ক্লাবগুলোকে বাফুফে প্রধানের হুঁশিয়ারি

ক্লাবগুলোর অনুরোধে সিদ্ধান্ত বদলানোর ঘটনা দেশের ফুটবলে হরহামেশাই হয়। সূচি বদলায়, খেলা পেছায়। বিদেশি খেলোয়াড়দের কোটাসহ অনেক বিষয় নিয়ে হয় কাটা-ছেঁড়া, বারবার। এখন থেকে এগুলো আর হবে না; বাফুফের নেওয়া সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত থাকবে বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন সংস্থাটির সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2020, 01:40 PM
Updated : 11 Oct 2020, 01:40 PM

৩৬ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের পদে বসেন সালাউদ্দিন। নির্বাচনে জয়ীদের নিয়ে রোববার প্রথম বৈঠক সেরে আগামী দিনের পরিকল্পনা জানান এই সাবেক তারকা ফুটবলার।

ক্লাবগুলোর অনুরোধে প্রফেশনাল লিগ কমিটির বারবার সিদ্ধান্ত বদল দেশের ফুটবলের নিয়মিত এক চিত্র। সালাউদ্দিনের হুঁশিয়ারি, এবার কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

“উনার সঙ্গে (সালাম মুর্শেদী) আমার ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে। প্রশাসনিক যে তারিখ দেবেন, সেই তারিখেই খেলা হবে। যদি কোনো দল খেলতে না চায়…সিদ্ধান্ত হচ্ছে ১৩ দলের থেকে তিন দল খেলবে না...খেলবে না। ১০ দলে খেলা হবে। অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। অনেক ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে। আর ফ্রেন্ডশিপ নয়। এখন শুধুই ফুটবলের সময়।”

“বিদেশি খেলোয়াড় চার জন আগের বারের মতো। এএফসি নির্দেশনা অনুযায়ী হবে, তারা আমাদের এটা দিয়েছে। আমি যতদিন প্রেসিডেন্ট থাকব। এটা বদল হবে না। এটা পাঁচও হবে না, তিনও হবে না।”

গত বছর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ড্র ছাড়া গত এক যুগে জাতীয় দলের উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স নেই বললেই চলে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ চার আসরের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার বিষাদ হয়েছে সঙ্গী। তারপরও ন্যাশনাল টিমস কমিটি কাজী নাবিল আহমেদের হাতে রাখার পেছনেও যুক্তি তুলে ধরেন সালাউদ্দিন।

“আমরা উন্নতমানের কোচ নিয়োগ দিয়েছি। ট্রেনার, এনালিস্ট, ডাইরেক্টর, স্ট্রাটেজি এন্ড প্ল্যানিং…তারা সবাই এডুকেটেড ও ওয়েলনোন পারসন। চেয়ারম্যান (নাবিল) আবাহনী ক্লাবের ফুটবল টিম হ্যান্ডল করেন। তিনি হাই প্রেসার দল পরিচালানা করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। আমি মনে করি, তিনি এই পদের জন্য যোগ্য। তার হয়তো কিছু সময় প্রয়োজন। সেটা আমরা দিতে রাজি আছি।”

খেলোয়াড় উঠে আসার পাইপলাইন জেলা ফুটবল হয় না নিয়মিত। এই দিক এবার নিজে দেখতে চান সালাউদ্দিন। ‘খুব শক্তভাবে’ জেলা ফুটবল দেখভাল করা হবে বলে জানালেন তিনি।

“আমি নিশ্চিত করতে চাই, প্রতি জেলায় খেলা হবে। তাদের আর্থিক সহায়তা দেব। আমার কলিগরাও সঙ্গে থাকবে। আমি কমিটি করে আপনাদের দেখিয়ে দেব এরচেয়ে শক্তিশালী কমিটি বাংলাদেশে হতে পারে না। এই কমিটি ফাইন্যানশিয়াল ও টেকনিক্যাল সহায়তা দেবে। খুব শক্তভাবে লিগগুলো মনিটরিং করা হবে। এসবের পরেও যদি কোনো জেলা করতে না পারে, তবে প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে লিগ করে দেবে।”

“জেলাগুলো নিয়ে হোম এন্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিক জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হবে বঙ্গবন্ধুর নামে। প্রথমে জেলা লিগ, এরপর বঙ্গবন্ধু চ্যাম্পিয়নশিপ। এরপর ‘হোম এন্ড অ্যাওয়ে’ ভিত্তিক শেখ কামাল অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপ। এর পরপরই হবে শেখ রাসেল অনূর্ধ্ব-১২ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাগুলোর জন্য একটা পূর্ণাঙ্গ সূচির মধ্যে চলে আসবে। পরবর্তী ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে এই সূচি পেয়ে যাবেন।”

“মেয়েদেরও তিনটি ইভেন্ট হবে জেলা ভিত্তিক। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় আসরের টেকনিক্যাল সহায়তা আমরা দেই। এটা আমাদের কাজ। কে করে সেটা বড় কথা নয়, আমাদের দরকার খেলা হওয়া।”

সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের বাইরে এবার নির্বাচিত হয়েছেন ছয় জন। সবাইকে নিয়ে ফুটবলের উন্নতিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

“আমরা এক ফুটবল পরিবার। এই কথা বলার পর ওনাদের বলেছি, কোন দ্বিমত থাকলে আমার দরজা খোলা আছে, আপনারা আলাপ করবেন। তারপরও কেউ যদি আপনাদের (গণমাধ্যমের) সঙ্গে কথা বলে, সেটা তাদের সমস্যা। আমার এটা দায়িত্ব নয়। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি, তারা ভদ্রলোক। আমার মনে হয় না এরকম কিছু হবে।”