কাসিয়াসের স্মৃতিতে উজ্জ্বল রিয়াল-অধ্যায়

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রঙ ছড়িয়ে বর্তমানে খেলছেন এফসি পোর্তোর হয়ে। ভক্তদের সঙ্গে অনলাইনে আলাপচারিতায় ইকের কাসিয়াস মুখোমুখি হলেন রিয়ালের সেই সোনালি দিনগুলো নিয়ে ওঠা নানা প্রশ্নের। মাদ্রিদের দলটির হয়ে অভিষেকের ক্ষণ, প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়, ‘লা দেসিমা’ চক্রপূরণ থেকে শুরু করে ২০১৩-১৪ মৌসুমের ফাইনালে সের্হিও রামোস সমতাসূচক গোলটি করার পর তার কানে কানে কি বলেছিলেন, সে কৌতূহলও মেটালেন স্পেনের সফল এই গোলরক্ষক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2020, 01:39 PM
Updated : 4 June 2020, 02:19 PM

রিয়ালের হয়ে বর্ণিল ক্যারিয়ারে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, পাঁচটি লা লিগাসহ অনেক শিরোপার স্বাদ পেয়েছেন কাসিয়াস। ৩৯ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক জাতীয় দল স্পেনের হয়ে জিতেছেন ২০১০ বিশ্বকাপ, ২০০৮ ও ২০১২ সালের ইউরো।

সাফল্যমণ্ডিত রিয়াল-অধ্যায় ছাড়িয়ে নানা দিক নিয়ে কথা বললেন কাসিয়াস; স্পেন জাতীয় দলে অভিষেক, পোর্তোয় লিগ জয়, আরও কত কি।

লা দেসিমা:
আমার জন্য এটা জেতা ছিল অনেকটা নির্ভার হওয়ার মতো। সমর্থকদের জন্য আমি ‍খুব খুশি অনুভব করছিলাম। আমার মনে হয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দশম শিরোপার জন্য লম্বা সময়ের সংগ্রাম বিশেষ স্বাদ যোগ করেছিল। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় কয়েকটা কঠিন বছর কাটানো পর শেষ পর্যন্ত ওই গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম।

লিসবনের ফাইনালে রামোসকে যা বলেছিলেন: তুমিই হচ্ছো...বস এবং রিয়ালকে লা দেসিমা এনে দেওয়া খেলোয়াড় সবসময় তুমিই থাকবে!! এরপর ওকে চুমো দিয়েছিলাম।

সেরা বছর
: অনেকগুলো আছে। একটু মজার ব্যাপার হচ্ছে, অন্যতম সেরা মৌসুম ২০১৩-১৪, যেটাতে আমি খুব বেশি খেলিনি। ওই মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ভুল করা সত্ত্বেও যে ২৪টি ম্যাচ খেলেছিলাম, অনুভব করি ভালো খেলেছিলাম-যদিও যতটা খেলার কথা ছিল তার চেয়ে কম খেলেছিলাম।

মজার ঘটনা: প্রথমত, আমি যখন প্রথম খেলা শুরু করলাম, কিছুটা অস্বচ্ছন্দ্যবোধ করতাম সতীর্থদের উদ্দেশে চিৎকার করে নির্দেশনা দিতে, যেটা করা সব গোলরক্ষকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পেছন থেকে নির্দেশনা দেওয়া-এই পজিশন থেকে পুরো মাঠ দেখা যায়। কিন্তু শুরুতে এজন্য আমাকে লড়াই করতে হয়েছে (নিজের সঙ্গে)...সতীর্থরা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছিল। তারা বলেছিল তাদের উদ্দেশে চিৎকার করে নির্দেশনা দিতে এবং কার উদ্দেশে আমি চিৎকার করছি, সেটা কোনো ব্যাপার নয়।

কোচিংয়ে আসবেন?:
এই চেষ্টার একটা সম্ভাবনা আছে। যদিও কখনই নিজেকে একজন কোচ হিসেবে ভাবিনি, কিন্তু ভবিষ্যৎ বলা যায় না। এমন সতীর্থদের পেয়েছি, যারা পুরোপুরি এমন কিছুর বিপরীত মেরুতে ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাদেরকে সেটাই করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ টিভি ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করার বিষয়েও ভাবতেও পারত না, তবে এখন তারা সেটা করছে।

পোর্তোর হয়ে সেরা স্মৃতি: ২০১৭-১৮ লিগ জেতা। দুই সপ্তাহ ধরে আমরা এর উদযাপন করেছিলাম। শহর ও সমর্থক, সবাই মুহূর্তটা উপভোগ করেছিল।

আপনার প্রতি সমর্থকদের অনুভূতি: এসব নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি সবসময় অনেক মানুষের ভালোবাসা অনুভব করেছি। অতীতে যেভাবে খেলেছি, সেটা যদি কেউ সেভাবে পছন্দ না করে তাহলে আমি খুবই দুঃখিত। সবাইকে আমি খুশি করতে পারব না।

স্পেনের হয়ে অভিষেক: এ নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি আছে। মাঠে ঢোকার সময় ক্যামেরা আমাকে অনুসরণ করছিল...এটা আসলেই সুন্দর মুহূর্ত ছিল। সেটা আমার স্বপ্ন ছিল এবং পূরণ হয়েছিল। দারুণ একটা বছর কাটিয়েছিলাম এবং কামাচো আমাকে ২০০০ সালের ইউরোতে সুযোগ দিল।

স্পেনের কোন খেলোয়াড় ব্যালন ডি’অর পাওয়ার যোগ্য ছিল: রাউল গনসালেস, সের্হিও রামোস, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, চাভি....।”

রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সেরা তিন খেলোয়াড়:
তিন জনের নাম বলতে পারব না। কিন্তু তিন জনের মধ্যে দুজন হবে ডন আলফ্রেদ দি স্তেফানো ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।

ফেভারিট চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল: অবশ্যই ২০০০ সালের ফাইনাল। এটা আমার প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা (প্যারিসের ফাইনালে ভালেন্সিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ)।

ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্ত: ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর, যেদিন আমরা অভিষেক হয়েছিল। আমার কাছে, সেটাই ছিল সবকিছুর শুরু।

সুযোগ পেলে কোন গ্রুপের সঙ্গে খেলতে চাইবেন: যদি আমি পছন্দ করতে পারি, তাহলে রিয়ালের কুইন্তা দেল বুইত্রে-র গ্রুপটাকে বেছে নিব। তাদের সেই ঘুরে দাঁড়ানো এবং (৮০এর দশকে) তারা যা কিছু করেছিল, তার জন্য তাদেরকে সবাই স্মরণ করে। আমি তখন ছোট্ট একটা ছেলে ছিলাম, কিন্তু তারপরও এগুলো আমার স্মৃতিতে আছে। (এমিলিও বুত্রাগুয়েনো, সানচিস, রাফায়েল ভাসকেস, মিচেল ও মিগুয়েল পারদেসা-এই পঞ্চ পাণ্ডবে যারা দলটিকে কুইন্তা দেল বুইত্রে নামে ডাকা হয়। একসময় যেমন রিয়ালে গ্যালাক্টিকোস ছিল)

অন্য কোনো লিগে খেলার স্বপ্ন: ইংল্যান্ডে খেলতে পারলে ভালো লাগত। যদিও ২০ বছর আগে ইতালির লিগও ছিল খুব কঠিন।