নেপালের কাঠমান্ডু-পোখারার আসরে এরই মধ্যে ১৪টি সোনা জিতে বিদেশের মাটিতে সেরা সাফল্য পাওয়ার কীর্তি গড়েছে বাংলাদেশ। আগেরটি ছিল ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজে পাওয়া ৭টি সোনা।
বাংলাদেশ এবার ছাপিয়ে গেছে নিজের দেশে ১৯৯৩ সালে পাওয়া ১১টি সোনার পদকের গল্পকেও। হাতছানি আছে ২০১০ সালে জেতা সর্বোচ্চ ১৮ সোনা জয়কে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় ওঠার।
আর্চারিতে সোনায় মোড়ানো একটি দিন পার করেছে বাংলাদেশ। রিকার্ভ পুরুষ দলগত ইভেন্টে রোমান সানা, মোহাম্মদ তামিমুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হাকিম আহমেদ রুবেলের হাত ধরে সোনা জয়ের উৎসবের শুরু।
ফাইনালে এই ত্রয়ী ৫-৩ সেট পয়েন্টে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। এরপর রিকার্ভ মহিলা দলগত ইভেন্টের ফাইনালে ইতি খাতুন, মেহনাজ আক্তার মনিরা ও বিউটি রায় ৬-০ সেট পয়েন্টে জিতে এনে দেন দ্বিতীয় সোনা। রিকার্ভ মিশ্র দলগত ইভেন্ট থেকে আসে তৃতীয় সোনা।
কম্পাউন্ড পুরুষ দলগতর ফাইনালে ভুটানকে ২২৫-২১৪ স্কোরে হারায় অসীম কুমার দাস, সোহেল রানা ও মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দল।
কম্পাউন্ড মহিলা দলগত বিভাগে শ্রীলঙ্কাকে ২২৬-২১৫ ব্যবধানে হারিয়ে সোনা জিতে নেন সুস্মিতা বণিক, শ্যামলী রায় ও সুমা বিশ্বাসকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দল।
কম্পাউন্ড মিশ্র দ্বৈতে সোহেল রানা-সুস্মিতা বণিক জুটি স্বাগতিক নেপালের জুটিকে ১৪৮-১৪০ ব্যবধানে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো সোনার হাসি এনে দেন দেশকে।
প্রথমবার অন্তর্ভুক্ত মেয়েদের ক্রিকেটে সোনার পদক জিতেছে বাংলাদেশ। আসরের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে বাংলাদেশের এই অর্জন প্রত্যাশিতই ছিল। তবে শ্রীলঙ্কার আনকোরা দলের সঙ্গেও জিততে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় দলকে। ২ রানের জয় ধরা দিয়েছে ম্যাচের শেষ বলে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৯১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা থমকে যায় ৮৯ রানে। ৪ ওভারে ৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ফাইনালের সেরা বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট বলে বিবেচিত ফুটবলে বাংলাদেশ হতাশ করেছে ভীষণভাবে। ফাইনালে উঠতে হলে হারাতে হতো নেপালকে। কিন্তু কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের কাছে বাংলাদেশ হেরে গেছে ১-০ গোলে।
প্রথমার্ধের একাদশ মিনিটে সুনিল বলের গোলে পিছিয়ে পড়া জেমি ডের দল ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ২০১০ সালের পর আর ফুটবলে সোনা জিততে না পারা বাংলাদেশ এবার এসেছিল অনেক বড় আশা নিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিরতে হচ্ছে ব্রোঞ্জ নিয়ে।
কুস্তিতে ১ রুপা ৪ ব্রোঞ্জ
প্রতিযোগিতার অষ্টম দিনে মেয়েদের কুস্তি থেকে এসেছে মোট ৫টি পদক। ৫৯ কেজিতে রুপা জিতেছেন আইরিন আক্তার নিপা। ৬২ কেজিতে শারমিন আক্তার, ৬৫ কেজিতে লাকী আক্তার, ৭২ কেজিতে রোজি আক্তার এবং ছেলেদের ৮৬ কেজিতে শরৎ চন্দ্র রায় ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন।
শুটিংয়ে ১টি রুপা
সাতদোবাতোর ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ছেলেদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের দলগত ইভেন্টে শাকিল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক ও সাব্বির আল আমিনকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দল ১৭০২ স্কোর গড়ে রুপা পেয়েছে। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের এককে বাংলাদেশের দুই প্রতিযোগী শাকিল ও রাজ্জাক যথাক্রমে সপ্তম ও অষ্টম হন।
হ্যান্ডবলে পদক পাননি ছেলেরা
পাকিস্তানকে ৩১-১৫ গোলে হারিয়ে মেয়েদের হ্যান্ডবলে ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে বাংলাদেশ। ছেলেদের হ্যান্ডবলে সেটিও জোটেনি। শ্রীলঙ্কার কাছে ২৬-২৩ গোলে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
ব্রোঞ্জ দিয়ে শেষ ভারোত্তোলন
ছেলেদের ১০৯ কেজি ওজন শ্রেণিতে আব্দুল্লাহ আল মমিন ব্রোঞ্জ পেয়েছেন। রোববার শেষ হয়েছে ভারোত্তোলন। বাংলাদেশ ২টি সোনা, ৬টি রুপা ও ৫টি ব্রোঞ্জসহ ১৩টি পদক জিতেছে এই ডিসিপ্লিন থেকে।
ফেন্সিংয়ে ২টি রুপা ও ১টি ব্রোঞ্জ
ছেলেদের দলগত সেইবার ও দলগত ইপিতে রুপা পেয়েছে বাংলাদেশ। ফয়েলে মেয়েদের দলগত ইভেন্টে প্রাপ্তি ব্রোঞ্জ।
ছেলেদের ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে ২৮ দশমিক ৮১ সেকেন্ড সময় নিয়ে রুপা জিতেছেন মোহাম্মদ নুর আলম। ছেলেদের ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে ব্রোঞ্জ পান ফয়সাল আহমেদ (৪ মিনিট ১২.২৪ সেকেন্ড)। মেয়েদের ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে হতাশ করেছেন ঘরোয়াতে অনেক রেকর্ড গড়া জুনাইনা আহমেদ। ২ মিনিট ৩৩.৭৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ পান লন্ডন প্রবাসী এই সাঁতারু।
কাবাডিতে ছেলেদের ব্রোঞ্জ
এ ইভেন্টে দুটি ব্রোঞ্জ থাকায় দ্বিতীয় দল হিসেবে ব্রোঞ্জ পেয়েছে বাংলাদেশ। ছেলেদের কাবাডিতে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৩৫-২০ পয়েন্টে হারে দল।
জুডো থেকে ২টি ব্রোঞ্জ
মেয়েদের অনূর্ধ্ব-৫২ কেজিতে তাহমিদা তাবাস্সুম ও অনূর্ধ্ব ৬৩ কেজিতে উকরয় মার্মা ব্রোঞ্জ পেয়েছেন।