শেষের রোমাঞ্চে রিয়ালকে জয়বঞ্চিত করল পিএসজি

গোলপোস্টের নিচে দুর্ভেদ্য দেয়াল হয়ে ওঠা কেইলর নাভাসের বাধা ভেঙে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে তাদের এক ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো পিএসজি দুই মিনিট পর আদায় করে নিল আরেক গোল। শেষের নাটকীয়তায় মূল্যবান একটি পয়েন্ট নিশ্চিত করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো প্যারিসের দলটি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2019, 10:01 PM
Updated : 26 Nov 2019, 11:33 PM

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘এ’ গ্রুপের হাইভোল্টোজ ম্যাচটি ২-২ ড্র হয়েছে। করিম বেনজেমার জোড়া গোলের পর ব্যবধান কমান কিলিয়ান এমবাপে। খানিক পরই সমতা টানেন পাবলো সারাবিয়া।

সেপ্টেম্বরে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের মাঠে ৩-০ গোলে হেরে ইউরোপ সেরার লড়াই শুরু করেছিল রিয়াল। ফিরতি লড়াইয়ে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে আধিপত্য করলেও জয়ের দেখা পেল না তারা। তবে নকআউট পর্বের টিকেট নিশ্চিত হয়ে গেছে রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের।

কয়েক সপ্তাহ জুড়ে দাপুটে ফুটবল উপহার দেওয়া রিয়ালকে এদিন শুরুতে ঠিক ছন্দে দেখা যায়নি। তবে সপ্তদশ মিনিটে প্রথম গোছালো আক্রমণেই গোল আদায় করে নেয় প্রতিযোগিতার সফলতম দলটি।

গোলটির উৎস এ মৌসুমেই দলে আসা এদেন আজার। নিজেদের সীমানায় দুজনের মধ্যে দারুণভাবে ড্রিবল করে এগিয়ে গিয়ে ডান দিকে বল বাড়ান বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। দুই সতীর্থের পা ঘুরে ডি-বক্সে বল পেয়ে ইসকোর সাইড ফুট শট লাগে পোস্টে। আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান বেনজেমা।

এগিয়ে গিয়ে যেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে রিয়াল। খেলতে থাকে চাপ ধরে রেখে। ছয় মিনিটের ব্যবধানে দুবার দূরপাল্লার শটে ভীতি ছড়ান টনি ক্রুস, ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। মাঝে একবার কিলিয়ান এমবাপের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।

বিরতির আগে মাউরো ইকার্দিকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন কোর্তোয়া। ফাউলটি ডি-বক্সের মধ্যে কি না, দেখার জন্য রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিলে ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়। আক্রমণে শুরুতে মাঝমাঠে মার্সেলোকে অহেতুক ধাক্কা মেরেছিলেন ইদ্রিসা গেয়ি, উল্টো ফ্রি-কিক পায় রিয়াল।

আক্রমণের ধার বাড়াতে বিরতির পরপরই মিডফিল্ডার গেয়িকে বসিয়ে নেইমারকে নামায় পিএসজি।

দ্বিতীয়ার্ধের ২৫ সেকেন্ডের মধ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো; তবে বেনজেমার আরেকটি শট রুখে দেন নাভাস। ১২ মিনিট পর আবারও নাভাস-নৈপুণ্যে স্কোরলাইন অপরিবর্তিত থাকে। এবার ইসকোর প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন তিনি।

৬৪তম মিনিটে তমা মুনিয়ের ট্যাকলে পায়ে ব্যথা পান আজার। মাঠে কিছুক্ষণ প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দুই ফিজিওর কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। বদলি নামেন গ্যারেথ বেল।

৭৯তম মিনিটে আরেকটি দারুণ আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল। বাঁ দিক থেকে মার্সেলোর দুর্দান্ত ক্রসে লাফিয়ে নেওয়া হেডে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন বেনজেমা। মৌসুমে ফরাসি এই স্ট্রাইকারের মোট গোল হলো ১৪টি।

দুই মিনিট পর রাফায়েল ভারানের ভুলে লড়াইয়ে ফেরে পিএসজি। সারাবিয়ার ক্রসে আপাত কোনো হুমকি ছিল না। তা ঠেকাতে ঝাঁপিয়ে ছিলেন কোর্তোয়া, কিন্তু আগমুহূর্তে বলে পা লাগিয়ে বসেন ডিফেন্ডার ভারানে। গোলরক্ষকের গায়ে লেগে ছুটে যাওয়া আলগা বল জালে ঠেলে দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড এমবাপে।

সে ভুলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে রিয়াল। ৮৩তম মিনিটে হুয়ান বের্নাতের ক্রস একজনের পায়ে লাগার পর আলগা বল পেয়ে নিচু হাফ-ভলিতে ঠিকানা খুঁজে নেন সারাবিয়া।

বাকিটা সময় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে আরও জমে ওঠে লড়াই। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয় রিয়াল। বেলের দারুণ এক ফ্রি-কিক পোস্টে লাগলে দারুণ খেলেও পয়েন্ট হারানোর হতাশায় মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।

পাঁচ ম্যাচে চার জয় ও এক ড্রয়ে পিএসজির পয়েন্ট ১৩। দুটি করে জয় ও ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ রিয়াল।


গ্রুপের অন্য ম্যাচে গালাতাসারাইয়ের মাঠে ১-১ ড্র করায় ক্লাব ব্রুজের পরের রাউন্ডে ওঠার আশা শেষ হয়ে গেছে, ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে তারা। গালাতাসারাইয়ের পয়েন্ট ২।