পাওনা ইস্যুতে সালাউদ্দিনের দ্বারস্থ ফুটবলাররা

চলতি মৌসুমে কেবল ফেডারেশন কাপই পুরোপুরি শেষ হয়েছে। করোনাভাইরাসের ছোবলে ৬ রাউন্ডের পর স্থগিত হয়ে যাওয়া প্রিমিয়ার লিগ শেষ পর্যন্ত বাতিলই করে দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। বাতিল হয়ে যায় স্বাধীনতা কাপও। খেলা না থাকায় ক্লাবগুলোর কাছ থেকে ফুটবলারদের চুক্তি অনুযায়ী পাওনার বিষয়টিও ঝুলে আছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় একটা সমঝোতায় পৌঁছানোর আবেদন নিয়ে তাই বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের কাছে গিয়েছিলেন ফুটবলাররা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 02:41 PM
Updated : 29 June 2020, 02:58 PM

ফেডারেশনে সোমবার বিভিন্ন ক্লাবের প্রায় ২৫ জন খেলোয়াড় সালাউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে কেবল লিগ নয়, প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় বিভাগ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের খেলোয়াড়দের বর্তমান আর্থিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন রানা-মামুনুলরা।

ফুটবলারদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বসুন্ধরা কিংস, আবাহনী লিমিটেড, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, সাইফ স্পোর্টিং, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, চট্টগ্রাম আবাহনীর মতো দলগুলো চুক্তি অনুযায়ী স্থানীয় খেলোয়াড়দের ৫০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ পরিশোধ করেছে। কিছু ক্লাব দিয়েছে ‘টোকেন মানি’, কিছু ক্লাব অল্প অল্প করে পরিশোধ করার প্রক্রিয়ায় আছে।

এ মৌসুমে তৃতীয়, দ্বিতীয় ও প্রথম বিভাগ এবং চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের খেলা হয়নি। এই চার ধাপের ফুটবলাররা আছে সবচেয়ে বেশি আর্থিক কষ্টে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা জানালেন, নিচের স্তরের খেলোয়াড়দের বিষয়টিও সালাউদ্দিনকে জানিয়েছেন তারা।

“সভাপতির কাছে আমাদের কিছু বিষয় বলার ছিল। যেমন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যেন লিগটা যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা হয়। আরেকটা বিষয় ছিল, গত চার মাস লিগ বন্ধ থাকায় আমরা ফুটবলাররা পুরোপুরি বেকার। লিগ বাতিল হয়ে গেছে। তৃতীয়, দ্বিতীয়, প্রথম বিভাগও হয়নি। ফলে ফুটবলারদের আয়-রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। আমরা যারা পেশাদার খেলোয়াড়, তারা হয়ত ক্লাব থেকে কিছু টাকা পেয়েছি। কিন্তু যারা অন্য স্তরের ফুটবলার, তারা লিগ খেলতে পারেনি, টাকাও নিতে পারেনি। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।”

“আমাদের যে লিগটা বাতিল হয়ে গেছে ওটার ব্যাপারে ফেডারেশন যেন ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলে এবং আমরাও যেন একটা অঙ্কের টাকা পাই-এই বিষয়গুলো বলেছি। প্রেসিডেন্ট আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটা ভালো সিদ্ধান্তে আসবেন।”

জাতীয় দলের মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামও জানালেন একই কথা, “কেবল লিগের নয়, নিচের স্তরের টুর্নামেন্টগুলোর খেলোয়াড়রা খারাপ অবস্থায় আছে। তাদের দুরাবস্থা, চুক্তি অনুযায়ী ক্লাবগুলোর কাছে আমাদের যে পাওনা রয়েছে, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতায় আসার জন্য সভাপতিকে অনুরোধ করেছি।”

বাফুফের পাঠানো ভিডিও বার্তায় সভাপতি সালাউদ্দিন অবশ্য ফুটবলারদের বকেয়া পাওনা সংক্রান্ত বিষয়টিকে ‘সেকেন্ডারি’ বলেছেন। মূলত আগামী অক্টোবরে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানান তিনি।

“বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য ফিফা আমাদের অক্টোবরে তারিখ দিয়েছে। এটার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। ওদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করলাম। এবার সরকারের সঙ্গে আলাপ করব। সমস্যা হচ্ছে, ফিফার ম্যাচ তো খেলতে হবে, তা না হলে সাসপেন্ড করে দিবে, এটা নিয়ে একটা মাথাব্যথা আছে। আবার সরকারের থেকেও অনুমতি লাগবে। এ নিয়েই মূলত আলোচনা।”

“খেলোয়াড়দের বলেছি ফিটনেস ধরে রাখতে। আজ হোক, কাল হোক, খেলা হবে। পৃথিবী থাকলে ফুটবল হবে। ওটা সেকেন্ডারি বিষয় (আর ক্লাবগুলোর কাছে ওদের পাওয়া এবং চুক্তি নিয়ে কথা)। মূলত বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”