পর্তুগালের লিসবনে বুধবার রাতে এক লেগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। নিজেদের ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে উঠল পিএসজি। ১৯৯৫ সালে প্রথমবার সেমি-ফাইনালে খেলেছিল তারা।
আক্রমণাত্মক ফুটবলে আলো ছড়ানো দুই দলের লড়াইয়ের শুরুতেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় পিএসজি। মাঝমাঠে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। কিন্তু ‘ওয়ান-অন-ওয়ানে’ করে বসেন অবিশ্বাস্য ভুল, নেন লক্ষ্যভ্রষ্ট শট। দলের সেরা তারকার এমন সুযোগ হাতছাড়া করায় হতাশায় মুখ ঢেকে ফেলেন পিএসজি কোচ, মাথায় হাত বেঞ্চে থাকা কিলিয়ান এমবাপেদের।
এই ম্যাচের আগে মৌসুমে ১১৫ গোল করা আতালান্তা দুই মিনিটের ব্যবধানে দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করতে পারেনি তারা। দশম মিনিটে হান্স হাতেবোরের হেড লাফিয়ে ঠেকানোর পর মাত্তিয়া কালদারার হেডও অসাধারণ নৈপুন্যে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন কোস্টা রিকার গোলরক্ষক।
পাঁচ মিনিট পর বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠেন নেইমার। মাঝমাঠ দিয়ে ছুটে যান মাউরো ইকার্দি। ব্রাজিলিয়ান তারকা শট নিতে পারতেন, সতীর্থকে পাসও দিতে পারতেন। কিন্তু শেষে গিয়ে শূন্যস্থানে বল বাড়ান তিনি, পিএসজি শিবিরে বাড়ে হতাশা।
দুই মিনিট পর পাল্টা জবাব দিতে পারতেন নেইমার। তবে ২০ গজ দূর থেকে তার জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট। বিরতির আগে ফের গোলরক্ষককে একা পান তিনি। তবে দুরূহ কোণ থেকে উড়িয়ে মেরে আবারও হতাশা উপহার দেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার।
আক্রমণে বাড়তি মনোযোগ দিতে গিয়ে প্রথমার্ধে বারবার নিজেদের ঘর অরক্ষিত করে ফেলা আতালান্তা বিরতির পর খেলার ধরনে কিছুটা পরিবর্তন আনে। তারপরও, এই অর্ধে প্রথম সুযোগটি পায় তারা। তবে, কাজে লাগাতে পারেনি তারা; পাঁচ গজ দূর থেকে বেরাত জিমসিতির ভলি পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।
তিন মিনিটের ব্যবধানে ভালো দুটি সুযোগ নষ্ট হয় পিএসজির। বদলি নামা এমবাপের ৭৩তম মিনিটের শট গোলরক্ষকের পায়ে প্রতিহত হয়। আর দুর্বল শটে হতাশা বাড়ান নেইমার। ৮০তম মিনিটে শট নিতে দেরি করে আরেকটি সুযোগ হারান চোট কাটিয়ে ফেরা এমবাপে।
একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করার মাঝে ৭৮তম মিনিটে আরেক ধাক্কা খায় পিএসজি। পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন গোলরক্ষক নাভাস।
৯০তম মিনিটে ডান দিক থেকে চুপো-মোটিংয়ের ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি নেইমার। বল প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে গোলমুখে পেয়ে যান মার্কিনিয়োস। টোকায় বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের।
আর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে আতালান্তার হৃদয় ভেঙে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান ১৩ মিনিট আগে ইকার্দির বদলি নামা চুপো-মোটিং। নেইমারের পাস পেয়ে ছোট ডি-বক্সে বাড়ান এমবাপে আর স্লাইড করে বল জালে পাঠান ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ড।
প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পিএসজি খেলবে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও লাইপজিগের মধ্যে বিজয়ীর বিপক্ষে।