কাম্প নউয়ে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে ৫-২ গোলে জিতেছে কাতালান ক্লাবটি। অসংখ্য সুযোগ নষ্ট না হলে ব্যবধান হতে পারতো অনেক বড়।
দেম্বেলের গোলে বার্সেলোনা এগিয়ে যাওয়ার পর বিরতির ঠিক আগে সমতা টানেন আন্তোনিও সানাব্রিয়া। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আনসু ফাতির বদলি নেমে ম্যাচের মোড় নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে দেন মেসি।
১২ মিনিটের ব্যবধানে অঁতোয়ান গ্রিজমান ও মেসির গোলে ৩-১এ এগিয়ে যায় কুমানের দল। লরেঞ্জো মোরোন ব্যবধান কমালেও দাপুটে বার্সেলোনাকে আটকাতে পারেনি তারা; মেসির দ্বিতীয় ও পেদ্রির প্রথম গোলে বড় জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ী দলটি।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরুতেই জমজমাট লড়াইয়ের আভাস মেলা ম্যাচের প্রথম পাঁচ মিনিটে দুটি এবং পরের সাত মিনিটে আরও দুটি নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট হয় বার্সেলোনার।
পঞ্চম মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে হতাশ করেন অঁতোয়ান গ্রিজমান ও ফাতি। ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ড গ্রিজমানের লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের পর তরুণ ফরোয়ার্ডের নিচু শটও পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
নবম মিনিটে স্প্যানিয়ার্ড ফাতির দ্বিতীয় শট পা দিয়ে রুখে দেন বেতিস গোলরক্ষক। আর দুই মিনিট পর দ্রুত ডি-বক্সে ঢুকে গ্রিজমানের নেওয়া জোরালো শট শেষ মুহূর্তে বাঁক খেয়ে পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে হতাশা বাড়ে স্বাগতিকদের।
ম্যাচে লক্ষ্যে প্রথম শট অবশ্য নিয়েছিল সফরকারীরা। কর্নারে উইলিয়াম কারবাইয়োর হেড দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
একের পর এক দারুণ সব আক্রমণ ভেস্তে যাওয়ার মাঝে ২২তম মিনিটে দুর্দান্ত গোলে দলকে এগিয়ে নেন দেম্বেলে। ডি-বক্সে ছোট এক ঝটকায় সামনের ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি উইঙ্গার।
প্রথমার্ধের তিন মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে কিছুটা সৌভাগ্যসূচক গোলে সমতায় ফেরে বেতিস। ক্রিস্তিয়ান তেইয়োর ক্রস সের্হি রবের্তোর পায়ে লেগে দিক পাল্টে চলে যায় সানব্রিয়ার পায়ে। ১০ গজ দূর থেকে জালে বল পাঠাতে ভুল হয়নি বার্সেলোনার যুব দলে বেড়ে ওঠা প্যারাগুয়ের এই স্ট্রাইকারের।
দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে অবশেষে জালের দেখা পান গ্রিজমান। বলে পা না লাগিয়েও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন মেসি। বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার পাস ধরতে গিয়ে ডামি করে ছেড়ে দেন মেসি, এগিয়ে গিয়ে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেন গোলরক্ষক ব্রাভো। ফাঁকায় বল পেয়ে বিনা বাধায় দলকে আবারও এগিয়ে নেন বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে থাকা বেতিস এরপর একসঙ্গে জোড়া ধাক্কা খায়। দেম্বেলের শট গোললাইন থেকে হাত দিয়ে ফেরানোয় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বেতিস ডিফেন্ডার আইসা মান্দি। আর নিখুঁত স্পট কিকে ব্যবধান বাড়ান মেসি।
তবে হাল ছাড়তে নারাজ বেতিস ৭৩তম মিনিটে ব্যবধান কমিয়ে লড়াই জিইয়ে রাখে। বাঁ দিক থেকে আলেক্স মোরেনোর পাস ছোট ডি-বক্সের মুখে পেয়ে জালে বল ঠেলে দেন লরেন মোরোন। এখানেও ক্লেমোঁ লংলে ও জেরার্দ পিকের দুর্বল ডিফেন্ডিংয়ের দায় ছিল।
আর নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ডান দিক থেকে রবের্তোর ক্রস ফাঁকায় পেয়ে প্লেসিং শটে অনায়াসে স্কোরলাইনে নাম লেখান ১৭ বছর বয়সী পেদ্রি। তরুণ স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের লা লিগায় এটা প্রথম গোল।
সাত ম্যাচে তিন জয় ও দুই ড্রয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে উঠেছে বার্সেলোনা। ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে সাত নম্বরে বেতিস।
আট ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল সোসিয়েদাদ। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল।