মেসি-দেম্বেলের গোলে ইউভেন্তুসকে হারাল বার্সেলোনা

বিরতির আগেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারতো বার্সেলোনা। কিন্তু লিওনেল মেসি ও অঁতোয়ান গ্রিজমানদের সুযোগ নষ্টের ভিড়ে তা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধেও চলে তাদের সুযোগ নষ্টের মহড়া। এরপরও নিজেদের খুঁজে ফেরা ইউভেন্তুসের বিপক্ষে জয় পেতে তেমন সমস্যা হয়নি তাদের। উসমান দেম্বেলের সৌভাগ্যপ্রসূত গোলের পর অধিনায়কের শেষের লক্ষ্যভেদে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরেছে রোনাল্ড কুমানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2020, 09:56 PM
Updated : 28 Oct 2020, 10:41 PM

ইউভেন্তুসের আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। আসরে তাদের এটা টানা দ্বিতীয় জয়।

শেষ দিকে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া ইউভেন্তুসের বিপক্ষে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে বার্সেলোনা। তবে ফিনিশিংয়ে বেশ ভুগতে দেখা গেছে তারকাসমৃদ্ধ দলটিকে। অন্যদিকে, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোবিহীন স্বাগতিকদের আক্রমণে ছিল না কোনো ধার। মাচে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি তারা! 

ম্যাচের শুরুতেই চাপ বাড়ানো বার্সেলোনা এগিয়ে যেতে পারতো দ্বিতীয় মিনিটে। মিরালেম পিয়ানিচের শট স্বাগতিক গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যাসনি ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর সতীর্থের পা ঘুরে ফাঁকায় বল পেয়ে যান অঁতোয়ান গ্রিজমান। কিন্তু ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের জোরালো শট পোস্টে বাধা পায়।

চতুর্দশ মিনিটে সৌভাগ্যকে পাশে পায় বার্সেলোনা। বাঁ দিকের সাইডলাইন থেকে মেসির উঁচু করে বল বাড়ান ডান দিকে দেম্বেলেকে। খানিকটা এগিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া শটে বল ফেদেরিকো চিয়েসার পায়ে লেগে দিক পাল্টে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।

২৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো; কিন্তু গ্রিজমানের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে ডি-বক্সের মধ্যে থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন মেসি। সাত মিনিট পর জালে বল পাঠিয়েছিলেন ইউভেন্তুসের মোরাতা, কিন্তু অফসাইডে ছিলেন তিনি। এর আগেও একবার লক্ষ্যভেদ করেছিলেন স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড; সেবার শট নেওয়ার আগমুহূর্তে তার হাতে বল লেগেছিল।

৩৫তম মিনিটে আবারও প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় বার্সেলোনা। মেসির ছোট পাস পেয়ে দেম্বেলের দুর্বল প্রচেষ্টা এগিয়ে গিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক, ফিরতি বল পেয়ে সময় নষ্ট করে সুযোগ হারান গ্রিজমান।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে আরও একবার ঠিকানা খুঁজে পান মোরাতা। কিন্তু অফসাইডের হতাশা পিছু ছাড়েনি, এ দফায় দীর্ঘক্ষণ ভিএআর দেখে গোল দেননি রেফারি।

৬২তম মিনিটে মেসির জোরালো শট পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে যায়। ১২ মিনিট পর অধিনায়কের দারুণ পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে গ্রিজমান লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিলে হতাশা বাড়ে বার্সেলোনার।

৮৫তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ইউভেন্তুস। পিয়ানিচকে অহেতুক ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার দেমিরাল। এক জন কম নিয়ে বাকি সময়ে কোনো নাটকীয়তার জন্ম দিতে পারেনি ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। উল্টো যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে মেসির সফল স্পট কিকে সব অনিশ্চয়তার শেষ হয়। ফেদেরিকো বের্নারদেস্কি ডি-বক্সে আনসু ফাতিকে ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় বার্সেলোনা।

গত সপ্তাহে ফেরেন্সভারোসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে ইউরোপ সেরার মঞ্চে যাত্রা শুরু করলেও সময়টা ভালো যাচ্ছিল না বার্সেলোনার। লা লিগা সবশেষ তিন ম্যাচে নেই জয়ের দেখা, শেষ দুটিতে হার। এর মধ্যে চার দিন আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ঘরের মাঠে পরাজয়। মাঠের বাইরে সভাপতি জোজেপ মারিয়া বার্তোমেউয়ের সরে দাঁড়ানোর ঘটনা।

সব মিলে অস্থির সময় কাটছে বার্সেলোনার। এমন অবস্থায় এই জয় নিশ্চিতভাবে কাতালান শিবিরের জন্য দারুণ স্বস্তির।

অন্যদিকে, ইউভেন্তুসের সমস্যা আরও ঘনীভূত হলো। সেরি আয় পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে পয়েন্ট হারিয়েছে তারা। দিনামো কিয়েভকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শুভসূচনা করলেও সেই ম্যাচেও তাদের পারফরম্যান্স ছিল না ভালো।

টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ইউভেন্তুস।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে ফেরেন্সভারোসের মাঠে ২-২ ড্র করেছে কিয়েভ। দল দুটির পয়েন্ট সমান ১ করে।