“আমরা তোমাকে ভালোবাসি, মেসি থাকো, মেসি থাকো!”, সবার মুখে ছিল এই স্লোগান।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে হেরে বার্সেলোনা ছিটকে যাওয়ার পর থেকে মেসির চলে যাওয়ার গুঞ্জন নতুন করে শুরু হয়। নতুন কোচ রোনাল্ড কুমানও মন বদলাতে পারেননি আর্জেন্টাইন তারকার।
এরপর মঙ্গলবার ফুটবল দুনিয়ায় যেন বোমা ফাটে। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানায়, মনস্থির করে ফেলেছেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। চুক্তির একটি ধারা সক্রিয় করে বিনা ফিতে ছাড়তে চাইছেন ক্লাব। পরে ক্লাবের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করার খবর আসে গণমাধ্যমে।
এমন খবর প্রকাশের পরপরই রাস্তায় নেমে আসে ক্লাবটির শতশত সমর্থক। কাম্প নউয়ের সামনে জড়ো হয়ে জানাতে থাকে তাদের দাবি, মেসিকে যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে চায় তারা।
৪০ বছর বয়সী অরিওল তো মানতেই পারছেন না। ক্লাবের ইতিহাসের রেকর্ড গোলদাতা, অনেক অনেক সাফল্যের নায়ক মেসি চলে যাবেন-এমনটা কখনও তার কল্পনাতেও আসেনি।
“এটা হতভম্ব করে দেওয়ার মতো ঘটনা। আমি কখনও ভাবিনি, এমনটা কখনও হতে পারে…ম্যাচের পরাজয় খেলাধুলার অংশ হিসেবে মেনে নেওয়াই যায়, তবে মেসির চলে যাওয়া মানতে পারছি না।”
“আমরা আমৃত্যু তাকে ধরে রাখতে লড়াই করব। দোষ তার নয়। দায় বার্তোমেউয়ের বোর্ডের।”
২০০১ সালে, ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনার যুব দলে যোগ দেওয়া মেসির মূল দলে অভিষেক হয় ২০০৩ সালে, এক প্রীতি ম্যাচে। এরপরই ক্রমে মূল দলে উঠে আসা এবং একাদশে জায়গা পাকা করে নেওয়ার পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
আর এর সবকিছুর মূলে সভাপতি বার্তোমেউয়ের দায় দেখছেন বিক্ষোভ জানাতে আসা সমর্থকরা। মুখে মাস্ক পরে আসা আরেক সমর্থক ২৮ বছর বয়সী আলবের্ত রয়টার্সকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় কড়া সমালোচনা করেন বোর্ডের।
“অনেক দিন ধরে তারা আজেবাজে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। একসময় আমাদের যে দর্শন ছিল তা ধরে না রাখায়, সঠিক পরিকল্পনায় কোনো প্রকল্প দাঁড় না করানোয় এই মানুষটি (মেসি) ক্লান্ত-হতাশ হয়ে পড়েছে…এরপরই সে বলে দিল যথেষ্ট হয়েছে।”
“এখন একমাত্র একটাই উপায় আছে-বার্তোমেউয়ের পদত্যাগ।”
কোপা দেল রে থেকে আগেই ছিটকে পড়া বার্সেলোনা একটা সময় পর্যন্ত লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস বিরতির পর পুনরায় শুরু হওয়া লিগে ছন্দ হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে শিরোপা হারায় তারা। ওই সময় এক ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে দলের পারফরম্যান্সের কড়া সমালোচনা করেছিলেন মেসি।
সবশেষে ইউরোপ সেরার মঞ্চে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ওই ভরাডুবি-গত এক যুগে এবারই প্রথম শিরোপাশূন্য মৌসুম কাটালো বার্সেলোনা।