লিসবনে শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের কাছে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বার্সেলোনা। জার্মান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেন টমাস মুলার ও ফিলিপে কৌতিনিয়ো। একটি করে রবের্ত লেভানদোভস্কি, সের্গে জিনাব্রি, ইভান পেরিসিচ ও জশুয়া কিমিচ। বার্সেলোনার একমাত্র গোলদাতা লুইস সুয়ারেস, অন্যটি আত্মঘাতী।
দুই অর্ধে চারটি করে গোল হজম করে বিব্রতকর হারে শূন্য হাতে মৌসুম শেষ করল বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষের গতি, কৌশলের কোনো জবাবই যেন ছিল না তাদের। ভঙ্গুর রক্ষণ নিয়ে ম্যাচ জুড়ে ভুগেছে, ছন্নছাড়া মাঝমাঠ থেকে কোনো আক্রমণ গড়ে ওঠেনি আর লিওনেল মেসির বিবর্ণ রূপে আক্রমণভাগ ছিল না বললেই চলে।
সব মিলিয়ে বার্সেলোনার ইতিহাসে তাদের এমন দশা দেখা যায়নি খুব বেশি। মুভিস্টারকে দেওয়া ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় দলটির সব খেলোয়াড়ের চোখে-মুখে ছিল তীব্র হতাশার ছাপ। পিকের কথাই সেটাই ফুটে উঠল।
“আমি বেদনাহত। আমরা সবাই কষ্ট পাচ্ছি। আমরা এভাবে খেলতে পারি না। এটা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। এর বেশি কিছু বলার নেই।”
“এটা কি একটা যুগের অবসান? আমি নিশ্চিত নই। তবে আমাদের মেনে নিতে হবে যে, আমাদের একেবারে গোড়ায় আঘাত লেগেছে। শুধু খেলোয়াড়দের ব্যাপার নয়, ক্লাব হিসেবেও আমরা সঠিক পথে নেই। অনেকগুলো সাফল্যেভরা বছর পার করে এসেছি। তবে এবার আমরা লিগ জিতিনি, ইউরোপে জিতলাম না। তবে আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে…আজ মাঠে যা হলো তা মেনে নেওয়া যায় না।”
সামনের পথচলায় দলের অনেক কিছুতে পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখছেন স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডার। পরিবর্তনটা শুধু স্কোয়াডে নয়, সবকিছুকেই যেন ঢেলে সাজানোর ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
“ক্লাবে পরিবর্তন দরকার। শুধু খেলোয়াড় নয়, আমি নির্দিষ্ট করে বলতে চাই না।”
“তবে ফুটবল এমন একটা খেলা যেখানে পরিবর্তন নিয়মিত প্রয়োজন…ঘুরে দাঁড়াতে কী প্রয়োজন, তার খোঁজ করতে হবে আমাদের, যেসব মানুষ এই ক্লাবের জন্য সঠিক কাজটা করবে, তাদের ওপর আস্থা রাখতে হবে আমাদের।”
“আমি যদি তালিকা ধরে পরিবর্তনের কথা বলতে চাই, তাহলে সর্বপ্রথম আমি নিজেকে নিয়েই সেটা মেনে নেব। আজকের ম্যাচের ফল ভয়াবহ…শঙ্কা জাগানিয়া। হতাশাজনক। সব পর্যায়েই আমাদের কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার।”
২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে মোট তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, আটটি লা লিগা ও ছয়টি কোপা দেল রে সহ অনেক শিরোপা জিতেছে বার্সেলোনা। একবিংশ শতাব্দীর বিচারে হিসেবটা করলে লিগ শিরোপা বেড়ে দাঁড়ায় দশে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চারে। সঙ্গে অন্য শিরোপাও আছে।
সেখানে এ মৌসুমে কোপা দেল রে থেকে আগেই ছিটকে যাওয়া দলটি লিগে একটা সময় ভালো অবস্থানেই ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস বিরতির পর দিক হারিয়ে শিরোপা খোয়ায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের কাছে। আর এবার চরম বিব্রতকর হারে বিদায় ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে।