বিতর্কিত জয়ে বার্সাকে টপকে গেল রিয়াল

দুদিন আগে বার্সেলোনা পয়েন্ট হারানোয় রিয়াল মাদ্রিদ সুযোগ পেয়ে যায় শিরোপা লড়াইয়ের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়ার। সুযোগটি দারুণভাবে কাজে লাগালো তারা। রিয়াল সোসিয়েদাদকে হারিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2020, 09:56 PM
Updated : 22 June 2020, 11:42 AM

প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। সের্হিও রামোসের গোলে দলটি এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন করিম বেনজেমা। সোসিয়েদাদের একমাত্র গোলটি মিকেল মেরিনোর।

৩০ ম্যাচে ১৯ জয় ও আট ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৬৫। বার্সেলোনার পয়েন্টও তাই; তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে স্পেনের সফলতম ক্লাবটি।

গত মৌসুমে লিগে দুই দেখাতেই সোসিয়েদাদের বিপক্ষে হেরেছিল রিয়াল। এবার প্রথম পর্বে দলটিকে ৩-১ গোলে হারালেও ফিরতি লেগে হোঁচট খেতে বসেছিল মাদ্রিদের দলটি। শেষ পর্যন্ত তারা মূলবান ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে। তবে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত তাদের জয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

এদেন আজার ও লুকা মদ্রিচকে বেঞ্চে রেখে খেলতে নামা রিয়ালকে শুরুতে বেশ ধুঁকতে দেখা যায়। অবশ্য ‘কুলিং ব্রেক’ এর পর মাঠে ফিরেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন বেনজেমা। আরও ভালো পজিশনে থাকা সতীর্থদের পাসও দিতে পারতেন; কিন্তু নিজেই গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।

৪২তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে একজনকে কাটিয়ে বুলেট গতির শট নেন ভিনিসিউস জুনিয়র। সোজাসুটি বল পান্স করে ফেরান স্বাগতিক গোলরক্ষক আলেক্স রেমিরো।

দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে রামোসের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় রিয়াল। মার্সেলোর দারুণ পাস ধরে দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ভিনিসিউস। দুজনকে কাটিয়ে সামনে এগিয়ে শট নেওয়ার প্রচেষ্টায় থাকা এই ব্রাজিলিয়ানকে ডিফেন্ডার দিয়েগো লরেন্তে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ঠাণ্ডা মাথার নিচু শটে আসরে নিজের সপ্তম গোলটি করেন রিয়াল অধিনায়ক।

লা লিগার ইতিহাসে রামোসের এটি ৬৮তম গোল। ডিফেন্ডার হিসেবে যা সর্বোচ্চ।

খানিক পরেই বড় এক ধাক্কা খায় রিয়াল। পায়ে চোট খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছেড়ে যান রামোস। বদলি নামেন এদের মিলিতাও। এর একটু পরেই টনি ক্রুসের জোরালো শট ঠেকান রেমিরো।

৬৭তম মিনিটে দূরপাল্লার নিচু শটে জালে বল পাঠান আদনান ইয়ানুজাই। তবে মিকেল মেরিনো ছোট ডি-বক্সের কাছে অফসাইডে থাকায় গোল দেননি রেফারি, যদিও বলে তার কোনো ছোঁয়া ছিল না।

বিতর্কিত সিদ্ধান্তে গোল না পাওয়ার হতাশা না কাটতেই দ্বিতীয় গোল খেয়ে বসে সোসিয়েদাদ। ডান দিক থেকে ফেদে ভালভেরদের ক্রসে কাঁধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে নিচু আলতো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বেনজেমা।

আসরে ফরাসি ফরোয়ার্ডের এটি ১৭তম গোল।

৮৩তম মিনিটে দারুণ গোলে ব্যবধান কমান মেরিনো। ডান দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো উঁচু ক্রস ডি-বক্সে ধরে বুলেট গতির শটে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

নাটকীয় শেষের সম্ভাবনা জাগলেও বাকি সময়ে আর কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। শিরোপা ভাগ্য নিজেদের হাতে নেওয়ার আনন্দে মাঠ ছাড়ে রিয়াল।

কাঙ্ক্ষিত জয়ে দল শীর্ষে উঠলেও কোচ জিদানের দুঃশ্চিন্তা কমছে না। এইবারের বিপক্ষে প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলার পর দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল রিয়াল। ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে দুই অর্ধের পারফরম্যান্সে অতটা ফারাক না থাকলেও, বিরতির আগের খেলা তেমন ভালো ছিল না।

আর সোসিয়েদাদের বিপক্ষে শুরুতে রিয়ালের পারফরম্যান্স তাদের মানের ধারে-কাছেও ছিল না। তাই দল পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায় উঠলেও, শিরোপা ঘরে তুলতে নিশ্চিতভাবেই পারফরম্যান্সের উন্নতি নিয়ে অনেক ভাবতে হবে জিদানকে।