ঘরের মাঠে বুধবার রাতে তুরস্কের দলটিকে ৫-১ গোলে হারিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের সেরা হয়ে শেষ ষোলোয় গেছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। আগের দিন ম্যাচ চলাকালীন বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ তুলে বাসাকসেহিরের খেলোয়াড়রা মাঠ ছাড়লে সেদিন খেলা স্থগিত রাখে উয়েফা।
আগের দিন লাইপজিগের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হারে পিএসজির পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। নির্ভার দলটি গোল বন্যায় ভাসাল বাসাকসেহিরকে। প্রথম তিন ম্যাচের দুটিতে হেরে যাওয়া দলটি গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে চূড়ায় থেকে।
হাঁটু গেড়ে বসে এক হাত উপরে তুলে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান রেফারি ও দুই দলের খেলোয়াড়রা। আগের দিন একজন ম্যাচ অফিসিয়ালের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় এই ম্যাচ পরিচালনা করেন নতুন অফিসিয়ালরা।
২১তম মিনিটে নেইমারের চমৎকার ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় পিএসজি। মার্কো ভেরাত্তির কাছ থেকে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বের করে নেন নেইমার। কিছুটা এগিয়ে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড খুঁজে নেন জাল।
গোলরক্ষকের ব্যর্থতার সুযোগে ৩৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। প্রতি-আক্রমণ থেকে বল পেয়ে রাফিনিয়া বল বাড়ান এমবাপেকে। তিনি খুঁজে নেন অরক্ষিত নেইমারকে। সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক, প্রায় তার গা ঘেঁষেই শট নিয়ে বসেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। গোলরক্ষকের পায়ে লেগে গতি কিছুটা কমে বল জড়ায় জালে।
পরের মিনিটে হ্যাটট্রিক হতে পারতো নেইমারের। ডি-বক্সে তিনি বল পাওয়ার সময় সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। তাকে এড়াতে পারেননি, ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষকের গায়ে লেগে পড়ে যান নেইমার। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা মিচেল বাকার বল পাঠান শূন্য জালে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেন নেইমার। বিরতির পর বদলি নামা আনহেল দি মারিয়ার সঙ্গে ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ খেলে ডি বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি তার তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এই টুর্নামেন্টে নেইমারের চেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক আছে কেবল লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর (আটটি করে)।
আগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে জোড়া গোল করা নেইমারের আসরে হলো ৬ গোল। আরও তিন জনের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি এখন সর্বোচ্চ গোলদাতা।
পাঁচ মিনিট পর ব্যাবধান ৫-১ করে ফেলেন এমবাপে। নেইমারের দারুণ পাস পাওয়া দি মারিয়া নিজেই গোলের জন্য শট নিতে পারতেন। তা না করে খুঁজে নেন ফাঁকায় থাকা এমবাপেকে। বাকিটুকু অনায়াসে সারেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭২তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণের দারুণ সুযোগ আসে এমবাপের সামনে। নেইমারের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার শট ঠেকিয়ে দেন সফরকারী গোলরক্ষক।
গোলের জন্য পিএসজি চেষ্টা চালিয়ে গেছে এরপরও। কিন্তু আর জালের দেখা পায়নি দলটি।
অনায়াস জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছে পিএসজি। মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে দুই নম্বরে লাইপজিগ। আগের দিন তাদের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরে যাওয়া ইউনাইটেড খেলবে ইউরোপা লিগে।