একবিংশ শতাব্দীতে ঘরোয়া লিগে বার্সেলোনার সাফল্য দারুণ। প্রথম দশকে চারবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি পরের ১০ বছরে ছয়বার জিতেছে লা লিগা শিরোপা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের সাফল্য ততটা ভালো নয়।
গত ১০ বছরে বার্সেলোনা শিরোপাটি জিতেছে দুইবার, সেখানে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ টানা তিনবার সহ মোট চারবার। গত দুই মৌসুমে সম্ভাবনা জাগিয়ে তারা থমকে যায় অ্যাওয়ে ম্যাচের বাজে পারফরম্যান্সে। ২০১৭-১৮ আসরে কোয়ার্টার-ফাইনালে রোমার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৪-১ গোলে জেতার পর প্রতিপক্ষের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে হেরে বাদ পড়ে। আর গতবার সেমি-ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে ৩-০ গোলে জেতার পর ছিটকে যায় ফিরতি পর্বে ৪-০ ব্যবধানে হেরে।
এবার শেষ ষোলোর প্রথম লেগে নাপোলির মাঠে ১-১ ড্র করে তারা। অ্যাওয়ে গোলে খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে অবশ্য আছে দলটি; তবে বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটে সেখানেও দুশ্চিন্তার জায়গা দেখছেন রিভালদো। বিশেষ করে, চলমান লা লিগায় তাদের অধারাবাহিক পারফরম্যান্স। ইতালিয়ান প্রতিপক্ষের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও দুর্ভাবনার কারণ।
এছাড়া ঘরের মাঠে বরাবরের শক্তিশালী বার্সেলোনা এবার পাবে না মাঠে দর্শক সমর্থন। করোনাভাইরাসের কারণে মৌসুমের বাকি সব ম্যাচ হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার সামনে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে বলে ধারণা ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার রিভালদোর।
দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে ফারাক স্পষ্ট। অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতির পর ফেরা সেরি আয় পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জিতেছে নাপোলি। অন্যদিকে, এই সময়ে লিগে আট ম্যাচ খেলে পাঁচটিতে জিতেছে বার্সেলোনা। তাদের পারফরম্যান্সেও ওঠানামা চোখে পড়ার মতো। সপ্তাহের শুরুতে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে কিকে সেতিয়েনের দলকে দেখা গিয়েছিল পুরনো রূপে; কিন্তু গত বুধবার এস্পানিওলের বিপক্ষে দলটির পারফরম্যান্স ছিল না তাদের প্রত্যাশিত মানের ধারেকাছেও।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে তিন মাসের বিরতি বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন রিভালদো। যে কারণে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে ‘নতুন রূপে’ ফেরা লিগ শুরু করলেও এখন তারা পিছিয়ে পড়েছে শিরোপা লড়াইয়ে।
“লকডাউন বার্সেলোনার টিম স্পিরিটে প্রভাব ফেলেছে। তাদের কিছু খেলোয়াড় তাদের মানের সেরা পর্যায়ে নেই। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলাও যেন তাদের আবেগ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ ফিরতি পর্বে ছন্দ খুঁজে নিতে সক্ষম হয়েছে এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ব্যর্থতার সুযোগ লুফে নিয়েছে।”
৩৫ ম্যাচে ২৩ জয় ও সাত ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৬। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭৭। আগামী শনিবার রিয়াল ভাইয়াদলিদের মাঠে খেলতে যাবে মেসি-সুয়ারেসরা।