ভারত নয়, জামালের সেরা কাতার ম্যাচ
ক্রীড়া প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 22 May 2020 07:27 PM BdST Updated: 22 May 2020 08:14 PM BdST
বরাবরই মিতভাষী তিনি। প্রশ্নের উত্তর যতটা না দিলেই নয়, ততটুকুই দেন। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ফেইসবুক লাইভে দেখা গেল অন্য এক জামাল ভূইয়াকে! ফুটবল, বিয়ে, পেইন্টিং, ভারত ও কাতার ম্যাচ, লা লিগায় ধারাভাষ্য দেওয়া, প্রিয় খেলোয়াড় এমন নানা বিষয় নিয়ে মন খুলে কথা বললেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্থগিত থাকা লিগ বাতিল করে দিয়েছে বাফুফে। এর আগেই ডেনমার্কে পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছিলেন জামাল। সেখান থেকে বাফুফের ফেইসবুক লাইভে এসে শুক্রবার সমর্থকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দেন এই মিডফিল্ডার।
সেরা ম্যাচের তালিকায় জামাল রেখেছেন ২০১৮ এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতা ম্যাচটাকে। ওই ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোলটি করেছিলেন তিনি। তবে কথা বেশি বললেন গত বছর কলকাতার সল্টলেকে ভারতের সঙ্গে ১-১ ড্র ম্যাচ নিয়ে।
“ভারতের বিপক্ষে জিততে পারলে এ ম্যাচটা সেরা ম্যাচ থাকত। আসলে এ ম্যাচটা নিয়ে অনেক হাইপ ছিল। প্রেস কনফারেন্সে অনেক সাংবাদিক ছিল। আমরা যখন ভারতে গেলাম, বিমানবন্দরে অনেক সাংবাদিক এসেছিল। ওরা ধরে নিয়েছিল আমরা হারব; তিন-চার গোল খাব। প্রেস কনফারেন্সেও একই কথা বলেছিল। আমি বলেছিলাম-আমি ভারতীয়দের হৃদয় ভাঙব। শুনে ওরা হেসেছিল।”
“আমরা হোটেল ম্যারিয়টে ছিলাম। ওখানকার সবাই আমাদের বলছিল টিকেট দেন, টিকেট দেন, কিন্তু আমাদের কাছে টিকেট ছিল না। গ্যালারি ভরা ছিল। ওদের চিৎকারে আমার কথা কেউ শুনতে পাচ্ছিল না। গলা বসে গিয়েছিল চিৎকার করতে করতে। আমার কর্নার থেকে সাদের (সাদউদ্দিন) গোলটা হলো; ওভাবে আমরা অনুশীলন করেছিলাম।”
“যখন অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে খেলার মিনিট আট বাকি, তখন মনে হলো এই খেলাই ধরে রাখি। কিন্তু যখন ওরা গোল দিল, আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। জীবন ভাই (নাবীব নেওয়াজ জীবন) সুযোগ পেয়েছিল। ওর একটা শট গোললাইন থেকে সেভ করে এক ডিফেন্ডার। এ ম্যাচটা জিতলে সেরা ম্যাচ হতো। ওই ড্র নিয়ে এখনও আমার রাগ হয়।”
হোটেলে বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট দেখা করতে এসেছিল বলেও জানালেন জামাল, “হোটেলের একজন আমাকে এসে বলল, তোমার সঙ্গে একজন দেখা করতে চায়। দেখলাম সুন্দর একজন মেয়ে এসেছে। আমি ভাবছিলাম এ কে? সে বলল আমি আলিয়া ভাট। পরে জানলাম সে বলিউডের নায়িকা। তার সঙ্গে একটা ছবিও তোলা হয়নি!”

“আসল রোনালদো (ব্রাজিলিয়ান) আমার ফেভারিট। ভাবতাম ওর মতো স্ট্রাইকার হব। কিন্তু বড় হয়ে মনে হয়েছে মিডফিল্ডই আমার জন্য মানানসই। এই পজিশনে আমার প্রিয় জিনেদিন জিদান। তিন জন আইডল রোনালদো-জিদান-রোনালদিনিয়ো।”
“আমাদের কলেজে ছাত্রদের মধ্যে একমাত্র আমার গায়ের রং ছিল বাদামী। একদিন কলেজে একজন গাইতে এলো। আমিও গেলাম। ওই গায়কের নাম ছিল হ্যারিস। আমার সতীর্থরা আমাকে হ্যারিস নাম দিল! এজন্য জামাল হ্যারিস ভূইয়া।”
জামাল জানালেন বিয়ের পর বদলে গেছে জীবন। ব্যাচেলর জীবনের ‘স্বার্থপরতা’ নেই; সঙ্গীর প্রয়োজনটাও এখন বুঝতে হয়। ঢাকার ট্রাফিক জ্যামকে বললেন ‘জঘন্যতম’। জানালেন, ছবি আঁকতে বসলে ‘প্রশান্তি ও নিজেকে‘ খুঁজে পাওয়ার কথা।
অখণ্ড অবসরে ফিটনেস ধরে রাখতে দুই বেলা অনুশীলন করছেন বলেও জানালেন ৩০ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। আর খাবারের রুটিন?-সকালে ফল ও মধু দিয়ে বানানো চা; দুপুরে পাস্তা, সবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ দই এবং রাতে ভাত, সবজি ও মুরগির মাংশ। বাংলাদেশি খাবারের মধ্যে প্রিয় রুই মাছ; কাঁটা কম বলে।
“সকালে জিম, রাতে রানিং করি। জানি না কবে ফুটবল মাঠে ফিরবে। কিন্তু নিজেকে সক্রিয় রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট অনুশীলন করি। কেবল ফুটবলের জন্য নয়, নিজের জন্যও অনুশীলন করি।”
একদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলবে বলে আশাবাদী জামাল। তবে চাওয়া পূরণের কঠিন পথ পাড়ি দিতে ‘অনেক কাজ’ করতে হবে বলেও মনে করেন ২০১৮ সালে অধিনায়ক হওয়া এই মিডফিল্ডার। আওড়ালেন বাংলাদেশের হয়ে ২০১৩ সালে প্রথম ম্যাচ খেলার স্মৃতিও।
“অধিনায়ক হব ভাবিনি, কিন্তু দেশের হয়ে খেলার কথা সবসময় ভেবেছি। যখন প্রথম খেললাম-আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবাসি বেজে উঠল…দলের সবাই গাইছিল..আমার রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। নিজেকে খুব সুখী এবং ভাগ্যবান অনুভব করেছিলাম।”
সর্বাধিক পঠিত
- শেবাগ ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশের সাবেকরা
- বার্সা কোচ কুমানের চাওয়া রিয়ালের জয়!
- ঘরে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ, পাশে ‘সুইসাইড নোট’
- পান্তের দিকে ‘তাকিয়ে’ গিলক্রিস্ট
- ফাইনালে বার্সার প্রতিপক্ষ বিলবাও
- ১ হাজার হবে অ্যান্ডারসনের?
- ভারতে ‘প্রেম করায়’ বাবার হাতে মেয়ের শিরশ্ছেদ
- কোর্তোয়া বনাম ওবলাক: লড়াইটা তাদেরও
- দলের ওপর চাপ কমাতে বললেন মাশরাফি
- টিভি সূচি (শনিবার, ০৬ মার্চ ২০২১)