ম্যাচে পয়েন্ট হারাচ্ছিল সেরি আর দলটি। জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ ফেরার পর যেন বদলে যায় তারা। সুইডিশ ফরোয়ার্ডের উপস্থিতিতে হয়ে উঠে অদম্য। এবার তো রয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। মিলানে নিজের প্রভাব, অবদান নিয়ে মজা করেই বললেন, সান্তা ক্লজ হয়ে তিনি দলের জন্য উপহার নিয়ে এসেছেন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2020, 02:26 PM
Updated : 27 Dec 2020, 02:47 PM

গত জানুয়ারির দলবদলে দ্বিতীয় মেয়াদে মিলানে ফেরেন এই ফরোয়ার্ড। এর পর থেকে দলটি খেলছে দাপুটে ফুটবল। এবারের সেরি আয় ১৪ ম্যাচে ১০ জয় ও চার ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে তারা। এই পর্যায়ে গত আসরে তাদের অর্জন ছিল এর ঠিক অর্ধেক পয়েন্ট।

মহামারীকালে আবার ফুটবল শুরুর পর থেকে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের একমাত্র অপরাজিত দল সবশেষ ২০১৩-১৪ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা এই মিলান।

সাতবারের ইউরোপ সেরা ক্লাবটিতে ৩৯ বছর বয়সী ইব্রাহিমোভিচ আছেন দারুণ ছন্দে। চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ার আগে চলতি লিগে ছয় ম্যাচে করেছেন ১০ গোল। তবে, মিলানে তার দ্বিতীয় মেয়াদের সময়ের একটা পরিসংখ্যান বেশ অবাক করার; তাকে নিয়ে দলটি যত ম্যাচ জিতেছে (৬২.৫ শতাংশ) এর চেয়ে বেশি জিতেছে তাকে ছাড়া (৭২.৭ শতাংশ)।

বড় দিনের ছুটিতে স্পোর্তউইককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্যারিয়ারের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন বার্সেলোনা, পিএসজি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইন্টার মিলানের সাবেক ফরোয়ার্ড ইব্রাহিমোভিচ। সেখানেই মজা করে নিজেকে মিলানের সান্তা ক্লজ দাবি করেন তিনি।

“বড়দিনে আমি নিজের জন্য কিছুই চাই না। আমি সান্তা ক্লজ। আমার ২৭ সন্তানের জন্য আমি উপহার আনি। সন্তানদের দুই জন আছে সুইডেনে, বাকি ২৫জন আমার মিলান সতীর্থ।”

“এ বছর আমরা যা করেছি এবং করছি, এ জন্যে আমরা খুব খুশি। আমরা খুব কম ম্যাচই হেরেছি। আমি জানি না, এটা আমার জন্যে কি-না, তবে আমি কিছু করেছি, দলে কিছু যোগ করেছি।”

গোলের পর এসি মিলান ফরোয়ার্ড জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের উদযাপন।

ক্যারিয়ারে অনেক ক্লাবের হয়ে খেললেও মিলানেই তিনি সবচেয়ে ভালো থাকেন ও আছেন বলে জানান ইব্রাহিমোভিচ।

“আমি অনেক ক্লাবে খেলেছি এবং সব ক্লাবের প্রতিই আমার শ্রদ্ধা আছে, দারুণ সব স্মৃতি রয়েছে। তবে মিলানেই আমি সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করি।”

 “প্রতিদিন সকালে আমি মিলানেল্লোয় (মিলানের অনুশীলন মাঠ) যাই এবং কখনোই বাড়ি ফেরার তাড়না অনুভব করি না। মনে হয় যেন, বাড়িতেই তো আছি। ২০১০ সালে প্রথম যখন মিলানে এসেছিলাম তখনই এমন অনুভূতি হয়েছিল।”

চারটি ভিন্ন দেশের বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে মোট ১১টি লিগ শিরোপা জিতেছেন ইব্রাহিমোভিচ। এ বছরসহ মোট ১২ বার হয়েছেন সুইডেনের বর্ষসেরা ফুটবলার। ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে ২০১৩ সালে হয়েছিলেন চতুর্থ।

দেশের ফুটবলে ১২ বারের বর্ষসেরার পুরস্কারের বিনিময়ে একটি ব্যালন ডি’অর চান?-জবাবে ‘না’ বলে দেন ইব্রাহিমোভিচ। কারণটাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

“আমি অনেক খেলোয়াড় দেখেছি যারা বিশ্বকাপ, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এমনকি ব্যালন ডি’অর জিতেছে। অসাধারণ একটা বছর কাটাতে দেখেছি, এরপর তারা হারিয়ে গেছে।”

“কিন্তু আমি গত ২৫ বছর ধরে ফুটবলে এভাবেই আছি। সবসময়ই শীর্ষ সারিতে। এটা বড় পার্থক্য।”

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সিনিয়র ফুটবলে নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ে ধরে রাখার রহস্য জানালেন ইব্রাহিমোভিচ।

“জেতাই আমার নেশা… এটা ব্যাখ্যা করা কঠিন কিন্তু, যখন মাঠে থাকি, মনে হয় আমাকে জিততেই হবে। অনুশীলনে, প্রস্তুতি ম্যাচে আমার জয়ের হার ৯৫ শতাংশ। এটা মিথ্যে নয়।”