‘কাতার ম্যাচে চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে’

লক্ষ্যটা অনেক বড়। কাতারের মাঠ থেকে ফিরতে হবে পয়েন্ট নিয়ে। এমন শক্তিশালী দলের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জটাও তাই বড়। যার ওপর আক্রমণের ঝাপটা বেশি যাবে, সেই গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাও প্রত্যয়ী কণ্ঠে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন-লক্ষ্য অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জ তো নিতেই হবে।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2020, 12:05 PM
Updated : 30 Nov 2020, 12:06 PM

২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের দ্বিতীয় ধাপের ম্যাচে আগামী শুক্রবার স্বাগতিক কাতারের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গত অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে ২-০ গোলে হেরেছিল জেমি ডের দল।

রানা ছাড়াও দলে আছে দুই গোলরক্ষক-আনিসুর রহমান জিকো ও পাপ্পু হোসেন। এ মাসের মাঝামাঝি নেপালের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় জিকোর। পাপ্পু এখনও সুযোগের অপেক্ষায়।

২০১৮ সাল থেকে মূলত দলের পোস্ট আগলে রেখেছেন রানা। কোচ নতুনদের পরখ করে নিতে চাওয়ায় ৩২ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক নেপালের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন না। দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে ফিরেন। কাতারে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছেন সেরা একাদশে। মূলত কোচের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক রানা।

ছবি: ফেইসবুক

এবারের ম্যাচটি একেবারেই আলাদা

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে থাকা ফুটবল পুনরায় শুরুর পর চারটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। দেশে নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচে; প্রথম ম্যাচ ২-০ গোলে জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। এরপর কাতারে গিয়ে খেলা দুই প্রস্তুতি ম্যাচে আর্মি দলের বিপক্ষে ৩-২ এবং লুসাইল স্পোর্টস ক্লাবের কাছে ১-০ গোলের হার।

নেপালের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচে পোস্টের নিচে অলস সময় কাটে গোলরক্ষকদের। দোহায় খেলা দুই প্রস্তুতি ম্যাচে মোটামুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বাছাইয়ের ম্যাচটি তাই একেবারেই আলাদা মনে করেন রানা।

“এটা সত্যি যে, নেপালের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচে আনিসুর রহমান জিকো বা আমাকে তেমন কোনো আহামরি আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়নি। তবে দুটি ম্যাচে ক্লিনশিট পাওয়া যে কোনো গোলরক্ষকের জন্য সন্তুষ্টি, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার ব্যাপার। কিন্তু কাতার ম্যাচটি হবে একেবারেই আলাদা।”

বঙ্গবন্ধুতে বাছাইয়ের প্রথম লেগ হয়েছিল বৃষ্টিভেজা ভারি মাঠে। আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও কাতারকে সংগ্রাম করতে হয়েছিল বেশ। ফিরতি লেগে মাঠ, কন্ডিশন সবকিছুই কাতারের অনূকূলে। প্রতিকূল স্রোতে মাথা তুলে দাঁড়াতে করণীয়টাও জানালেন জাতীয় দলের এই গোলরক্ষক।

“আমাদের হোম ম্যাচে ঢাকার মাঠে বৃষ্টির কারণে ওরা অনেক সংগ্রাম করেছিল গোল পেতে। কিন্তু এবার নিজেদের মাঠে ওরা এসবের মুখোমুখি হবে না। চেনা পরিবেশ। ভালো মাঠ। এখানে তারা অভ্যস্ত। এশিয়ার ভালো দল। স্বাভাবিকভাবে ওরা আধিপত্য করবে। ওদেরকে আটকাতে হলে আমাদের সবাইকে ভালো করতে হবে।”

রক্ষণ থাকতে হবে জমাট

প্রথম লেগে ম্যাচের ২৮তম মিনিটে ডি-বক্সে অরক্ষিত থাকা ইউসুফ আব্দুরিসাগের প্লেসিং শটে পরাস্ত হয়েছিলেন রানা। আর দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করা সময়ে ডি-বক্সে জটলার ভেতর থেকে করিম বৌদিফ ব্যবধান দ্বিগুণ করেছিলেন। বক্সের মুখে ও ভেতরে ডিফেন্ডারদের আরও সতর্ক থাকার বার্তাও দিলেন রানা।

“গোলরক্ষক মূলত ভালো করে রক্ষণের ভালো পারফরম্যান্সের উপর। ডিফেন্সের ওপর আমাদের আস্থা অনেক বেশি। আমি মনে করি, এই পজিশনগুলোতে আমাদের আরও কাজ করার সুযোগ আছে, মূল লড়াইয়ের আগে এগুলো গুছিয়ে নিতে হবে।”

“ডিফেন্সে অপ্রয়োজনীয় ফাউল করা যাবে না। এগুলো দলের বিপদ ডেকে আনতে পারে। বড় দলের বিপক্ষে এগুলো আরও বেশি বিপদ ডেকে আনতে পারে। কাতার শারীরিকভাবে শক্তিশালী, দক্ষ। এগুলো মাথায় রেখে আমাদের খেলতে হবে।”

লক্ষ্য পূরণে চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের মাঝে ব্যবধান বিস্তর; কাতার ৫৭তম, নেপাল ম্যাচের পর তিন ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ ১৮৪তম। তবে রানা আগেভাগে হাল ছাড়তে রাজি নন। পয়েন্ট নিয়ে ফেরার লক্ষ্য পূরণে গোলরক্ষকদের সব ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান তার।

“একজন খেলোয়াড় হিসেবে বলব-আমরা কখনোই হারতে চাই না। তবে কাতার শক্তিশালী দল। তাদের বিপক্ষে লক্ষ্য থাকবে ছোট ছোট ভুলগুলো যেন না করি, আমরা যেন ভালো খেলতে পারি। যদি ড্র করতে পারি, তাহলে আমাদের তৃপ্তি থাকবে। অনেক বড় প্রাপ্তি হবে। চ্যালেঞ্জ আমাদের নিতেই হবে।”