বরাবরই তিনি স্পষ্টভাষী। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে মারুফুল হকের বার্তাতেও সেটি পরিস্কার। চট্টগ্রাম আবাহনী কোচ দলের ফুটবলারদের সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আগে বাঁচো, তারপর অন্য কিছু।’ দেশের মানুষের প্রতিও তার আহবান একই, ‘নিরাপদ থাকুন, আগে বাঁচুন।’
Published : 25 Mar 2020, 02:07 PM
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশে সব ধরনের খেলা স্থগিত করা হয়েছে। অফিস, দোকানপাটও বন্ধ হতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে নানা নির্দেশনা। মাঠে খেলা না থাকায় ছুটি পেয়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলোয়াড়রাও।
এক দশকেরও বেশি সময়ের কোচিং ক্যারিয়ারে মারুফুল খুব ভালো করেই জানেন, ছুটি পেলে দেশের খেলোয়াড়রা সাধারণত ফিটনেস ধরে রাখতে সচেতন থাকেন না মোটেও। কোচদের দুর্ভাবনাও থাকে সেটি নিয়ে। তবে এবারের ছুটি তো আর সবসময়ের মতো নয়!
প্রেক্ষাপট যখন করোনাভাইরাস, ফুটবলারদের কাছে তার বার্তায়ও সেটিই পেয়েছে প্রাধান্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তেমনটাই জানালেন ৫০ বছর বয়সী এই কোচ।
“দেখুন, এখন যে পরিস্থিতি, তাতে বেঁচে থাকাই মূখ্য। বেঁচে থাকলেই কেবল আপনি অনেক কিছু করতে পারবেন। আউটডোর ট্রেনিং না থাকলে ছেলেরা ফিটনেস হারাবে। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে কিছু করার নেই। ওদেরকে এটিই বলেছি, ‘আগে বাঁচো, নিরাপদ থাকো।”
নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পর ফিটনেস নিয়ে কিছু করার সুযোগ থাকলে, করতে বলেছেন মারুফুল। তবে কোনোভাবেই নিরাপদ থাকার সঙ্গে আপোস করে নয়।
“তবে হ্যাঁ, বাড়িতে থাকলে যে একেবারেই ফিটনেস ধরে রাখা যাবে না, তা নয়। ওদের এটাও বলে দিয়েছি, ইনডোরে যতটা পারা যায়, অনুশীলন করতে, যাতে ফিটনেস ধরে রাখা যায়। কিন্তু এ মুহূর্তে আমার কাছে ছেলেদের ফিটনেস নয়; ওদের ভালো ও নিরাপদ থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ।”
ছুটি মিলেছে মারুফুলেরও। তবে শুয়ে-বসেই পুরোটা সময় কাটছে না তার। প্রতিপক্ষের বিশ্লেষণ করে অনেকটা সময় পার হচ্ছে বলেও জানালেন উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ।
চলতি লিগে মারুফুলের হাত ধরে দারুণভাবে ছুটছে চট্টগ্রাম আবাহনী। ছয় ম্যাচে চার জয় ও এক ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে আছে তারা দ্বিতীয় স্থানে। নিজেদের শেষ ম্যাচে লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসকে হতভম্ব করে দেয় তিন গোল হজমের পর চার গোল দিয়ে।
এমন দারুণ ছন্দে ছেদ টেনে দিয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। মারুফুল অবশ্য ওসব নিয়ে ভাবছেন না মোটেও। এই দুঃসময়ে ভালো থাকাই তার একমাত্র ভাবনা।