তবে অপ্রাপ্তিও নেহাত কম নয়। মাত্র ৬টি ডিসিপ্লিনে সোনার হাসি হেসেছে বাংলাদেশ। ১৯টিতে সে হাসি নেই। অনেক ঢাকঢোল বাজিয়ে ছেলেদের ফুটবলে মুকুট ফিরে পাওয়ার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ব্রোঞ্জে। শুটিং, সুইমিংয়ে গতবার জেতা সোনা হারানোর হতাশাও এবার সঙ্গী বাংলাদেশের।
সর্বোচ্চ সাফল্য আর্চারিতে
অভ্যন্তরীন ঝামেলায় ভারতের আর্চারদের আসতে না পারার সুযোগ ষোলো আনা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ। ১০ ইভেন্টের দশটিতেই বাজিমাত করেছে। আলাদাভাবে আলো ছড়িয়েছেন রোমানা সানা, সোহেল রানা ও ইতি খাতুন। এই তিন আর্চারই ব্যক্তিগত ও দলীয় মিলে ৩টি করে সোনা জিতে পূরণ করেছেন হ্যাটট্রিক।
ডিসিপ্লিন | সোনা | রুপা | ব্রোঞ্জ | মোট |
আর্চারি | ১০ | ০ | ১ | ১১ |
কারাতে | ৩ | ৩ | ১২ | ১৮ |
ভারোত্তোলন | ২ | ৬ | ৫ | ১৩ |
ক্রিকেট | ২ | ০ | ০ | ২ |
ফেন্সিং | ১ | ৩ | ৭ | ১১ |
তায়কোয়ান্দো | ১ | ০ | ১০ | ১১ |
শুটিং | ০ | ৬ | ৪ | ১০ |
গলফ | ০ | ৪ | ০ | ৪ |
উশু | ০ | ৩ | ১০ | ১৩ |
সাঁতার | ০ | ৩ | ৮ | ১১ |
কুস্তি | ০ | ২ | ৭ | ৯ |
বক্সিং | ০ | ১ | ৬ | ৭ |
অ্যাথলেটিক্স | ০ | ১ | ১ | ২ |
খো-খো | ০ | ১ | ১ | ২ |
জুডো | ০ | ০ | ১১ | ১১ |
কাবাডি | ০ | ০ | ২ | ২ |
টেবিল টেনিস | ০ | ০ | ২ | ২ |
ব্যাডমিন্টন | ০ | ০ | ১ | ১ |
ফুটবল | ০ | ০ | ১ | ১ |
হ্যান্ডবল | ০ | ০ | ১ | ১ |
স্কোয়াশ | ০ | ০ | ০ | ০ |
টেনিস | ০ | ০ | ০ | ০ |
ভলিবল | ০ | ০ | ০ | ০ |
বাস্কেটবল | ০ | ০ | ০ | ০ |
সাইক্লিং | ০ | ০ | ০ | ০ |
সর্বমোট | ১৯ | ৩৩ | ৯০ | ১৪২ |
* বিওএর তালিকা অনুযায়ী
আল আমিন ইসলাম, মারজান আক্তার প্রিয়া ও হুমায়রা আক্তার অন্তরা-এই তিন কারাতেকা হেসেছেন সোনার হাসি। দেশের বাইরের এসএ গেমসে কারাতের এটাই সর্বোচ্চ সাফল্য। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ২০১০ সালে নিজেদের মাঠের প্রতিযোগিতায় ৪টি সোনা, ১টি রুপা ও ৩টি ব্রোঞ্জ এসেছিল। গত এসএ গেমসে অবশ্য ছিল না কারাতে।
ভারোত্তোলনের দারুণ কীর্তি
এই ডিসিপ্লিনে এতদিন ২০১৬ সালে জেতা ১টি সোনা, ২টি রুপা ও ৩টি ব্রোঞ্জ ছিল এসএ গেমসে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। মাবিয়া আক্তার সীমান্ত গতবার একমাত্র সোনার পদকটি জিতেছিলেন। এবারও তিনি সাফল্য ধরে রেখেছেন। সঙ্গে যোগ হয়েছেন জিয়ারুল ইসলাম। সব মিলিয়ে ২টি সোনা, ৬টি রুপা ও ৫টি ব্রোঞ্জ নিয়ে নেপালের আসর শেষ করেছে ভারোত্তোলন।
ক্রিকেটে ২টি সোনার প্রত্যাশা পূরণ
২০১০ সালে এসএ গেমসে প্রথম ক্রিকেটের অন্তুর্ভুক্তি। সেবার অবশ্য ছিল শুধু ছেলেদের ক্রিকেট। প্রায় নয় বছর পর ক্রিকেট ফিরল দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরে। ছেলে-মেয়ে দুই বিভাগেই বাজিমাত করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
তায়কোয়ান্দো ও ফেন্সিংয়ে সাফল্য
২০১০ সালে দুটি সোনা উপহার দেওয়া তায়কোয়ান্দো গতবার ছিল ব্রোঞ্জের বলয়ে বন্দি। এবার দিপু চাকমার হাত ধরে সে বলয় থেকে বেরিয়ে এসেছে তায়কোয়ান্দো। ত্রয়োদশ আসরে দিপুই বাংলাদেশকে এনে দেন প্রথম সোনার পদক।
এবারই প্রথমবারের মতো এসএ গেমসে অন্তর্ভুক্ত হয় ফেন্সিং। ফাতেমা মুজিব এই ইভেন্ট থেকে দেশকে উপহার দিয়েছেন সোনার হাসি।
সাঁতার-শুটিংয়ে সোনা হারানোর বিষাদ
গতবার মাহফুজা খাতুন শীলা সাঁতার থেকে সর্বোচ্চ ২টি পদক এনে দিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত কারণে এবার অংশ না নেওয়া এই সাঁতারুর উত্তরসূরি জুনাইনা আহমেদ, রোমানা আক্তাররা সাতদোবাতোর সুইমিং পুলে আলো ছড়াতে পারেননি। মলিন পারফরম্যান্সে ৩টি রুপা ও ৮টি ব্রোঞ্জ নিয়ে আসর শেষ করেছেন তারা। গতবার সাতটি ব্রোঞ্জ জিতে ‘ব্রোঞ্জবয়’ খেতাব পাওয়া মাহফিজুর রহমান সাগরও ব্যর্থ হয়েছেন এবার।
শিলং-গুয়াহাটির আসরে ৫০ মিটার পিস্তলে সোনা জেতা শাকিল এবার ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্যর্থ, পেয়েছেন দলগত রুপার স্বাদ। দেশের আরেক শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকিও পারেননি চূড়ায় উঠতে।
৫টি ডিসিপ্লিনে পদকহীন বাংলাদেশ
অংশ নেওয়া ২৫টি ডিসিপ্লিনের ২০টিতে পদকের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচটি ডিসিপ্লিনে আসেনি কোনো পদক। স্কোয়াশ, টেনিস, ভলিবল, বাস্কেটবল ও সাইক্লিং পায়নি কোনো পদকের স্বাদ।