সোনার পদকের প্রশ্নে মুখে ছিপি বিওএর!

বাজেট ৩০ কোটি টাকা। সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ট্রেনিংয়ের জন্য। বাকিটা দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে অংশ নেওয়া বাবদ। বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা প্রাপ্তির একটা হিসাব থাকে। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনেরও (বিওএ) তেমনি আছে পদক পাওয়ার আশা। কিন্তু এসএ গেমস কয়টি সোনার পদকের প্রত্যাশা বা কতটি পেলে খুশি, এসব প্রশ্নে বিওএ কর্মকর্তাদের মুখে ছিপি! গতবারের সাফল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার কথাটুকুই বলতে পারলেন সংস্থাটির মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2019, 04:30 PM
Updated : 23 Nov 2019, 04:30 PM

নেপালের কাঠমাণ্ডু-পোখারায় আগামী ১ ডিসেম্বর শুরু হবে এসএ গেমসের ত্রয়োদশ আসর। ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার খেলাধূলার সর্বোচ্চ এই প্রতিযোগিতায় গতবার ৪টি সোনা, ১৫টি রুপা ও ৫৬টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ৭৫ পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। পদক তালিকায় আট দলের মধ্যে ছিল পঞ্চম স্থানে।

এসএ গেমসের গত ১২ আসরে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল আসর ২০১০। নিজেদের মাঠে সেবার ১৮টি সোনা, ২৩টি রুপা ও ৫৬টি ব্রোঞ্জসহ ৯৭টি পদক জিতেছিল বাংলাদেশ। দেশের বাইরে হওয়া আসরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাফল্য আসে ১৯৯৫ সালে, মাদ্রাজে। সেবার ৭টি সোনা, ১৭টি রুপা ও ৩৪টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ৫৮টি পদক এসেছিল।

সময়ের পথচলায় অনেক কিছু বদলেছে। উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না পারলেও এগিয়েছে এদেশের খেলাধূলা। তাই সেরা সাফল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাসটুকু দেখতে না পাওয়াটা হতাশার। বিওএ সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন যেমন জানালেন, ফেডারেশনগুলোর কাছ থেকে ভালো কিছুর প্রতিশ্রুতি পাওয়ার কথা।

“আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সব রকমের সহযোগিতা ফেডারেশনগুলোকে দিয়েছি। যে বাজেট করেছিলাম, তার পুরো টাকা এখনও আমরা পাইনি। নিজেদের ফাণ্ড থেকে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। আশা করি, ভালো ফল আসবে এবার।”

“ফেডারেশনগুলোকে হয়তো সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারিনি,  কিন্তু যতটুকু সম্ভব দিয়েছি। কোচ এনে দিয়েছি, কেউ কেউ বিদেশি ট্রেনিংয়ে যেতে চেয়েছে…আমরা যতটুকু পেরেছি, করেছি। ফেডারেশনগুলোকে জিজ্ঞেস করেছি, তারাও বলেছে এবার তাদের ভালো প্রত্যাশা আছে।”

“কয়টা সোনার পদক জিতব, কোন ইভেন্ট থেকে জিতব সেটা বলতে পারব না। আমি মনে করি, অনেকগুলো ইভেন্টে ভালো করবে। দেখা গেল, এক ইভেন্টে সোনা পাব বললাম, সেটায় পেল না। অন্যটায় পেল।”

নির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রশ্নে বিওএ মহাসচিব শাহেদ রেজার মুখেও ছিপি। গতবারের সাফল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা জানালেন ঘুরেফিরে।

টার্গেটটা ওভাবে বলতে পারব না। আমি শুধু এতটুকু বলব, ইনশাল্লাহ এবার আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। গতবার যেটা পেয়েছি, এবার তার চেয়ে বেশি পাব। অনেক ভালো করব। সেই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা যাব। এগুলো নিয়ে আমরা ফেডারেশনের সঙ্গে একাধিকবার বসেছি। কোন কোন ইভেন্টে গোল্ড পাব, সেটা বলতে পারব না। এতটুকু বলতে পারি, গতবারের চেয়ে এবার অনেক ভালো করব। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সে আত্মবিশ্বাস আছে।”

“এটা আমাদের আঞ্চলিক অলিম্পিক। এই ফেডারেশন ভালো করবে, এই ফেডারেশন করবে না-আমি এটা বলে তাদের মনোবল ভেঙে দিতে চাই না। আমি বিশ্বাস করি তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করবে। আমি মনে করি, সব ফেডারেশই ভালো করবে।”

“আমরা ইনডিভিজুয়াল গেমসগুলোর ওপর জোর দিয়েছি। দলীয় খেলার মধ্যে ফুটবল আছে, ফাইট দেওয়ার মতো টিম তাদের আছে। শুটিংয়ে সবসময় সুযোগ ছিল, এবারও আছে। আর্চারিতেও ভালো সুযোগ আছে; অলিম্পিকে তারা খেলার সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া উশু, তায়কোয়ান্দো, সুইমিং যার কথাই বলুন না কেন, সবগুলোতে আমাদের সুযোগ আছে।”

“আমরা ট্রেনিংয়ে কোনো ছাড় দেইনি। সকাল থেকে সবকিছু মনিটর করেছি। ডেঙ্গুতে যখন একটা দুযোগের মুহূর্ত গেছে, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আমরা হাসপাতালে তাদের পাশেই ছিলাম। এরপর তাদেরকে সুস্থ্য করে ক্যাম্পে এনেছি।”

“এটাও মনে রাখতে হবে, আমরা যেমন ছয় মাসের ট্রেনিং নিয়ে গিয়েছি, অন্যরা কিন্তু লম্বা সময়ের ট্রেনিং নিয়ে যাবে। তাদেরও প্রত্যাশা থাকবে। কতটা মেডেল পাবে তা বলতে পারব না। ভারত খেলবে কিনা তা জেনে আমরা অনুশীলন শুরু করিনি। প্রতিপক্ষ যেই হোক, তাদের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে-এই মানসিকতা নিয়ে অনুশীলন করেছি। আগে আমরা ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে অলিম্পিক খেলতাম; এখন কিন্তু আমরা সরাসরি খেলি। যার অর্থ হচ্ছে আমাদের খেলাধূলা এগিয়েছে।”