পেশায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর চাকরিজীবী। নেশা ফুটবল খেলার। পেশা ও নেশার মধ্যের ব্যবধান অনেকটা ঘুঁচেছে গত মার্চে; শেষ হয়েছে বিমানবাহিনীর ট্রেনিং পর্ব। তাই আটঘাট বেঁধে প্রিয় ডিফেন্ডার সের্হিও রামোসের মতো হয়ে ওঠার মিশন শুরু করতে পারছেন হাফিজুরও।
বয়স ২০ বছর। উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। যশোরের হযরত ফুটবল একাডেমিতে হাতেখড়ি হওয়ার পর শামস-উল হুদা একাডেমিতে বেড়ে ওঠা এই তরুণ দিলকুশা, আবাহনী লিমিটেড ঘুরে নোঙর ফেলেছেন উত্তর বারিধারায়। প্রিমিয়ার লিগে দলটির খেলা পাঁচ ম্যাচের মধ্যে রক্ষণ সামলেছেন তিনটিতে।
থিতু হতে পারতেন ঐতিহ্যবাহী আবাহনীতে। তা হয়ে ওঠেনি চাকরির কারণে। ২০১৪ সালে এয়ারটেল রাইজিং স্টারে অংশ নেওয়ার পরের বছর অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেন আবাহনীর হয়ে। ওই বছর দিলকুশার হয়ে তৃতীয় বিভাগ ফুটবলে খেলা হাফিজ বিমানবাহিনীর ট্রেনিংয়ের বাধ্যবাদকতা থাকায় নিয়মিত হতে পারেননি ফুটবলের আঙিনায়।
দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট হাফিজের পরিশ্রমী মানসিকতায় মুগ্ধ উত্তর বারিধারা কোচ আলফাজ আহমেদ। তার মতে, চাকরি আর ফুটবলের দোটানায় তরুণ ডিফেন্ডারের ‘শিক্ষা জীবন’ থেকে হারিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি মূল্যবান বছর। পরিপূর্ণ সেন্টার-ব্যাক হতে হলে হাফিজকে ঘাম ঝরাতে হবে অনেক।
“ওর শারীরিক গঠন ভালো। পরিশ্রমও করতে পারে বেশ। আমার অধীনে প্রতিদিন পরিশ্রমও করছে। গতি আছে। ঘাটতিগুলো পুষিয়ে নিতে অনেক পরিশ্রম করতে হবে ওকে। তা না করলে অনেক সময় লেগে যাবে।”
হাফিজও বুঝছেন সময় বেশি নেই হাতে। দেশের মধ্যে প্রিয় ডিফেন্ডার তপু বর্মনের মত হতে হলে, জাতীয় দলে খেলবে ছেলে-বাবার এই স্বপ্ন পূরণ করতে নষ্ট করা যাবে না এক মিনিটও। তাই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সবাই যখন কার্যত ঘরবন্দি, তখন ফিটনেস ধরে রাখতে বিমানবাহিনীর জিমনেশিয়ামে প্রতিদিন ছুটছেন হাফিজ। ঝরাচ্ছেন ঘাম।
“বাবার স্বপ্ন আমি যেন ভালো একজন ফুটবলার হই। জাতীয় দলে খেলি। আমারও প্রচণ্ড ইচ্ছা জাতীয় দলে খেলার। গত মার্চে বিমানবাহিনীর তিন বছরের ট্রেনিং শেষ হয়েছে। তাই এখন আর ট্রেনিংয়ের ব্যস্ততা নেই। স্বপ্ন পূরণের জন্য পুরোদমে অনুশীলন করছি।”