সেই সেল্তার মাঠে আবারও বার্সার হোঁচট

শিরোপা সম্ভাবনা জোরালো রাখতে জয়ের বিকল্প ছিল না বার্সেলোনার সামনে। লুইস সুয়ারেস দুই দফা দলকে এগিয়ে নেওয়ায় জয়ের সম্ভাবনাও জেগেছিল দারুণভাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেল্তা ভিগো ‘ভীতি’ কাটাতে পারল না কিকে সেতিয়েনের দল। ড্র করে মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারিয়ে লা লিগা শিরোপা ধরে রাখার দৌড়ে তারা পিছিয়ে পড়ল বেশ খানিকটা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2020, 04:57 PM
Updated : 28 June 2020, 11:59 AM

সেল্তার মাঠ থেকে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে ২-২ ড্র করে ফিরেছে বার্সেলোনা। সফরকারীদের গোল দুটি করেন সুয়ারেস। সেল্তার দুই গোলদাতা ফিওদোর স্মোলোভ ও ইয়াগো আসপাস।

এই ড্রয়ে অবশ্য পয়েন্ট টেবিলে আপাতত শীর্ষে উঠেছে বার্সেলোনা। ৩২ ম্যাচে ২১ জয় ও ছয় ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৬৯। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬৮। রোববার লিগ টেবিলের তলানির দল এস্পানিওলের বিপক্ষে হার এড়ালেই শীর্ষে ফিরবে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা।

নভেম্বরে লিগে প্রথম দেখায় লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিকে দলটিকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে সেল্তার মাঠে তাদের গত কয়েক মৌসুমের পারফরম্যান্স ভীষণ হতাশাজনক। লিগে এখানে গত চার সফরে তিনটিতেই হেরেছে কাতালান ক্লাবটি, অন্যটি ড্র। সবশেষ এখানে জিতেছিল ২০১৪-১৫ মৌসুমে।

দুর্ভাগ্য বাধ না সাধলে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। মেসির কর্নারে জেরার্দ পিকের হেড গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও ফেরে ক্রসবারে লেগে।

দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সময় চাপ ধরে রেখে খেলতে থাকা বার্সেলোনা এগিয়ে যায় ম্যাচের ১৯তম মিনিটে। প্রায় ২২ গজ দূরে ফ্রি-কিক পায় বার্সেলোনা। নিজের প্রিয় জায়গা পেয়েও সরাসরি শট না নিয়ে ছোট ডি-বক্সের ডান দিকে ফাঁকায় থাকা সুয়ারেসের উদ্দেশে দারুণ ক্রস বাড়ান মেসি। জায়গায় দাঁড়িয়ে যেন কোনো বাধা ছাড়াই হেডে বল জালে পাঠান উরুগুয়ের স্ট্রাইকার।

পাঁচ মিনিট পর সমতায় ফিরতে পারতো সেল্তা। তবে আসপাসের শট গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের আঙুল ছুঁয়ে পোস্টে লাগে। ফিরতি বল পেয়ে এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের দ্বিতীয় শটও ঠেকিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।

৬৯৯ গোল নিয়ে মাইলফলকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে মেসির কেটে গেছে দুটি ম্যাচ। সুযোগ এসেছিল ৪০তম মিনিটে। ডান দিক থেকে বল পায়ে একটুখানি আড়াআড়ি ছুটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ট্রেডমার্ক শটে মেসি গোল করেছেন ভুরিভুরি, এবার পারলেন না। ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে গেল বল।

দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে মাঝমাঠে ইভান রাকিতিচের ভুল পাসে বল ধরে সামনে থ্রু পাস বাড়ান আসপাস। বল ধরে ছুটে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ দিকে পাস দেন ইয়োকুসলু। তাকে ঠেকাতে একটু এগিয়ে গিয়েছিলেন টের স্টেগেন। ফাঁকায় বল পেয়ে অনায়াসে জালে ঠেলে দেন রুশ ফরোয়ার্ড স্মোলোভ। অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতির পর ‘নতুন রুপে’ লিগ শুরুর পর বার্সেলোনার জালে এটাই প্রথম গোল।

৬৭তম মিনিটে আবারও মেসি-সুয়ারেস জুটির মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে অধিনায়ক কোনোমতে আলতো করে বল বাড়ান সুয়ারেসকে। আর বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে আসরে নিজের ত্রয়োদশ গোলটি করেন তিনি।

৮০তম মিনিটে আবারও সমতায় ফিরতে পারতো সেল্তা। কিন্তু দারুণ পজিশনে বল পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি নলিতো; তার প্রচেষ্টা রুখে দেন টের স্টেগেন। আট মিনিট পর জার্মান গোলরক্ষক আর পারেননি দলকে বাঁচাতে। দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আসপাস।

পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ কয়েক সেকেন্ড আগে বার্সেলোনার ড্রয়ের স্বস্তিও কেড়ে নিতে বসেছিল সেল্তা। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড নলিতো গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে বসেন। একই সঙ্গে হার এড়ানোর স্বস্তি ও মহামূল্যবান ২ পয়েন্ট হারানোর কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসি-সুয়ারেসরা।