শুটিংয়ে আশার নাম বাকি-শাকিল

দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের গত ১২ আসরে বাংলাদেশের সোনার পদক প্রাপ্তি মোট ৬৭টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২টি এসেছে শুটিং থেকে। গতবারের চারটির মধ্যে একটি এসেছিল শাকিল আহমেদের হাত ধরে। এবারও প্রত্যাশা আছে এই শুটারকে ঘিরে। পাশাপাশি প্রতিযোগিতাটিতে সর্বোচ্চ সাফল্যের খরা ঘোচাতে উন্মুখ হয়ে থাকা আব্দুল্লাহ হেল বাকির আছে হিসেব মেলানোর ব্যাপার।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2019, 01:43 PM
Updated : 24 Nov 2019, 01:48 PM

আগামী ১ ডিসেম্বর নেপালের কাঠমাণ্ডু ও পোখারায় শুরু হবে এসএ গেমসের ত্রয়োদশ আসর। ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিবে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের এসএ গেমসে জেতা ৭০টি পদকের মধ্যে শুটিং থেকে একটি সোনা, তিনটি করে রুপা ও ব্রোঞ্জ পেয়েছিল বাংলাদেশ।

দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শুটিংয়ে বাংলাদেশ সেরা সাফল্য পেয়েছিল ১৯৯৩ সালের প্রতিযোগিতায়। ঢাকায় সেবার শুটাররা জিতেছিলেন ৭টি সোনা, ৬টি রুপা ও চারটি ব্রোঞ্জসহ ১৭টি পদক।

এবার ১৩ জন ছেলে ও ৮ জন মেয়ে শুটার যাচ্ছেন নেপালে। গত আসরে ৫০ মিটার পিস্তলে বাজিমাত করা শাকিল এবার লড়বেন ১০ মিটার পিস্তলে। প্রস্তুতি ভালো হওয়ায় গত গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে রুপা জেতা এই শুটার দিলেন সেরা হওয়ার প্রতিশ্রুতি।

“এসএ গেমসে এবার ৫০ মিটার নেই। ১০ ও ২৫ মিটার আছে। আমি এ দুটোতে অংশ নিব। ভালো স্কোর আছে অনুশীলনে। আশা করি ভালো কিছুই উপহার দেব দেশকে। চাপ থাকলে হবে না। যারা নতুন তাদেরকেও তো উৎসাহ দিতে হবে।”

“১০ মিটার আসলে খুবই জনপ্রিয় খেলা। আমার যে স্কোর আছে, কাতারে ৫৭০ এবং আমাদের সিলেকশনে ৫৭৮ ও ৫৭২ স্কোর করেছি। এরকম স্কোর করতে পারলেই ফাইনালে উঠতে পারব। এরপর আসলে বলা যায় না। আশা করি, গোল্ডের জন্য ফাইট দিব এবং হয়ে যাবে।”

আব্দুল্লাহ হেল বাকি। ফাইল ছবি

বাকির হিসেবটা যেন নিজের সঙ্গে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় ৩০ বছর বয়সী এই শুটার নিজেকেই বললেন ‘লুজার’! বলার কারণও আছে যথেষ্ট। ২০১০ সালে দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে পেয়েছিলেন ব্রোঞ্জ। প্রতিযোগিতাটির ২০১৪ আসরে গ্লাসগোতে জিতেন রুপা। চার বছর পর গোল্ডকোস্টে মাত্র ০ দশমিক ৩ পয়েন্টের ব্যবধানে হারান সোনার পদক!

কিন্তু এসএ গেমসে বাকি পাননি কাঙিক্ষত সাফল্য। ২০১০ সালে প্রথম খেলতে নেমে এককে কোনো পদক জিততে পারেননি। তবে দলগত বিভাগে সোনা জিতেছিলেন। ২০১৬ সালে দলগততে রুপা জিতলেও একক থেকে ছিটকে পড়েন পঞ্চম হয়ে। গোল্ডকোস্টে দেশের পতাকা বয়ে নেওয়া এই শুটার তাই সেরা হওয়ার প্রশ্নে দ্বিধায় থাকেন কিছুটা।

“২০১০ সালে পারিনি। ২০১৬তেও পারিনি। এবারও ফাইনালে ওঠা প্রথম লক্ষ্য। তারপর দেখা যাবে। ২৪.৬ বা ২৪/২৫ মারতে পারলে এশিয়ান লেভেলে ভালো কিছু পাওয়া যায়।”

“ফাইনাল খেলতে পারি, এই কথা দিতে পারি কিন্তু সোনার পদক দিতে পারব, সে কথা দিতে পারব না। শুটার হিসেবে আমি লুজার-কপাল পোড়া বলতে পারেন। এটা আত্মবিশ্বাসের কমতির কারণে বলছি, তা নয়। আসলে ফাইনালে কোনো এক কারণে নিজের সেরাটা দিতে পারি না। সেরাটা দিতে পারলে তো ভাগ্যের দরকার নেই।”

“চাপ তো থাকেই। সব খেলাতেই থাকে। কিন্তু চাপের কারণে খেলা খারাপ হয়ে যায়, বিষয়টা আমার মনে হয় সেরকম নয়।”

সতীর্থদের নিয়ে আশাবাদী বাকি, “সত্যি করে বলি, প্রতিটা ইভেন্টেই আমাদের ফাইনালে ওঠার টার্গেট। ফাইনালে ওঠার পর তো দেখছেন কত কিছু হয়ে যায়। এখানে যে সিলেকশন হয়েছে আমাদের, প্রতিটি খেলোয়াড় যে পারফরম্যান্স করেছে, তাতে সবারই নেপালে ফাইনালে খেলার সুযোগ আছে।”

কে কতটা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।