ঘুরে দাঁড়ানো রিয়ালের চারে ৪

আথলেতিক বিলবাওয়ের আশা জাগানিয়া শুরুর পর একটি লাল কার্ডের ঘটনায় যেন পাল্টে গেল সব। পাল্টা চাপ বাড়িয়ে এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। হার না মানা মানসিকতায় এরপরও ম্যাচে ফিরেছিল বিলবাও; কিন্তু লিগ চ্যাম্পিনদের আটকাতে পারেনি তারা। দারুণ এক জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়াল সোসিয়েদাদকে স্পর্শ করেছে জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2020, 10:54 PM
Updated : 15 Dec 2020, 11:28 PM

আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে কাসেমিরোকে ছাড়া খেলতে নামা রিয়াল। টনি ক্রসের গোলে তারা এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টানেন আন্দের কাপা। স্বাগতিকদের শেষ দুটি গোল করেন করিম বেনজেমা।

একের পর এক হোঁচটে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া রিয়াল ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছে। সব প্রতিযোগিতা মিলে এই নিয়ে শেষ ১০ দিনে চার ম্যাচে শতভাগ সাফল্য পেল তারা। এই সময়ে তারা গোল করেছে ৮টি, হজম করেছে একটি।

তীব্র সমালোচনার মুখে দারুণ দুই জয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা রিয়ালের বিপক্ষে বিলবাওয়ের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। তবে, চতুর্দশ মিনিটে রাউল গার্সিয়াকে হারিয়ে চরম ধাক্কাটা খায় তারা।

প্রথম চার মিনিটে দুবার প্রতিপক্ষের শক্তিশালী রক্ষণ ভেঙে ভীতি ছড়ায় বিলবাও। ত্রয়োদশ মিনিটে তো এগিয়েই যেতে পারতো দলটি; কিন্তু ডি-বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশ করেন ইনাকি উইলিয়ামস।

প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে অহেতুক টনি ক্রুসকে পেছন থেকে ফাউল করে ১৪তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন গার্সিয়া। পাঁচ মিনিট আগে মাঝমাঠে যে ফাউলে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেছিলেন স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার, সেটাও ছিল বোকামির শামিল।

১৭তম মিনিটে ডাইভ দেওয়ার অভিযোগে কার্ড পেতে পারতেন ভিনিসিউস জুনিয়র। বাইলাইনে তাকে বাধা দিতে পা বাড়িয়েছিলে বিলবাওয়ের মিডফিল্ডার; কিন্তু স্পর্শ হয়নি, তারপরও পড়ে যান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

ছয় মিনিট পর ডি-বক্সে বল পায়ে দারুণ কারিকুরিতে একজনকে কাটিয়ে ও আরেকজনের বাধা এড়িয়ে বেনজেমার নেওয়া শট প্রতিহত হয়। ওই বল ধরে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন চোট কাটিয়ে ফেরা ফেদে ভালভেরদে।

অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে রিয়াল চাপ ধরে রাখলেও তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না। প্রথম ৪০ মিনিটে আটটি শট নিলেও একটিও ছিল না লক্ষ্যে।

তবে এরপরই দুই মিনিটের ব্যবধানে দারুণ দুটি সুযোগ পায় দলটি। বাঁ দিক থেকে লুকা মদ্রিচের ক্রসে ভিনিসিউসের টোকার সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক উনাই সিমোন। দ্বিতীয় সুযোগটি কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে নষ্ট করেন ভালভেরদে।

গত কয়েক ম্যাচে দারুণ খেলা ক্রুসের নৈপুণ্যে বিরতির খানিক আগে গোলের দেখা পায় রিয়াল। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডি-বক্স থেকে ভিনিসিউসের কাটব্যাক পেয়ে ২২ গজ দূর থেকে জোরালো শটে আসরে নিজের প্রথম গোলটি করেন জার্মান মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সমতা টানে সফরকারীরা। আন্দের কাপার প্রথম শট থিবো কোর্তোয়া ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি, ফিরতি বল ধরে ঠাণ্ডা মাথায় গোলটি করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার কাপা। তার দ্বিতীয় শটের আগে বল ক্লিয়ার করার সময় পেয়েছিলেন ভারানে ও রামোস; কিন্তু পারেননি কেউই।

পাল্টা আক্রমণে পরক্ষণেই জালে বল পাঠিয়েছিলেন ভিনিসিউস; তবে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। ৭৪তম মিনিটে আর বিমুখ হতে হয়নি তাদের।

ছোট করে নেওয়া কর্নারের পর ডান দিক থেকে দানি কারভাহালের ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ানো দারুণ ক্রসে লাফিয়ে হেডে আবারও দলকে এগিয়ে নেন বেনজেমা।

গত বছর ডিসেম্বরে রিয়ালকে তাদেরই মাঠে গোলশূন্য ড্রয়ে রুখে দেওয়া বিলবাও শেষ দিকে পাল্টা আক্রমণে কয়েকবার ভীতি ছড়ায়। যোগ করা সময়ে তো প্রতিপক্ষকে প্রায় রুখে দিয়েছিল তারা; কিন্তু মিকেল ভেসগার জোরালো শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঠেকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন কোর্তোয়া।

ওখান থেকেই প্রতি-আক্রমণে মদ্রিচের বাড়ানো বল ধরে স্কোরলাইন ৩-১ করেন বেনজেমা। আসরে ফরাসি ফরোয়ার্ডের এটি ষষ্ঠ গোল, সব প্রতিযোগিতা মিলে শেষ ৯ ম্যাচে ৯টি।

১৩ ম্যাচে ৮ জয় ও দুই ড্রয়ে সোসিয়েদাদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদের সমান ২৬ পয়েন্ট হলো রিয়ালের। আতলেতিকো অবশ্য দুই ম্যাচ কম খেলেছে।

১১ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে বার্সেলোনা। ১৩ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরে বিলবাও।