কাঠমান্ডুর সাতদাবাতোর ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কমপ্লেক্সে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে মঙ্গলবার পাকিস্তানের কৌসরা সানাকে ৪-৩ পয়েন্টে হারিয়ে সোনা জিতেন প্রিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরে প্রথমবারের মতো পরেন সেরার মুকুট। বাংলাদেশকে এনে দিলেন তৃতীয় সোনা জয়ের আনন্দে ভেসে যাওয়ার উপলক্ষ্য।
ঠোটে, চোয়ালে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে প্রিয়া যখন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন, মুখে কেবলই প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস, ব্যথার ছিটেফোঁটাও নেই। জানালেন, বাংলাদেশ পুলিশে এসআই পদে চাকুরি করা বাবা কিভাবে প্রতি-ক্ষণে দেশের জন্য কিছু করার তাগাদা দিতেন মেয়েকে।
“এই অনুভূতি আসলে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আজ যতটা খুশি, এতটা খুশি আমি কখনও হইনি। এটা আমার জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, কেননা তার ইচ্ছাতেই আমি আজ এখানে।”
“পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার বাবা-মাকে, খেলোয়াড়দেরকে। আমার কাছে বাবার প্রত্যাশা ছিল, দেশের জন্য সোনা নিয়ে আসি, গতকালও ফোনে তিনি আমাকে এটা বলেছিলেন।”
“এর আগে আল আমিনের গোল্ড পাওয়া আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছিল। কেননা এটা ছিল আজকের দিনে বাংলাদেশের পাওয়া প্রথম সোনা। ওই সময় আমি অনুশীলন করছিলাম; কেননা, একটু পরেই আমার খেলা ছিল। ওই সময় সোনা জয়ের খবর শোনার চেয়ে বেশি আনন্দের কিছু আমার কাছে ছিল না। এতে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়; মনে হয় আমিও সোনা জিততে পারি। তখন শুধু আমার বাবার কথা মনে হচ্ছিল।”
মাত্র তিন বছর আগে কারাতে শুরু করেছিলেন প্রিয়া। দ্রুতই উঠে বসলেন অর্জনের চূড়ায়। ১৯ বছর বয়সী এই অ্যাথলেটের দৃষ্টি এখন দলগত ইভেন্ট নিয়ে।
“মাত্র তিন বছর আগে আমি কারাতে শুরু করি। ভারত, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়ার কিছু প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু এর কোনোটাই এসএ গেমসের মতো বড় মঞ্চ ছিল না। হঠাৎই কারাতেতে এসেছিলাম। গত জাতীয় মিটে রুপা পেয়েছিলাম। এসএ গেমসে প্রথম সোনা জিতলাম। কাল আমাদের দলগত ইভেন্ট আছে।”
মঙ্গলবার কারাতে কুমিতের পুরুষ একক অনূর্ধ্ব-৬০ কেজি ওজন শ্রেণিতে পাকিস্তানের জাফরকে ৭-৩ হারিয়ে সেরা হন আল আমিন। বাংলাদেশ পায় দ্বিতীয় সোনার পদক।
এর আগে সোমবার তায়কোয়ান্দোয় ছেলেদের ২৯ (প্লাস) বয়সীদের ইভেন্ট পুমসে বাংলাদেশকে প্রথম সোনার পদক এনে দেন দিপু চাকমা।