মারাদোনার স্মরণে মেসির উদযাপন, জয়ে ফিরল বার্সা

জয়ে ফিরতে মরিয়া বার্সেলোনা ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলল দাপুটে ফুটবল। দারুণ পারফরম্যান্সে আলো ছড়ালেন বারবার সমালোচনার মুখে পড়া অঁতোয়ান গ্রিজমান। হাতের মুঠোয় চলে আসা ম্যাচের শেষে দুর্দান্ত এক গোল করলেন লিওনেল মেসি। ওসাসুনাকে হারিয়ে লা লিগায় জয়ের পথে ফিরল রোনাল্ড কুমানের দল।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2020, 02:54 PM
Updated : 29 Nov 2020, 06:26 PM

কাম্প নউয়ে রোবববার স্থানীয় সময় দুপুরে লিগ ম্যাচটি ৪-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। দুই অর্ধে দুটি করে গোল করে তারা। অন্য দুই গোলদাতা মার্টিন ব্রাথওয়েট ও ফিলিপে কৌতিনিয়ো।

গত সপ্তাহে আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠে ১-০ গোলে হেরেছিল বার্সেলোনা।

লিগে আগের ছয় ম্যাচে মাত্র একটিতে জেতা বার্সেলোনা একাদশ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পায়। ডান দিক দিয়ে বল পায়ে ডি-বক্সে ঢোকা গ্রিজমানকে আটকাতে নিজের পজিশন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন গোলরক্ষক। তাকে কাটিয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ড ব্যাকপাস দেন কৌতিনিয়োকে। ফাঁকায় বল পেয়ে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের শট গোললাইন থেকে ফেরান ডিফেন্ডার উনাই গার্সিয়া।

চার মিনিট পর মেসির ছোট পাস ধরে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া গ্রিজমানের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। খানিক পর সাবেক আতলেতিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ডের আরেকটি প্রচেষ্টা এগিয়ে গিয়ে কোনোমতে ঠেকান স্প্যানিশ গোলরক্ষক সের্হিও এররেরা।

আগের ছয় রাউন্ডেই গোল হজম করা বার্সেলোনার রক্ষণে ১৯তম মিনিটে ভীতি ছড়ায় ওসাসুনা। তবে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে আন্তে বুদিমিরের ভলি ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

প্রতিপক্ষের রক্ষণে প্রবল চাপ ধরে রাখা বার্সেলোনার গোলের অপেক্ষা শেষ হয় ২৯তম মিনিটে। বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার বাড়ানো পাস গোলমুখে পেয়ে কৌতিনিয়োর শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক; কিন্তু বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি। আলগা বলে ব্রাথওয়েটের শটও দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঠেকান এররেরা, তবে এবারও পারেননি বল হাতে রাখতে। ডেনিশ ফরোয়ার্ডের দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বল গোললাইন পার হয়। 

৪২তম মিনিটে অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন গ্রিজমান। আলবার ক্রস ওসাসুনার মিডফিল্ডার মনকায়োলা হেডে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো ডি-বক্সের বাইরে প্রতিপক্ষের পায়ে তুলে দেন। ছুটে এসে জোরালো ভলিতে ঠিকানা খুঁজে নেন বিশ্বকাপজয়ী তারকা।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেয় ওসাসুনা। তবে রুবেন গার্সিয়ার শট ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন টের স্টেগেন।

৫৭তম মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন কৌতিনিয়ো। গ্রিজমানের ছোট পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

১০ মিনিট পর ভাগ্যের ফেরে ব্যবধান কমানোর সুযোগ হারায় ওসাসুনা। রবের্তো তরেসের শট টের স্টেগেনকে ফাঁকি দিলেও ক্রসবারে বাধা পায়। এর ছয় মিনিট পরেই চমৎকার এক গোলে ওপারে পাড়ি দেওয়া কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনাকে স্মরণ করেন মেসি।

ত্রিনকাওয়ের পাস ডি-বক্সের বাইরে ধরে আড়াআড়ি এগিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো কোনাকুনি শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মেসি। আসরে এটি তার চতুর্থ গোল। গোলের পর জার্সি খুলে ফেলেন তিনি, পরনে ছিল পূর্বসুরি মারাদোনার স্মরণে নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের জার্সি, আর্জেন্টিনার দলটির হয়ে খেলেছিলেন মারাদোনা। একই সঙ্গে ক্যামেরায় ধরা হয় বার্সেলোনায় মারাদোনার জার্সি, ১৯৮২-৮৪ পর্যন্ত দলটিতে খেলেছিলেন তিনি।        

যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে হতে পারতো আরেক গোল। কিন্তু মেসির রক্ষণপ্রাচীরের ওপর দিয়ে নেওয়া ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক এররেরা।

৯ ম্যাচে চতুর্থ জয় পাওয়া বার্সেলোনা ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে উঠেছে।

১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল সোসিয়েদাদ। এক ম্যাচ কম খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদের পয়েন্টও ২৩।

১০ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে ভিয়ারিয়াল। তারপরেই থাকা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ১৭।