আতলেতিকোর ধাক্কায় বার্সার শিরোপা স্বপ্নে চোট

তিন ম্যাচ পর জালের দেখা পেলেন লিওনেল মেসি। তবে অধিনায়কের অসাধারণ মাইলফলক ছোঁয়ার দিনটিকে জয়ে রাঙাতে পারল না বার্সেলোনা। আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে দুবার এগিয়ে গিয়েও পয়েন্ট হারানোর হতাশায় মাঠ ছাড়ল কিকে সেতিয়েনের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2020, 09:59 PM
Updated : 1 July 2020, 10:03 AM

কাম্প নউয়ে মঙ্গলবার রাতে জিতলে আপাতত লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ফিরত বার্সেলোনা। সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল তারা; কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২-২ ড্র করে রিয়াল মাদ্রিদের পেছনেই থাকতে হচ্ছে কাতালান ক্লাবটিকে। শুরুতে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। পেনাল্টি থেকে সফরকারীদের গোল দুটি করেন সাউল নিগেস।

আগের ম্যাচে সেল্তা ভিগোর মাঠেও ২-২ ড্র করেছিল বার্সেলোনা। টানা দ্বিতীয় ড্রয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আরেক দফা পিছিয়ে পড়ল তারা। ৩২ ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল। এক ম্যাচ বেশি খেলে ২১ জয় ও সাত ড্রয়ে মেসিদের পয়েন্ট ৭০।

পয়েন্ট টেবিলের দুই ও তিন নম্বর দলের লড়াই শুরু থেকেই জমে ওঠে। নানা নাটকীয়তায় ছড়াতে থাকে বাড়তি রোমাঞ্চ।

ষষ্ঠ মিনিটে বাঁ দিক থেকে দারুণ এক ক্রস বাড়ান ইয়ানিক কারাসকো। ছোট ডি-বক্সে বলে পা লাগাতে পারেননি দিয়েগো কস্তা, পোস্টের কাছ দিয়ে বেরিয়ে যায় বল। অষ্টম মিনিটে ইভান রাকিতিচের শট পাঞ্চ করেন গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক।

একাদশ মিনিটে ডান দিক থেকে নিচু ফ্রি-কিকে চেষ্টা করেন মেসি, কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান কস্তা। ওই কর্নার থেকেই গোল পায় স্বাগতিকরা। বার্সেলোনা অধিনায়কের কর্নারে বল স্প্যানিশ স্ট্রাইকার কস্তার ডান ঊরুর ভিতরের দিকে লেগে দুই পায়ের মাঝ দিয়ে গিয়ে জালে জড়ায়। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।

চার মিনিট বাদে ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ পেয়েও হারান কস্তা। ডি-বক্সে কারাসকোকে বার্সেলোনার আর্তুরো ভিদাল ফাউল করলে পেনাল্টি পায় আতলেতিকো। কস্তার স্পট কিক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন টের স্টেগেন। তবে, শট নেওয়ার আগেই মুভ করায় উল্টো হলুদ কার্ড দেখেন জার্মান গোলরক্ষক। ফিরতি স্পট কিকে কোনো ভুল করেননি সাউল নিগেস। স্কোরলাইন হয় ১-১।

৬৯৯ গোল নিয়ে মাইলফলক ছোঁয়ার অপেক্ষায় তিন ম্যাচ কেটে গেছে মেসির। ২২তম মিনিটে অসাধারণ এক গোলে ছুঁতে পারতেন ৭০০; কিন্তু একটুর জন্য হয়নি। তার বাঁ পায়ের ট্রেডমার্ক শটে বল পোস্টের বাইরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়।

৪২তম মেসির প্রচেষ্টা অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্যর্থ করে দেন ওবলাক। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের নেওয়া ফ্রি-কিক রক্ষণ প্রাচীরে লেগে বাঁক খেয়ে জালে জড়াতে যাচ্ছিল, শেষ মুহূর্তে দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান স্লোভেনিয়ার গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে দেখা মেলে মেসির ৭০০তম ক্যারিয়ার গোলের। নেলসন সেমেদো ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। নিখুঁত শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার।

এবারের লিগে মেসির এটা ২২তম গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলে বার্সেলোনার হয়ে তার গোল হলো ৬৩০টি। বাকি ৭০টি জাতীয় দলের হয়ে।

এবারও এগিয়ে থাকার আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি স্বাগতিকদের। কিছুক্ষণ আগে পেনাল্টি আদায় করে নেওয়া সেমেদো এবার নিজেদের ডি-বক্সে কারাসকোকে ফাউল করলে আবারও পেনাল্টি পায় আতলেতিকো। ৬২তম মিনিটে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার নিগেসের শট প্রায় ঠেকিয়েই ফেলেছিলেন টের স্টেগেন; তার হাতে লেগেও বল জালে জড়ায়।

চার মিনিটের ব্যবধানে ভালো দুটি সুযোগ পেয়েছিলেন ভিদাল। কিন্তু প্রথমবার লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের পর হেডও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি চিলির এই মিডফিল্ডার।

শেষ দিকেও চলতে থাকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। পুরো ৩ পয়েন্ট নিশ্চিত করতে মরিয়া ছিল দুই দলই। কিন্তু জালের দেখা পায়নি কেউই।

শেষ চার ম্যাচে এই নিয়ে তিনটি ড্র করল বার্সেলোনা। গত ১৯ জুন সেভিয়ার মাঠে করেছিল গোলশূন্য ড্র। ঘরের মাঠে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা দলটি এবারের আসরে এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচে পয়েন্ট হারাল। এর আগে ডিসেম্বরে রিয়ালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল মেসি-সুয়ারেসরা।

আর টানা চার জয়ের পর ড্র করল আতলেতিকো। ৩৩ ম্যাচে ১৫ জয় ও ১৪ ড্রয়ে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে দিয়েগো সিমেওনের দল।