করোনাভাইরাস: রাস্তার মানুষের পাশে গোলরক্ষক শহীদুল

চট্টগ্রামের পতেঙ্গার ব্যস্ত জীবনের চাকা পুরোপুরি থামাতে পারেনি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। কিন্তু থমকে দিয়েছে খেটে খাওয়াদের, রাস্তায় থাকা মানুষদের জীবন। এই অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2020, 11:18 AM
Updated : 31 March 2020, 11:18 AM

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ। জাতীয় দলের খেলাও স্থগিত। ছুটি পেয়ে ঢাকা ছেড়ে পতেঙ্গায় ফিরেছেন শহীদুল।  দেড় বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে খুনসুটি করে সময় কাটছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন ২৯ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক।

“পতেঙ্গায় এখনও অনেক গার্মেন্টস খোলা আছে। তাই অন্য জায়গার মতো নীরব নয় আমাদের এই এলাকা। তবে নিয়ম মেনে আমি ঘরেই থাকছি। ছেলেকে সময় দিচ্ছি। বৌ ঘরের কাজ করে আর আমি ছেলের কাজ করি…গোসল করাই, খাওয়াই, কাপড়-চোপড় পরাই..এভাবেই সময় কাটছে।”

“বাইরে গিয়ে যেহেতু অনুশীলন করার সুযোগ নেই, তাই ফিটনেস ধরে রাখার জন্য ঘরেই হালকা অনুশীলন করছি। মাঝে মধ্যে দৌড়াতে একটু বাইরে বেরুচ্ছি। অবশ্য তখনও গ্লাভস, মাস্ক পরে; যাতে কেউ বলতে না পারে নির্দেশনা মানছি না।”

স্থানীয় কিছু বড়-ছোট ভাইদের ‘এক টাকার ফান্ড’ নামে একটা সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত আছেন শহীদুল। এই সংগঠনের মাধ্যমে রাস্তায় থাকা অসহায় মানুষদের এক বেলা খাবারের সংস্থান করার কথাও পীড়াপীড়ির পর জানালেন আবাহনীর এই গোলরক্ষক!

“এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ কিন্তু রাস্তায় থাকা মানুষগুলো। অনেকে আছে দিন আনে দিন খায়…ফকির ও পাগলও আছে, যারা এ মুহূর্তে খুবই কষ্টে আছে। আমাদের মহল্লায় কিছু বড়-ছোটভাইদের একটা সংগঠন আছে ‘এক টাকার ফান্ড’ নামে। সেটার মাধ্যমে এই অসহায়দের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি আমিও।”

“এখন দোকানপাট বন্ধ। রাস্তার পাগলগুলো বা রাস্তায় ঘুমানো মানুষগুলো খাবার পাচ্ছে না। গত পাঁচ-ছয়দিন ধরে ওদেরকে আমরা একবেলা খাবার দিচ্ছি। প্রতিদিন এক-দেড়শ মানুষকে খাবার দিচ্ছি আমরা। এটা হয়তো বেশি কিছু না, কিন্তু আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছি। এগুলো আমি আসলে বলতে চাই না। এর আগে কাউকে বলিওনি। এগুলো নীরবে করতেই ভালো লাগে আমার।”