২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের দ্বিতীয় ধাপের ম্যাচে আগামী শুক্রবার কাতারের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ‘ই’ গ্রুপে প্রথম লেগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের আয়োজকদের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।
দল দুটি এ পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে পাঁচবার। ২০০৬ সালে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের সেই ১-১ ড্র বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি। পরের চার ম্যাচে যথাক্রমে ৪-০, ৪-১, ৩-০ ও ২-০ গোলে হার। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তপু জানালেন ১৪ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে পয়েন্ট পেতে হলে সুদৃঢ় থাকতে হবে রক্ষণে।
রক্ষণে সাহায্য লাগবে পুরো দলের
প্রাথমিক দলে রক্ষণের মূল সেনানি তপু, ইয়াসিন খান, বিশ্বনাথ ঘোষ, সুশান্ত ত্রিপুরা, রহমত মিয়া, রিয়াদুল ইসলাম রাফি। গত বছর মার্চে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিটকে যাওয়া তপুর ভারত, কাতার, ওমানের বিপক্ষে বাছাইয়ে খেলা হয়নি। ঘুরে ফিরে রক্ষণ সামলেছেন মূলত ইয়াসিন, রহমত, রিয়াদুল, রায়হান ও বিশ্বনাথ। নেপালের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচে সেন্টার-ব্যাক পজিশনে অভিজ্ঞ তপু ফিরেন আস্থার প্রতীক হয়ে। কিন্তু এবারের প্রতিপক্ষ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতার বলেই ৩১ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার চাইছেন পুরো দলের সাহায্য।
“কিন্তু কাতার ভিন্ন দল। ওরা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরেছে। ওই হিসেবে আরও অনেক বেশি মনোযোগী হতে হবে আমাদের। ওদের বিপক্ষে তো আমাদের শুধু ডিফেন্ডিংই করতে হবে। সত্যি বলতে, চার জনে কিন্তু কুলায়ে উঠতে পারব না। ডিফেন্সে পুরো দলের সাহায্য লাগবে। তাহলে ওরা হয়ত খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না।”
বিপজ্জনক এলাকায় কোনো ঝুঁকি নয়
শারীরিক গড়নে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। সেট-পিসে বিপজ্জনক। তপুও জানেন, ডি-বক্সের আশপাশে ফ্রি-কিক পেতে কিংবা বক্সে ফাউলের শিকার হতে প্ররোচিত করবে প্রতিপক্ষ। কাতারে আর্মি দলের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথম গোলটি বাংলাদেশ হজম করেছিল তপুর ভুলে। বসুন্ধরা কিংসের এই ডিফেন্ডার ভুলের পুনরাবৃত্তি চান না কোনোভাবেই। তরুণ বিশ্বনাথ, রহমতদেরকেও দিচ্ছেন একই পরামর্শ।
“নেপাল ও কাতার দল একেবারেই আলাদা। নেপালের বিপক্ষে আমরা অলআউট ফুটবল খেলেছি। এ কারণে ওরা দুই উইং দিয়ে আক্রমণের সুযোগ পেয়েছে। কাতারের প্রস্তুতি ম্যাচ ছিল নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু কাতারের বিপক্ষে আমরা অলআউট ফুটবল খেলতে পারব না। আমাদেরকে রক্ষণে খুবই জমাট থাকতে হবে। রক্ষণে যারা তরুণ, তাদের অবশ্যই বলব-কোনটা করা যাবে, কোনটা যাবে না।”
“কর্নার ফ্ল্যাগের সামনে বা বক্সের সামনে যখন বল থাকে, আপনারা হয়ত দূর থেকে শুনতে পান না, কিন্তু আমি সবসময় চিৎকার করতে থাকি-কোনো ফাউল বা বিপজ্জনক ট্যাকল করা যাবে না। কেননা, এখান থেকে বিপজ্জনক ফ্রি কিক হতে পারে। দরকার পড়লে আমরা থ্রো করে দিব, কর্নার করে দিব, হয়ত অনেক সময় ভারসাম্য রাখতে পারা যায় না। ভুল হয়ে যায়। কিন্তু কাতারের বিপক্ষে এই এলাকাগুলোতে ফাউল করা আমাদের জন্য খুব বিপজ্জনক হবে। এ দিকটায় আমাদের খুবই সাবধান, মনোযোগী থাকতে হবে।”
বড় ম্যাচে বড় লক্ষ্য
এশিয়ার বড় দলগুলোর বিপক্ষে সচরাচর খেলার সুযোগ মেলে না তপুদের। ফিরতি লেগের ম্যাচটি তাই দলের জন্য অনেক বড় উপলক্ষ। জাতীয় দলের এই ডিফেন্ডারও খুব করে চাইছেন ভালো পারফরম্যান্সের পসরা মেলে উপলক্ষটা রাঙিয়ে রাখার। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা করতেও আশাবাদী তিনি।
“কাতারের বিপক্ষে বোঝাপড়ায় কোনো ভুল থাকা চলবে না। মিডফিল্ড টু ডিফেন্স, ডিফেন্স টু গোলকিপার-আমাদের একটা লাইন থাকতে হবে। কাতারের বিপক্ষে আমরা এই লাইনে যতটা ভুল কম করব, কমপ্যাক্ট থাকব, দলের ভালো হবে।”
“জয়ের লক্ষ্যে সবাই নামে। আমরা পয়েন্টের জন্য খেলব। কাতার বিশ্বকাপের আয়োজক। এটা বাছাইয়ে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এমন বড় ম্যাচ আমরা সচারচর খেলার সুযোগ পাই না। ওদের বিপক্ষে আমরা হোমে হারলেও ভালো খেলেছি। আমরাও সুযোগ পেয়েছিলাম। আশা রাখি, ভালো পারফরম্যান্স করব। বড় ম্যাচে সবার মধ্যে ভালো পারফরম্যান্স করার চেষ্টা থাকবে-এটাই চাওয়া।”